তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনে বিভীষণ কে?

তুরস্কে অভ্যুত্থানের পিছনে বিভীষণ কে? ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসছে একটাই নাম। মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক। দুনিয়া যাঁকে চেনে কামাল পাশা নামে।

Updated By: Jul 17, 2016, 08:42 PM IST
তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনে বিভীষণ কে?

ওয়েব ডেস্ক: তুরস্কে অভ্যুত্থানের পিছনে বিভীষণ কে? ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসছে একটাই নাম। মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক। দুনিয়া যাঁকে চেনে কামাল পাশা নামে।

একরাতে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু। আহত প্রায় দেড়হাজার। কৃষ্ণসাগরের তীরে রক্তপাত? কারণ কী? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা ধর্মগুরু গুলেন ফেতুল্লাকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরডোগান। কিন্তু, ইতিহাস বলছে তাঁর অতীত এবং বর্তমানও রীতিমতো গোলমেলে।

অতীতে ধর্মগুরু গুলেন ফেতুল্লাহ এবং প্রেসিডেন্ট এরডোগানের সম্পর্ক যথেষ্টই ভাল ছিল। ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট এরডোগান ফেতুল্লাহের ধর্মীয় আন্দোলনের সাহায্য নিয়েই ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে কোণঠাসা করেন। ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে দুহাজার তেরোয় এরডোগান ও ফেতুল্লাহর সম্পর্কের অবনতি হয়। সেনাবাহিনী ও বিচারবিভাগে ফেতুল্লাহর প্রভাবও যথেষ্ট। তবে অভ্যুত্থানে তাঁকে সন্দেহ করছে না পশ্চিমী বিশ্ব। ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসছে আর একটি নাম।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, ইসলামের রাজধানী তুরস্কে শেষ খিলাফতের অবসান ঘটান মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক। সাতানব্বই শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র গ্রহণ করে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ। চলতি সঙ্কটে ফের ফিরে আসছে তাঁর নাম। তুরস্কের আধুনিক মনস্ক সেনাবাহিনীতে কামাল পাশার ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত বহু অফিসার এখনও রয়েছেন। তুরস্কে সংবিধানের রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করে সে দেশের সেনাবাহিনী।

অতীতেও একাধিকবার ধর্ম নিরপেক্ষ কাঠামো রক্ষায় তুরস্কের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। ২০০৭ সালে ইসলামপন্থী আবদুল্লাহ গুলের রাষ্ট্রপতি হওয়ায় আপত্তি করেন তত্‍কালীন সেনাপ্রধান ইয়াসার বুয়ুকানিত। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে আবদুল্লাহকে রাষ্ট্রপতি করেন এরডোগান। এরপরেই এরডোগানের ছেলে বিলাল ও মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হয়।

বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে হওয়া সেই তদন্তে সেনাপ্রধানের হাত ছিল বলে সন্দেহ করেন এরডোগান। ২০১০ সালে ৩০০ সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের অভিযোগ এনে মামলা হয়। সরকার সাজানো তথ্যপ্রমাণ পেশ করেছে এই অভিযোগে মামলা খারিজ করে দেয় বিচারবিভাগ। অর্থাত্‍ এরডোগান প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর স্নায়ুর লড়াই এই প্রথম নয়। কিন্তু,অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি কখনই তৈরি হয়নি। চলতি অভ্যুত্থানে কামাল পাশা অনুগামীদের জড়িত থাকার আরও এক প্রমাণ সামনে এসেছে।

বিদ্রোহীরাও অভ্যুত্থানের পর ঘোষণা করে 'গৃহশান্তি পরিষদ' দেশ চালাচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্টকে গদিচ্যুত করে ধর্ম নিরপেক্ষতা রক্ষার লড়াইয়ের নামেননি তো বিদ্রোহী সেনারা? জনপ্রিয়তার জোরে অবশ্য সেনা বিদ্রোহ দমন করেছেন প্রেসিডেন্ট।

.