অগ্নিগর্ভ এনআরএস, মধ্যরাতে মূল ফটক আটকে খণ্ডযুদ্ধ হাসপাতালে
জুনিয়র ডাক্তারদে র লক্ষ করে ইট ছোঁড়ে মৃতের পরিবারের লোকজনরা। ঘটনায় এক জুনিয়র ডাক্তারে মাথা ফেটে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে নিইরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সোমবার মধ্যরাতে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এনআরএস হাসপাতাল। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রোগীর পরিবারের হাতাহাতিতে রণক্ষেত্রে পরিনত হয় এনআরএস। জানা গিয়েছে রবিবার রাতে ট্যাঙরার বিবি বাগানের বাসিন্দা মহম্মদ সাহিদকে (৬৫) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এদিন বিকেলের পর থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, চিকিৎসকদের ডাকাডাকি করলেও তারা কেউ সময় মতো আসেননি। পরিবারের কথায়, চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়মহম্মদ সাহিদের।
আরও পড়ুন: মন্ত্রীদের অভিযোগ! পুলিসের একাংশের কাজে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, ডিজিকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মমতার
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় দুই পক্ষের হাতাহাতি। রোগীর পরিবারের লোকজনকে ফেলে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এরপর দলে দলে লাঠি ইট নিয়ে হাজির হয় দুই পক্ষই। গেট আটকে বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তারদের লক্ষ করে ইট ছোঁড়ে মৃতের পরিবারের লোকজনরা। ঘটনায় এক জুনিয়র ডাক্তারে মাথা ফেটে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে আক্রান্ত মিডিয়াও। হবু চিকিৎসকদের অভিযোগ রোগীর পরিবার তাঁদের মারধর করেছে। ঘটনায় কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের পরিষেবা। বাইরে থেকে আসা কোনও রোগীকেই হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না, এমনকী আটকে রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্সও সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হলে ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিসবাহিনী। বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের মূল ফটক। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চার্জ করে পুলিস। খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছান ডেপুটি কমিশনার-সহ সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় ও প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখার্জি। প্রাণভয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে পালিয়ে যান অন্যান্য রোগীর পরিবাররাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মৌলালির মোড়ে Raf মোতায়েন করা হয়েছে। যারা ভর্তি আছেন সেই রোগীর আত্মীয় ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবরে, মৃতের দেহ এখনও হাসপাতালেই রয়েছে। রণংদেহী হবু চিকিৎসকরা কার্যত ধর্নায় বসেছেন হাসপাতালের গেটেই, তাঁদের দাবি রোগীর পরিবারকে ক্ষমা চাইতে হবে অবিলম্বে, পাশাপাশি শাস্তি দিতে হবে দোষীদের। তাঁরা আরও অভিযোগ জানিয়েছেন এর আগেও একাধিকবার রোগীর পরিবারের হাতে মার খেতে হয়েছে তাঁদের। কাজেই নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে ধর্না চলবে বলেই জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। অন্যদিকে ডাক্তারদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রোগীর পরিবার। সব মিলিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা হাসপাতাল চত্বরে।