গ্রেফতার হয়েই জামিন পেলেন চিকিত্‍সক নিগ্রহকারী তৃণমূল নেতা

রায়গঞ্জ আর রামপুরহাট কাণ্ডেরই নয়া সংষ্করণ দেখা গেল তমলুকের ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনায়। সেই সঙ্গে ফের প্রশ্ন উঠে গেল পরিবর্তনের জমানার পুলিসের নিরপেক্ষতা নিয়ে‌! সাজানো গ্রেফতারের পর অতি লঘু ধারার মামলা নিয়ে তত্‍ক্ষণাত্‍ জেলা আদালতে জামিন পেয়ে গেলেন তমলুক শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া।

Updated By: Jun 9, 2012, 03:38 PM IST

রায়গঞ্জ আর রামপুরহাট কাণ্ডেরই নয়া সংষ্করণ দেখা গেল তমলুকের ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনায়। সেই সঙ্গে ফের প্রশ্ন উঠে গেল পরিবর্তনের জমানার পুলিসের নিরপেক্ষতা নিয়ে‌! সাজানো গ্রেফতারের পর অতি লঘু ধারার মামলা নিয়ে পত্রপাঠ আদালতে জামিন পেয়ে গেলেন তমলুক শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৮, ৪২৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। যার স'বকটি ধারাই জামিনযোগ্য৷
গত ২৩ মে তমলুকে এক পরিচারিকা-কিশোরীর বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়। কিশোরীর বাবার অভিযোগ, তাঁর ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করেছেন স্থানীয় এক শিক্ষক প্রণব রায়। কিন্তু তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ ওই শিক্ষক একে আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করেন। ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত তমলুকের স্কুল শিক্ষককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে। সেই রিপোর্ট বদলের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা চঞ্চল খাঁড়া তমলুক জেলা হাসপাতালের চিকিত্‍সক প্রদীপ দাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন বলে অভিযোগ। চিকিত্‍সক প্রদীপ দাসের এও অভিযোগ, কিশোরীর দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বদলের জন্যই তাঁকে বারবার চাপ দেওয়া হয়৷ বলা হয়, ধর্ষণের বদলে রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করতে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে চিকিত্‍সকের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী। প্রদীপ দাসের অভিযোগ, হামলাকারীদের নেতৃত্বে ছিল চঞ্চল খাঁড়া ও গঙ্গা নামে এক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। রাতেই তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই চিকিত্‍সক। কিন্তু তমলুক থানার ওসি অরুণ খান সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ও তমলুকের বিধায়ক তথা জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের `অতি ঘনিষ্ঠ` হিসেবে পরিচিত `বাহুবলী` নেতা চঞ্চল খাঁড়া এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ।
তমলুক শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া এবং তাঁর স্ত্রী তথা তমলুক পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃপ্তি খাঁড়ার বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারি আধিকারিকদের ওপর হামলা, বেআইনিভাবে জমি দখল-সহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই শাসক দলের এই উঠতি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিস। এদিনও কার্যত তাঁকে গ্রেফতারের নাটক করে জামিনযোগ্য ধারায় অভিযোগ এনে জামিন পাওয়ার ব্যবস্থা করল পুলিস। ঘটনার পাঁচ দিন পর গ্রেফতার হয়েও অভিযুক্ত চঞ্চল খাঁড়া সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যাওয়ায় আতঙ্কে ভুগছেন চিকিত্‍সক প্রদীপ দাসের পরিবার।

.