এশীয় ছবির বড়দিন: অস্কার মঞ্চে ‘প্যারাসাইট’-এর জয়নিশান

ছটা অস্কার নমিনেশন ছিল প্যারাসাইটের। জিতল চরটে অস্কার

Updated By: Feb 10, 2020, 03:25 PM IST
এশীয় ছবির বড়দিন: অস্কার মঞ্চে ‘প্যারাসাইট’-এর জয়নিশান

শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায় হলিউডের নাক উঁচুপনাকে সরিয়ে ৯২তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চে দক্ষিণ কোরিয়ার ছবি ‘প্যারাসাইট’-এর জয়জয়কার।  সেরা চিত্রনাট্য ও সেরা পরিচালকের সম্মান বং জুন হো-র হাতে ওঠার পরই প্রায় আন্দাজ করা গিয়েছিল, এবারের সেরা ছবির দৌড়ে এগিয়ে ‘প্যারাসাইট’-ই। এই প্রথম কোনও বিদেশি ছবি অস্কার মঞ্চে জিতে নিল সেরা ছবির সম্মান। মঞ্চে দাঁড়িয়ে পরিচালক বললেন, ‘কোনও পরিচালকই দেশ তথা ভৌগোলিক সীমানার কথা ভেবে ছবি তৈরি করেন না। পরিচালকরা ছবি তৈরি করেন তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই’।তিনি আরও বলেন, পারলে তিনি অস্কারকে পাঁচ টুকরো করে মার্টিন স্করসিসে, ট্যারানটিনো, সাম মেন্ডেস, টড ফিলিপসের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান। একেই বোধহয় বলে, সিনেমার প্রতি ভালবাসা। ছটা অস্কার নমিনেশন ছিল প্যারাসাইটের। জিতল চরটে অস্কার। পরিচালক মঞ্চে দাঁড়িয়েই বললেন, ‘ওয়ান্ট টু গো ফর এ ড্রিঙ্ক’।

‘প্যারাসাইট’ দক্ষিণ কোরিয়ার সেইসব অন্ত্যজ মানুষের জীবন, যাঁরা মাটির নীচে থাকেন। তেমনই একটা পরিবার, পিত্‍জার বাক্স বানায়। হঠাত্‍ই পরিবারের ছেলেটি আবিষ্কার করে, ঘরের এক কোণ থেকে মোবাইলে ইন্টারনেটের টাওয়ার পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকেই বদলে যায় তাদের জীবন। বড়লোকের বাড়িতে মেয়ে পড়ানো, বাচ্চা ছেলের আর্ট ক্লাস, পরিবারের কর্তার ঐ বাড়ির ড্রাইভারের কাজ নেওয়া আর মায়ের একই বড়লোকের বাড়িতে গভর্নেসের কাজে বহাল হওয়া। বেসমেন্টে থাকা গরিব পরিবারটির একটু ভাল থাকতে চাওয়া, তাদের জীবনকে কোন মোড়ে দাঁড় করিয়ে দেয়, তাকেই সামাজিক থ্রিলারের মাধ্যমে এঁকেছেন পরিচালক বং জুন হো। ছবিতে একটা বোঁটকা গন্ধের অ্যানালজি আছে, যা ছবির সূক্ষতাকে আরেকটু বাড়িয়ে দেয়।

প্যারাসাইটের এই গল্প আর তার সিনেমার ন্যারেটিভ, এর আগেই কান চলচ্চিত্রোত্‍সবে পাম দ্য অঁর জিতেছে। এবছরের সেরা ছবির লড়াইয়ে ছিল সাম মেন্ডেসের ছবি 1917। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সত্য ঘটনা অবলম্বনে এই ছবি পেল সেরা সিনেমাটোগ্রাফির পুরস্কার। রজার ডিকিনস মঞ্চে উঠে নিলেন পুরস্কার। বিশ্বাস করেন, বাস্তব (রিয়্যালিটি) সবসময়ে ন্যাচারাল হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। দর্শক যেভাবে রিয়্যালিটিকে দেখতে চান, সেভাবে সাজিয়ে গুজিয়েও ছবির সিনেমাটোগ্রাফি পেশ করা যায়। তাই 1917-এর দৃশ্যায়ন প্রায় পিচ-পারফেক্ট। এতটাই নিখুঁত যে মাঝে মধ্যে অস্বস্তি হতে পারে।এছাড়াও সেরা ভিস্যুয়াল এফেক্টস আর সেরা সাউন্ড মিক্সিংয়ের শিরোপাও গেল 1917-এর ঘরে।

সেরা এডিটিং ও সেরা সাউন্ড এডিটিংয়ের পুরস্কার পেল ফোর্ড ভার্সাস ফেরারি।

সেরা অভিনেতার দৌড়ে এবছর প্রথম থেকেই জোয়াকিন ফিনিক্স এগিয়ে ছিলেন। জোকারের চরিত্রে তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ গোটা পৃথিবী। ১১ টা অস্কার নমিনেশন থাকলেও সেরা অভিনেতা ও সেরা গান ছাড়া আর কোনও সম্মান ঘরে তুলতে পারে নি এই ছবি।

সেরা মহিলা অভিনেতার পুরস্কার পেলেন ‘জু়ডি’ ছবির জন্য রেনে জেলওয়েগার। ট্যারানটিনোর ‘ওয়ান্স আপ আন এ টাইম ইন হলিউড’ জিতে নিল দুটি অস্কার। সেরা সহ অভিনেতা ব্র্যাড পিট ও সেরা প্রোডাকশন ডিজাইন। ‘ম্যারেজ স্টোরি’র জন্য সেরা মহিলা সহ অভিনেতা হলেন লরা ডার্ন।

বারাক ওবামার প্রোডাকশন হাউস হাইয়ার গ্রাউন্ড প্রোডাকশনসের আমেরিকান স্টোরি জিতে নিল সেরা ডকুমেন্টারির অস্কার।

.