Raiganj: বালি মাফিয়াদের দৌরাত্মে সিঁটিয়ে কয়েক শো পরিবার, নদীর স্রোত ধাক্কা দিলেই ভিটেমাটি সব শেষ

নাগর নদীর ওপারে রায়গঞ্জ থানা এলাকার জমিতে বসতি প্রায় নেই বললেই চলে। বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়ে শুধু ধু ধু বালির চর। আবার বর্ষায় সেই নাগরই দুকুল ছাপিয়ে প্লাবিত করে

Updated By: Nov 29, 2021, 01:42 PM IST
Raiganj: বালি মাফিয়াদের দৌরাত্মে সিঁটিয়ে কয়েক শো পরিবার, নদীর স্রোত ধাক্কা দিলেই ভিটেমাটি সব শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদন:  এ যেন এক অন্য দেশ। এখানে যেন প্রশাসনের আসতে মানা। মাটি ও বালি মাফিয়াদের চোখের ইশারায় এখানে সুর্য ডোবে, চাঁদ ওঠে ৷  দিনে দুপুরে চলছে মাফিয়াদের মাটি ও বালি পাচারের কাজ। ভোর ৫ টা থেকে রাত ১১টা ডাম্পারের পর ডাম্পার লোড করে নাগর নদী লাগোয়া সরকারি জমির মাটি ও বালি পাচার করছে মাফিয়ারা। তাতে নদীর গতিপথ বদলে গেলে কার কি আসে যায়? নদীর গতিপথ বদলে গ্রামের পর গ্রাম নদীর কবলে চলে গেলে তার ভর্তুকি দেবে সরকার।

এটা উত্তর দিনাজপুরের সদর থানা, রায়গঞ্জ থানা এলাকার খাড়ি জগদীশপুর ও খাড়ি গোপালপুর এলাকা। এখানেই দিনে দুপুরে নাগর নদীর পাড় থেকে চলছে বালি চুরি। নদীর গতিপথ পরিবর্তনে বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর বুকে চলে যেতে পারে গোটা গ্রাম। বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্ক গ্রামে। প্রশাসনের বিভিন্ন দরজায় কড়া নেড়েও সুরাহা মেলেনি। ক্ষুব্ধ নাগর পাড়ের বাসিন্দারা। যদিও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন  স্থানীয় হেমতাবাদ বিধানসভার বিধায়ক সত্যজিৎ বর্মন। 

হেমতাবাদ বিধানসভার, রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাড়ি জগদীশপুর ও ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েতের খাড়ি গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দাদের কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে। নাগর নদীর ধার ঘেঁসে বালি তোলার কাজ চলছে জোর কদমে। হাইড্রোলিক পে লোডার, হাইড্রোলিক ক্যাটার পিলার দিয়ে ডাম্পারের পর ডাম্পারে চাপিয়ে চালান হচ্ছে নদীর পাড় লাগোয়ার মাটি ও বালি। প্রতিদিনই প্রায় ১৬-১৮ ঘন্টা চলছে এই কারবার। শ'য়ে শ'য়ে ডাম্পারে করে পাচার হচ্ছে নদীর বালি।
 
এভাবে নদীপাড় থেকে বালি তুলে নেওয়ায় নদী নতুন গতিপথ গেলে ভেসে যাবে গ্রামের বিস্তীর্ণ বসত এলাকা। ভিটেমাটি হারা হবেন কয়েক'শ পরিবার। এমনই আশঙ্কায় প্রতিবাদ জানাতে গেলে বালি মাফিয়াদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাদের একাংশের দাবি, ভিটে মাটি বাঁচাতে তারা স্থানীয় ব্লক মহকুমা ভুমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিস ও প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েও আখেরে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা এখনো দেখা যায়নি। পুলিসে ফোন করলেও আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি, আসলে প্রশাসন এ ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপহীন বলেই দাবি নাগর পাড়ের বাসিন্দাদের।

আরও পড়ুন-Omicron: ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি কোভিড সংক্রমিতদের, সতর্ক করল WHO

নাগর নদীর ওপারে রায়গঞ্জ থানা এলাকার জমিতে বসতি প্রায় নেই বললেই চলে। বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়ে শুধু ধু ধু বালির চর। আবার বর্ষায় সেই নাগরই দুকুল ছাপিয়ে প্লাবিত করে। কিন্তু নদীর বাঁক থেকে বালি তুলে নিলে নদী তার পরিবর্তন করতে পারে, নদীর স্রোত এপাড়ে ধাক্কা দিলে খাড়ি জগদীশপুর ও খাড়ি গোপালপুর দুইগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা চলে যাবে নাগরের বুকে। এমনই আশঙ্কা করছেন এই।দুইগ্রামের বাসিন্দারা। আবার বালি মাফিয়ারা এতটাই প্রভাবশালী যে সেখানে প্রবেশেও প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন বাসিন্দারাই। 

কিন্তু কেন? যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং প্রশাসনকে নদীর মাটি বা বালি চুরি রুখতে নজরদারীর নির্দেশ দিয়েছেন! সেখানে গ্রামবাসীরা বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? নদী গতিপথ পরিবর্তন করলে বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। এতে যে জনজীবনে বড় প্রভাব পড়বে তা পরিষ্কার মাফিয়াদের কাছে।  যদিও রায়গঞ্জ ব্লকের, হেমতাবাদ বিধানসভার অধীন এই এলাকার বিধায়ক অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার।

Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.