তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বাস মমতার
তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বাস দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের মানুষকে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে বললেন। শেখ হাসিনার
ঢাকা: তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বাস দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের মানুষকে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে বললেন। শেখ হাসিনার
সঙ্গে তাঁর বৈঠকেও এ নিয়ে কথা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে দিল্লি-ঢাকা আলোচনার ইতিহাস অনেক পুরনো। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, রাজ্যের স্বার্থের কথা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপত্তি করায় শেষপর্যন্ত চুক্তি সই করতে পারেনি দিল্লি। শেষমুহূর্তে মনমোহনের বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। তখন তাঁর আপত্তির কারণ কী ছিল?
তিস্তা শুকিয়ে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গে জলের সমস্যা মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কথা জেনেও কেন্দ্রীয় সরকার জল দিয়ে দিতে চাইছে।
যদিও, বিশেষজ্ঞদের মতে আপত্তির আসল কারণটা ছিল রাজনৈতিক।
এরপর, গত চার বছরে তিস্তা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। বদলে গেছে দু-দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। কিন্তু, ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভরকেন্দ্রে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তিস্তা। চুক্তি সই হলে বাংলাদেশের কৃষকরা সেচের জল পাবেন। রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে আওয়ামি লিগ। ফলে, তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে শেখ হাসিনার তাগিদ বরাবরই বেশি। তাঁর দূত হিসাবে কলকাতায় এসেও মমতার মন গলাতে পারেননি বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী দীপু মণি।
তিস্তার জলের ৫২% পশ্চিমবঙ্গের জন্য রেখে বাকিটুকু ঢাকাকে দিতে চেয়েছিল দিল্লি। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন পঁচাত্তর শতাংশ।সারাবছর তিস্তার জলপ্রবাহ কীরকম থাকে তা খতিয়ে দেখার জন্য নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রকে দায়িত্ব দেন তিনি। কল্যাণ রুদ্রর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। তবে, শুক্রবার ঢাকায় বাংলাদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চার বছর পর হঠাত্ কেন মতবদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী? বাংলাদেশ সফরের আগে তাঁকে ফোন করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কেন্দ্র চাইছে, তিস্তা চুক্তির পথে মমতা যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ান। কারণ, এই চুক্তি সই হলে বাংলাদেশে মৌলবাদী-ভারতবিরোধী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে হাসিনার হাত শক্ত হবে।
যদিও, রাজনৈতিক মহলের মতে মমতার সুর নরমের আসল কারণটা অন্য। খাগড়াগড়-কাণ্ডের পর এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলায় সন্ত্রাস রফতানির অভিযোগ করেছে ঢাকা। এ রাজ্যের চিটফান্ডের টাকা বাংলাদেশি জঙ্গিদের কাছে পৌছেছে বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তবে কি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঢাকাকে বন্ধুত্বের বার্তা দিতেই সুর নরম করলেন মমতা?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি করেছে দিল্লি। এ বার একুশের আবহে তিনি তিস্তার পানি নিয়েও সবুজ সংকেত দেওয়ায় পদ্মাপারে স্বস্তির সুর।