'মাও ভূত'-এর গ্রামের ৬০ ভোটার জানেনই না ভোট কবে
২৫ ডিসেম্বর, ২০০৯। উৎসবের রাত। চারিদিকে ঝলমল করছে ক্রিসমাসের আনন্দ। কিন্তু ওই রাতে মুড়াবনি গ্রামে যে 'উৎসব' হয়েছিল তার ঘোর আজও কাটেনি গ্রামের মানুষদের।
ওয়েব ডেস্ক: ২৫ ডিসেম্বর, ২০০৯। উৎসবের রাত। চারিদিকে ঝলমল করছে ক্রিসমাসের আনন্দ। কিন্তু ওই রাতে মুড়াবনি গ্রামে যে 'উৎসব' হয়েছিল তার ঘোর আজও কাটেনি গ্রামের মানুষদের।
মাঝরাতে কানে ভেসে এল এক ঝাঁক বুটের আওয়াজ। বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করা হল সকলকে। তারপর মাথার ওপর বন্দুকের নল ঠেকিয়ে শুরু হল দাবি। প্রাণের বদলে দিতে হবে গোলার ধান, খাবার, টাকা পয়সা সব। ওই গরীব মানুষগুলোর যে টুকু সম্বল ছিল সবটাই সেদিন চলে গিয়েছিল মাওবাদীদের দখলে। যারা সব দাবি মেটাতে পারেননি তাদের চোকাতে হয়েছে প্রাণ দিয়ে অথবা ঘরের মেয়ে-বউয়ের ইজ্জত দিয়ে। রাত ভোর চলে লুঠ, খুন, ধর্ষণ। রাত পোহাতেই আতঙ্কে ঘর ছাড়া হন গ্রামেই প্রায় সব বাসিন্দাই। থেকে গিয়েছিল তিন-চার ঘর।
সেই রাতের পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। বদল হয়েছে সরকার। পুলিসি এনকাউন্টারে মারা গেছেন এ রাজ্যের মাও পাণ্ডা কিষেণজি। কিন্তু পাল্টায়নি গ্রামের ছবি। আজও 'ভূত' গ্রামে কয়েক ঘর মানুষ ছাড়া আর কেউ থাকার সাহস দেখান না। বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন মুড়াগ্রাম। সেখানে ওড়ে না কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা। বাজে না কোনও প্রাচারের মাইক। তাদের কানে শুধুই বাজে সেই রাতের মাওবাদীদের বুটের আওয়াজ। আজও তারা দেখতে পান বন্দুক হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলে দলে মাওবাদী। সেদিনের ক্রিসমাস উৎসবে তারা যেমন বঞ্চিত ছিলেন আজ ভোট উৎসবেও ছবিটা একই রকম। 'ভূত' গ্রামের এই ৬০ জন ভোটার জানেনই না কবে ভোট আর কাকেই বা দেবেন ভোট।