কোন খাতে বইবে জঙ্গিপুর?
পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বহু গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু জনগণের রায় নিতে গিয়ে বারেবারেই ধাক্কা খেতে হয়েছে তাঁকে।
পঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বহু গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু জনগণের রায় নিতে গিয়ে বারেবারেই ধাক্কা খেতে হয়েছে তাঁকে। জীবনে প্রথমবার জঙ্গিপুর থেকে জিতে লোকসভায় যাওয়ার ছাড়পত্র জোগাড় করেছিলেন বর্তমানে রাইসিনা হিলের মালিক প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনের উত্তরাধিকারী কে হবেন? তা নিয়েই এখন জমজমাট জঙ্গিপুরের ভোটযুদ্ধ।
চারিদিকে এখন পুজো পুজো গন্ধ। কিন্তু জঙ্গিপুরেই বোধহয় একমাত্র ঢাকের বাদ্যিতে অন্য আওয়াজ। মিছিলে অন্য সুর। জঙ্গিপুরের ইতিহাস বলছে ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ কেন্দ্রটি ছিল কংগ্রেসের দখলে। তারপর থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জঙ্গিপুর ছিল লালদুর্গ। একানব্বই সালে কংগ্রেস জিতলেও ১৯৯৮ থেকে ২০০৪-জঙ্গিপুর আবার বামেদের। ২০০৪ প্রথমবার জয়ী হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। এরপর ২০০৯ সালে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ভোটে জয়ী হওয়ার পর থেকে রাইসিনা হিলে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত তিনিই ছিলেন এই কেন্দ্রের সাংসদ।
ইতিহাস এই পথে চললেও এই কেন্দ্রের ভুগোলটা সত্যিই একটু গোলমেলে। সুতি, জঙ্গিপুর, রঘুনাথগঞ্জ, সাগরদিঘি, লালগোলা, নবগ্রাম এবং খড়গ্রাম-এই সাতটি কেন্দ্রের মধ্যে বর্তমানে নবগ্রাম সিপিআইএমের আর সাগরদিঘি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। স্বাভাবিকভাবেই তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না কংগ্রেসের কাছে এই আসনটা কতটা সেফ সাইড। কিন্তু, রাজনীতির রং বদলায় প্রতি মুহূর্তে। তাই জঙ্গিপুরের মাটিতে এখন অসংখ্য প্রশ্ন। প্রণবপুত্র অভিজিত মুখোপাধ্যায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। সিপিআইএমও ভোটযুদ্ধে মরিয়া। রাষ্ট্রপতিকে কথা দেওয়ায় তৃণমূল প্রার্থী না দিলেও তাঁদের ভোটাররা ঠিক কী করবেন এখনই বোঝা যাচ্ছে না। বিজেপিসহ এই কেন্দ্রে আছেন আরও বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী। যাঁরা নিজে না জিতলেও নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করে দিতেই পারেন। ফলে আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ নির্বাচন মনে হলেও গোটা জঙ্গিপুর জুড়ে কিন্তু এখন ভাগিরথীর চোরাস্রোত বইছে।