শিবপুর শ্যুটআউট, সবজি বিক্রেতা সেজে বিহারের নাবাদা থেকে মূল অভিযুক্তকে ধরল পুলিস
১৬ নভেম্বর বাইকে চেপে যাবার সময় সাদ্দাম ও তার চারজন সঙ্গী রামকৃষ্ণ লেনের তালতলা মোড়ে আবদুল্লাকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আবদুল্লার
নিজস্ব প্রতিবেদন: গত ১৬ নভেম্বর সন্ধেয় শিবপুরের রামকৃষ্ণ লেনে রীতিমত ফিল্মি কায়দায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল মহম্মদ আবদুল্লা নামে এক যুবককে। একেবারে সিনেমার মতই বিহারের নাবাদা থেকে শ্যুটারের ডেরার সামনে সবজি বিক্রেতা হিসেবে বসে থেকে তাকে ধরল শিবপুর থানার পুলিস।
আরও পড়ুন-হাইটেনশন তার থেকেই বিপত্তি, জল খেতে এসে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু
শিবপুরের ওই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ অধিকারিরা। জোর কদমে তল্লাশি শুরু করে শিবপুর থানার পুলিস ও সিটি পুলিসের গোয়েন্দারা। ধৃতদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়ে শেল্টার নেয় বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এক পরিচিতের কাছে। সেখান থেকে পরের দিন আসে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে অভিযুক্ত তৌসিফ আলমের হাতে আঘাত থাকায় চিকিৎসা করান হয়। এরপর তারা চলে যায় বর্ধমান। সেখানে স্টেশনে রাত কাটিয়ে ২০ নভেম্বর চলে যায় বিহারে নবাদায় এক আত্মীয়ের বাড়ি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্তরা মোবাইল ব্যবহার করছিল না। ফলে তাদের সন্ধান পাওয়া খুব সমস্যা হচ্ছিল। বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সোর্স মারফত পুলিশ জানতে পারে বিহারে লুকিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত তিনজন। এরপর সেই এলাকায় অভিযুক্তের বাড়ির সামনে সব্জি বিক্রেতা সেজে শিবপুর থানার পুলিস সবজি বিক্রি করতে থাকে দুদিন ধরে। অভিযুক্তের এক দাদাকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখে পুলিস নিশ্চিত হয় এখানেই রয়েছে অভিযুক্তরা। এরপর বিহার পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালায় পুলিস।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীদের পর এবার করোনা নিয়ে সংসদের সব বিরোধী দলের মুখোমুখি মোদী, শুক্রবার বৈঠক
গত পরশু ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয় আবদুল্লা খুনে মূল অভিযুক্ত মহ সাদ্দাম, তৌসিফ আলম ও মহ আজাদকে। আবদুল্লা ছিল সমাজবিরোধী।সাদ্দাম ও আবদুল্লা দুই দলের মধ্যে লড়াই চলছিল এলাকা দখল নিয়ে। তাছাড়া সাদ্দামের দলের জিজুয়া নামে এক দুষ্কৃতীকে খুন করে আব্দুল্লা। এর বদলা নিতে এবং এলাকা দখলে রাখতে আব্দুল্লাকে খুনের ছক কসেছিল সাদ্দাম ও তার দলবল।
গত ১৬ নভেম্বর বাইকে চেপে যাবার সময় সাদ্দাম ও তার চারজন সঙ্গী রামকৃষ্ণ লেনের তালতলা মোড়ে আব্দুল্লাকে গুলি করে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় আব্দুল্লার। জখম হয় তার সঙ্গী শেখ জাহির। এরপর বন্দুক উঁচিয়ে পালিয়ে যায় তারা।সিসিটিভি তে ধরা পড়ে চাঞ্চল্যকর সেই ছবি।জাহির জবানবন্দিতে জানায় দুষ্কৃতীদের নাম। আরো জানায় গেম সাকসেস করতে দুটি নাইন এম এম ও দুটি ওয়ান শটার বন্দুক ব্যবহার করেছিল সাদ্দাম ও তার সঙ্গীরা। ধৃতদের আজ হাওড়া আদালতে পেশ করলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারবে বলে অনুমান।