নির্জন দ্বীপে লভ ইন দ্য টাইম অফ 'করোনা'
তাঁরা মাছ ধরা শিখেছেন, সেই মাছ নুন মাখিয়ে সংরক্ষণ করা শিখেছেন, বৃষ্টির জল ধরে রাখা শিখেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: যুগলে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়লেন দ্বীপে। কেননা, ততদিনে করোনা-আবহে লকডাউন ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু ভেঙে পড়লেন না যুগল। তাঁরা দিব্যি নতুন করে জীবন শুরু করে দিলেন সেখানে।
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ লিখেছিলেন 'লভ ইন দ্য টাইম অফ কলেরা' (Love in the Time of Cholera)। বিশ্বখ্যাত সেই উপন্যাসের শুধুমাত্র শিরোনামটুকু গ্রহণ করে এবং ভূমিকায় সেই ঋণ স্বীকার করে বাংলাসাহিত্যের অন্যতম বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন 'কলেরার দিনগুলিতে প্রেম' শীর্ষক এক উপন্যাস।
না, এই দ্বীপনিবাসী যুগলের রোমাঞ্চকর ঘটনার সঙ্গে এই দুই উপন্যাসের কোনও যোগাযোগ নেই। যোগাযোগ শুধু ধরতাইতে। 'কলেরা'র জায়গায় 'করোনা'। করোনা-আবহে মুষড়ে না পড়ে জনবিচ্ছিন্ন প্রায়-বন্দী এই যুগল নির্জন দ্বীপে নতুন করে যেন রোম্যান্টিক সম্পর্কে ডুবে গেলেন। পেলেন অন্যরকম এক মুক্তির স্বাদ।
ঘটনাটা কী ঘটেছিল?
কোভিড-পূর্ব পৃথিবীতে অ্যাডভেঞ্চারে বেরিয়েছিলেন ব্রিটেনের (uk) লিডস এলাকার বাসিন্দা লিউক ও সারা (Residents of Leeds, Luke and Sarah)। পৌঁছেছিলেন আয়ারল্যান্ডের একটি নতুন দ্বীপে, ওয়ে আইল্যান্ডে (Owey Island)। সময়টা গত বছরের মার্চ। সেখানে পৌঁছনোর দু'দিন পরেই ব্রিটেনে লকডাউন শুরু হয়। ফলে সেই দ্বীপেই আটকে পড়েন তাঁরা। গত বছরের মার্চ থেকে নতুন বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এই যুগল ওই দ্বীপেই রয়ে গেলেন।
দ্বীপটিতে বিদ্যুৎ নেই। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। খাবারের দোকান তো অনেক দূরের বিষয়। লোকজনের বাড়িঘরও সেখানে হাতেগোনা।
তা হলে কী করে ওই যুগল বেঁচে থাকতে পারছেন এই দ্বীপে?
নির্জন ওই দ্বীপটিতে অবশ্য নানা পুরনো কৌশল কাজে লাগিয়েই বেঁচে থাকার লড়াই করেছেন লিউক-সারা। তাঁরা প্রথমেই বানিয়ে ফেলেন একটি ছোট্ট ঘর। কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্নার ব্যবস্থা করেন। ঘরের তাপমাত্রা তাতেই নিয়ন্ত্রণ হয়। তবে আলো জ্বালানো, গ্যাজেট চার্জের জন্য ব্যবহার করা হয় সোলার প্যানেলে।
যুগল জানিয়েছেন, ওয়ে দ্বীপে থাকতে থাকতে তাঁরা বেশ কিছু জিনিস শিখেছেন। মাছ ধরা শিখেছেন, সেই মাছ নুন মাখিয়ে সংরক্ষণ করা শিখেছেন। বৃষ্টির জল ধরে রাখা শিখেছেন।
তেমন কোনও সমস্যাই তাঁদের হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন যুগল। এক হিসেবে ভালই হয়েছে। অতিমারীর এই সময়ে জন-সংযোগ এড়িয়ে, ভিড় এড়িয়ে তাঁরা দিব্যি সুরক্ষিতই।
Also Read: মাস্কবাদী হতে ঘোর অনীহা সিডনিবাসীর, আন্দোলন