অন্যরকম উপহারের অনন্য বড়দিন
উত্তুরে হাওয়ার উঁকিঝুঁকি শুরু হয়ে গেছে। সকাল বেলার কুয়াশার লেপ ছেড়ে আড়মোড়া ভাঙতে দেরি করছে কলকাতা। বিকেলের বয়স কমছে। ভিড় বাড়ছে চিড়িয়াখানায়। ধর্মতলার মোড়ে জুতোর তলায় পিশছে কমলালেবুর খোসা। গরম জামায় মোড়া বাঙালি চাদর সামলাতে সামলাতে রাস্তা পার করছে। নিউমার্কেট চত্বরে বড়দিনের সাজসজ্জার পসরা সাজিয়েছে দোকানি। ঝলমল করছে পার্ক স্ট্রিট। নাহুমসের পাস দিয়ে গেলেই নাকে আদর করছে গরম কেকের গন্ধ। শীত এসেছে। বছরটাও বিদায় নেওয়ার পথে। দরজায় কড়া নাড়ছে ক্রিসমাস। আর তারপরেই শুরু নতুন বছরের তোড়জোড়। বাস্তব জীবনে সান্তাক্লজ স্লেজে চেপে উড়ে আসুক বা না আসুক, ঝোলানো মোজায় উপহারের বসবাসে তো বাধা নেই!
উত্তুরে হাওয়ার উঁকিঝুঁকি শুরু হয়ে গেছে। সকাল বেলার কুয়াশার লেপ ছেড়ে আড়মোড়া ভাঙতে দেরি করছে কলকাতা। বিকেলের বয়স কমছে। ভিড় বাড়ছে চিড়িয়াখানায়। ধর্মতলার মোড়ে জুতোর তলায় পিশছে কমলালেবুর খোসা। গরম জামায় মোড়া বাঙালি চাদর সামলাতে সামলাতে রাস্তা পার করছে। নিউমার্কেট চত্বরে বড়দিনের সাজসজ্জার পসরা সাজিয়েছে দোকানি। ঝলমল করছে পার্ক স্ট্রিট। নাহুমসের পাস দিয়ে গেলেই নাকে আদর করছে গরম কেকের গন্ধ। শীত এসেছে। বছরটাও বিদায় নেওয়ার পথে। দরজায় কড়া নাড়ছে ক্রিসমাস। আর তারপরেই শুরু নতুন বছরের তোড়জোড়। বাস্তব জীবনে সান্তাক্লজ স্লেজে চেপে উড়ে আসুক বা না আসুক, ঝোলানো মোজায় উপহারের বসবাসে তো বাধা নেই!
বড় দিন আর নতুন বছর আসার আনন্দে আপনার কাছের মানুষদের ভালবাসায় ভরিয়ে দিন। ভালবাসা ছড়িয়ে দিন আপনার চারপাশটাতেও। কিছু অন্যরকম উপহারের সন্ধান সবার জন্য...
১) শেষ কবে বাবা-মাকে নিয়ে ঘুরতে গেছেন? মনে আছে কি? আপনার কাজের ব্যস্ততায় তাদের জন্য সময় এখন বড়ই কম। অনেক মনকেমন হয়ত বাষ্প হয়ে জমে আছে এই দু`জনের মনে। ভুলিয়ে দিন। ছোট্ট ছুটিকে সঙ্গী করে ঘুরে আসুন। কাছে পিঠে কোথায়। দিন দুয়েকের জন্য। আর আপনার কিছুটা সময় উপহার দিন তাঁদের। নিজেকেও। এই বড়দিনে। নতুন বছরটা দারুণ শুরু করুন। নতুন ভাবে।
২) আপনার বাড়িতে ছোট্ট সদস্যকে এবার ছোটা ভীম, সিনচ্যাং সঙ্গে সঙ্গে হিজবিজবিজ, প্যাঁচা-প্যাঁচানি, কুমড়োপটাশ, খুড়োর কলের সঙ্গে পরিচয় করে দিন। হাতে তুলে দিন একটা সুকুমার রচনাবলী। ওই একটা বইয়ের সাদাকালো লেখা আর ছবি গুলো আপনার খুদের বড়দিনে খুশির রঙমশাল জ্বালিয়ে দেবেই।
৩) ২৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর। হাতে অনেকগুলো দিন। এর মাঝে একটাদিন আপনার প্রিয়জনকে সঙ্গে করে নৌকায় চেপে সন্ধে বেলা গঙ্গায় পাড়ি দিন। সঙ্গে রাখুন আপনার অবান্তর কথা। আর ভালবাসা। সব উপহার কি বস্তুবাদিক হয়?
৪) ফেলা আসা দিনগুলো রিওয়াইন্ড করে এবারের বড়দিনে উপহার দিন বন্ধুদের। বাড়িতে বানানো কেক, জিঞ্জার ওয়াইন, উত্তাল রাতজাগা, দেদার আড্ডা, অপটু হাতের চিকেন কষা, আবেগে ভরা কনফেশন দিয়ে সাজিয়ে তুলুন তাদের নতুন বছরের শুরুটাকে। কোনও এক রাতের বেলা আর একবার দলে ভিড়ে যান। ছেঁড়া ঘুড়ি, রঙিন বলের সম্বলটুকু মনের জং ধরা ট্রাঙ্কের থেকে বার করে আনুন। রোদ্দুরে পাওয়া বিকেলবেলার দিব্যি আপনার বড়দিন রঙিন হবেই।
৫) হঠাৎ করে অদ্ভুত এক আইনের অন্ধকার নেমে এসেছে আপনারই বহু সহনাগরিকদের বুকে। তার ছায়ায় আপনিও কিছুটা হয়ত আচ্ছন্ন। কিন্তু সমপ্রেমী আপনার সেই বন্ধুদের, সহনাগরিকদের ভালবাসার অধিকারে আদালতের অন্যায় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করুন নতুন বছরের শুরুতে। ভালবাসার দাবিতে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দিন জোর করে প্রান্তিক করে রাখা মানুষগুলোর দিকে। রামধনুর রঙে মিশে পাশে থাকার আশ্বাস উপহার দিন সমকামী, রূপান্তরকামী, উভকামী মানুষদের। বুঝিয়েদিন তাঁদের অধিকারের দাবিতে আপনিও সামিল। আর আপনাকেও যদি সমাজ প্রান্তিকতার আচ্ছাদনে ঢেকে রাখতে চায় তাহলে নিজের অস্তিত্বকে জোড় গলায় মুক্তির উড়ান উপহার দিন।