কাঁটাতারের বেড়াবন্দি জিরো পয়েন্টের হিরোইন তানজিম! উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতিত্বের নজির

বেরুবাড়ী গোমীড়াপাড়া হাইস্কুলের পোশাকে তানজিমকে নিয়ে সসস্ত্র বিএসএফ জওয়ানদের সামনে দিয়েই নিয়ে যেতেন তানজিমের বাবা দিলওয়ার হোসেন। চোখাচোখি হতেই মিলত স্কুলে যাবার অনুমতি।

Updated By: Jun 12, 2022, 09:29 PM IST
কাঁটাতারের বেড়াবন্দি জিরো পয়েন্টের হিরোইন তানজিম! উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতিত্বের নজির

প্রদ্যুৎ দাস

জলপাইগুড়ি জেলার নগর বেরুবাড়ী পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে থাকা ছ'টি গ্রামের একটি সিপাইপাড়া। 

ওপারে বাংলাদেশ, জিরো পয়েন্টের সামনে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তাদের সামনে দিয়েই স্কুলে যাতায়াত। বেরুবাড়ী গোমীড়াপাড়া হাইস্কুলের পোশাকে তানজিমকে নিয়ে সসস্ত্র বিএসএফ জওয়ানদের সামনে দিয়েই নিয়ে যেতেন তানজিমের বাবা দিলওয়ার হোসেন। চোখাচোখি হতেই মিলত স্কুলে যাবার অনুমতি, কখনও আবার মেয়েকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হত জওয়ানদের অনুমতির জন্য।

যারাই কিছু সৃষ্টি করেন ভৌগোলিক অবস্থান কখনোই তাঁদের শীর্ষে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কাঁটা তারের বেড়ার দিয়েও তেমন আটকানো যায়নি তানজিমাকে। আর্থিক এবং ভৌগোলিক দুটি বাধাকেই টপকে তানজিমা এগিয়ে চলেছে। গ্রামের মেয়ের এই উদ্যোমী মনোভাবকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন প্রতিবেশী নূর ইসলাম থেকে অনেকেই। নূর ইসলাম জানান, তানজিমার এই সাফল্যের জন্য গ্রামবাসীরা গর্বিত, তাই ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যতটুক পারি আমরা ওর পাশে থেকে সাহায্যে করে যাব।

বেরুবাড়ী গোমীড়াপাড়া হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ৪৭৭ নম্বর পেলেও তেমন খোঁজ পড়েনি তানজিমার। কারণ হয়তো দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান, কাঁটাতারের বেড়া, জিরো পয়েন্ট, বিএসএফ-এর অনুষঙ্গ। তবে তানজিমার এই যুদ্ধজয়ের খবর পেয়েছেন গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সামসুল হক। একমুখ হাসিতেই বুঝিয়ে দিলেন, তানজিমার এই সাফল্যের জন্য কতটা গর্বিত এই অজ পাড়াগাঁয়ের সাধারণ কৃষকেরা। পঞ্চায়েত সদস্যের আশ্বাস, আগামি দিনে তানজিমার উচ্চশিক্ষার জন্য পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমে তানজিমার পরিবারের পাশে
দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

বেরুবাড়ি গোমীরাপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নৃণ্ময়কুমার রায় জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে জিরো পয়েন্ট থেকে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করে ভালো ফল করেছে তানজিম। আমরা খুবই খুশি।

শুধু ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কিত বাধাই নয়, ছিল কোনও প্রাইভেট টিউটর না থাকার মতো সঙ্কটও। তামজিম নিজের উপরই ভরসা করেছে বেশি। বাবা একটু দেখিয়ে দিয়েছেন। আর স্কুলের নিয়মিত ক্লাসের পড়ার সাহায্য। এই নিয়েই উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০-তে ৪৭৭ পাওয়া তানজিমার ইচ্ছে শিক্ষিকা হওয়া। যাতে তার মতো গ্রামের আর পাঁচটা তানজিমার শিক্ষাক্ষেত্রে মসৃণ ভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তাদের কষ্টের মুখে পড়তে না হয়, সেটাই নিশ্চিত করবেন তিনি।

-সাহায্যের জন্য যোগাযোগ-9932035666

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

আরও পড়ুন: Suvendu adhikari: শুভেন্দুকে হাওড়ায় 'না' যাওয়ার নোটিস, উলুবেড়িয়া যেতে অনড় বিরোধী নেতা

.