সিয়াচেনকে সেনা-মুক্ত করার দাবি জেনারেল কায়ানির
এবার পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনা সরানোর জন্য সরব হলেন জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে সিয়াচেনের তুষারধস বিধ্বস্ত সেনাশিবির পরিদর্শনে এসে পাক সেনাপ্রধান স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, সিয়াচেনকে সেনা-মুক্ত অঞ্চলে পরিণত করার বিষয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসেছে।
এবার পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনা সরানোর জন্য সরব হলেন জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে সিয়াচেনের তুষারধস বিধ্বস্ত সেনাশিবির পরিদর্শনে এসে পাক সেনাপ্রধান স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, সিয়াচেনকে সেনা-মুক্ত অঞ্চলে পরিণত করার বিষয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসেছে। কায়ানির যুক্তি, সিয়াচেন এবং তার আশপাশের হিমবাহগুলির বরফগলা জলেই পুষ্ট হয় পাকিস্তানের বহু নদী। তাই পরিবেশ ও জলসম্পদ বণ্টন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ মেনে এই এলাকাকে সেনা-মুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে।
চলতি মাসের ৭ তারিখ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট বালটিস্তান প্রদেশের স্কার্ডু অঞ্চলের গায়ারিতে ভয়বহ তুষারধরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় পাক সেনার `নর্দান লাইট ইনফ্যান্ট্রি`র ৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সদর দফতর। এই দুর্ঘটনায় ১২৪ জন সেনা এবং ১১ জন অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়। বুধবার সিয়াচেনের `অ্যাকচুয়াল গ্রাউন্ড পজিশন লাইন`-এর অনতিদূরের সেনাশিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন পাক প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধান।
বস্তুত, সাম্প্রতিকালে বেশ কয়েকবারই পাকিস্তানের তরফে সিয়াচেন থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। যদিও ইসলামাবাদের অনুরোধে কারাকোরাম পর্বতমালার এই হিমাবাহ থেকে সেনা হ্রাস করলেও কারগিল-এর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সিয়াচেনকে পুরোপুরি সেনা-মুক্ত করার বিষয়ে উত্সাহ দেখায়নি নয়াদিল্লি। যদিও পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রক পক্ষে এদিন কিয়ানির প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
১৯৮৪ সালে `অপারেশন মেঘদূত`-এর সাফল্যের ফলে সিয়াচেন হিমবাহের দু`পাশের অধিকাংশ গিরিবর্ত্মের দখল আসে ভারতীয় ফৌজের হাতে। সেখানে বেশ কিছু স্থায়ী বাঙ্কার`ও তৈরি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে পাতিস্তানের আবেদন মেনে `ডি-মিলিটারাইজেশন`-এর নামে বাঙ্কার খালি করা হলে কারগিল কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলেই আশঙ্কা সাউথ ব্লকের। সে ক্ষেত্রে ২২,৩০০ ফুট উচ্চতার সিয়াচেন হিমবাহের পুনর্দখল পেতে ঝরবে বহু রক্ত। যদিও এদিন পাক সেনাপ্রধানের বক্তব্যের জবাবে যথেষ্ট ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী পাল্লম রাজু। তিনি বলেছেন, শেষ পর্যন্ত সিয়াচেনের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই বোধোদয় যথেষ্ট ইতিবাচক।