ভিডিয়ো: অযোধ্যার বামনি ফলসে হড়পা বান, জীবন ঝুঁকি নিয়ে পড়ুয়াদের উদ্ধার পুলিসের
দুঃসাহসিক! জলস্রোত টপকে পড়ুয়াদের কোমরে দড়ি বেঁধে উদ্ধারের রোমাঞ্চকর সেই মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়...
নিজস্ব প্রতিবেদন : পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে হড়পা বান। তাতেই আটকে পড়লেন কয়েকজন পড়ুয়া। কিন্তু শেষপর্যন্ত পুলিসি তত্পরতায় রক্ষা পেলেন সবাই। তলিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে দুই পড়ুয়াকে উদ্ধার করে পুলিসের উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারের রোমাঞ্চকর সেই মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
বর্ষা নেমেছে। বন্ধুদের সঙ্গে ট্রিপ। পড়ুয়ার দল বেছে নিয়েছিল অযোধ্যা পাহাড়কে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে যে ঘুরতে গিয়েছে, একমাত্র সেই জানে সৌন্দর্যের কোন অপরূপ ডালি সাজিয়ে নিয়ে সেখানে বসে রয়েছে প্রকৃতি। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে একের পর এক ফলস, বাঁধ, হ্রদ.... 'সবুজ রানি' অযোধ্যায় কী নেই! বন্ধুদের সঙ্গে সেই পাহাড়ে চড়ার মজাই আলাদা। নিছক আনন্দের খোঁজেই অযোধ্যায় গিয়েছিল পড়ুয়ার দল। কিন্তু আচমকাই আনন্দ বদলে গেল আতঙ্কে। অযোধ্যা পাহাড়ে বামনি ঝরনায় ঘুরতে গিয়ে হড়পা বানের কবলে পড়লেন তাঁরা।
বর্ষার অযোধ্যায় পাহাড়ে ট্রেক, ঝরনায় স্নান, কম অ্যাডভেঞ্চার নয়! কিন্তু সেই অ্যাডভেঞ্চারের মুহূর্তে যে 'সাক্ষাত্ মৃত্যু' সামনে এসে দাঁড়াবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি পড়ুয়ারা। পুরুলিয়ার আড়শা ও বলরামপুরের বাসিন্দা মোট ৫ জন ছাত্রছাত্রী কাল ঘুরতে গিয়েছিল বামনি ফলসে। পড়ুয়ারদের দলে ছিলেন দু-জন ছাত্রী ও তিনজন ছাত্র। ঝরনা দেখতে দেখতে একদম নীচে নেমে গিয়েছিল পড়ুয়ার দল। এদিকে তার কিছুক্ষণ আগেই বৃষ্টি হয়েছিল। আর তাতেই হঠাৎ 'ক্ষেপে' ওঠে শান্ত ঝরনা। আচমকাই জল বাড়তে শুরু করে বামনিতে। মুহূ্র্তে তা ভয়াল রূপ ধারণ করে। বিপদ বুঝে তিনজন কোনওরকমে জলের স্রোত থেকে নিরাপদ দূরত্বে চলে আসেন। কিন্তু আটকে পড়েন রাজেশ কর্মকার ও প্রিয়া গড়াই নামে দু-জন পড়ুয়া। বামনি ফলসের একপাশের পাথরে আটকে পড়েন তাঁরা।
প্রবল বেগে জলের স্রোত বইছে। ক্রমশ বাড়ছে জল। চোখের নিমেষে তলিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয় দুজনের। তবে তত্পর ছিল পুলিস। বড় বিপদ ঘনিয়ে আসার আগেই দুই পড়ুয়াকে উদ্ধার করে পুলিসের উদ্ধারকারী দল। নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে দুই পড়ুয়াকে উদ্ধার করেন পুলিসকর্মীরা। দুঃসাহসিক! জলস্রোত টপকে পড়ুয়াদের কোমরে দড়ি বেঁধে উদ্ধারের রোমাঞ্চকর সেই মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। দেখুন সেই ভিডিও-
আরও পড়ুন, হঠাৎই বদলে গেল দিঘার সমুদ্রের জলের রং!
অযোধ্যা পাহাড়ের বিভিন্ন ঝরনার মধ্যে মূল আকর্ষণ বলা যায় এই বামনিকে। বেশ বড় এই ঝরনা। তিন ধাপে নীচে নেমে গিয়েছে। প্রতিটি ধাপ একটি আরেকটির থেকে বেশ নীচে। পাথুরে সিঁড়ি ভেঙে নামতে হয়। অগুনতি সেই সিঁড়ি। স্থানীয়রা বলেন, বামনি ফলসের উপর থেকে একদম নীচের ধাপে নামতে মোটামুটি সাতশো সিঁড়ি ভাঙতে হয়। পুলিসের বক্তব্য, বর্ষার সময়ে অযোধ্যায় মাঝে মাঝেই হড়পা বান নেমে থাকে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।