মুখের ঘা-কে অবহেলা নয়, এটি হতেই পারে কোনও মারণব্যধির সংকেত!

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা-এর মাধ্যমে। এইডস (AIDS) থেকে শুরু করে ক্যান্সার— সবেরই প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা-এর মাধ্যমে।

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা-এর মাধ্যমে। বর্তমানে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি গর্ভাবস্থায়ও শরীরে বাসা বাঁধা অনেক রোগের লক্ষণ মুখের ভেতরেই প্রকাশ পায়। মরণ রোগ এইডস (AIDS) থেকে শুরু করে ক্যান্সার— সবেরই প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা-এর মাধ্যমে।

মুখের ভেতরের মাংসে বা জিহ্বায় ঘা হয়, ব্যথা করতে থাকে, কিছু খেতে গেলে জ্বালা করে— মোটামুটি এগুলিই হচ্ছে মুখে ঘায়ের প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেরই এ সবের সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফুলে যাওয়া বা পুঁজ বের হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সাধারণত, মুখে গালের ভেতরের অংশে বা জিভে ঘা হয় কোনও ভাবে কেটে ছড়ে গেলে। আবার শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে গিয়ে খোঁচা লেগেও এই সমস্যা দেখা দেয় অনেকের। খুব গরম চা-কফি বা খাবার খেতে গিয়ে গালের ভেতরের অংশের ছাল উঠে গেলে বা কিছু চিবাতে গিয়ে গালের ভেতরে কামড় লাগলেও ঘা হতে পারে। এই সব সাধারণ কারণ ছাড়াও মুখের ঘা নানা মারণব্যধির কারণে হতে পারে।

যাঁদের ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেনস, তাঁদের মুখেও এক ধরনের জীবাণু বাড়তে থাকে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় যে, যাঁদের ধূমপান এবং জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের মধ্যে মুখের ঘা খুব বেশি হয় এবং সেই সঙ্গে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। বিশেষত যাঁরা পানের সঙ্গে জর্দা খান এবং অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি থাকে। সাধারণ ক্ষেত্রে আয়রন বা ভিটামিন বি-১২-এর অভাবেই এ সমস্যা বেশি হয়। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। যেমন, ফল, শাকসবজি, দুধ, মাছ এবং চর্বি ছাড়া মাংস। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক, ভিটামিন ও আয়রন থাকায় মুখের ঘা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সঙ্গে নিয়মিত মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।

মুখ খুবই স্পর্শকাতর অংশ। তাই নিজে নিজে ওষুধ ব্যবহার করতে যাবেন না। যা করবেন তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। সব চাইতে জরুরি বিষয় হল চিকিৎসার পরও মুখের ঘা যদি দু’সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কারণ, মুখের বেশ কিছু ঘা বা সাদা ক্ষতকে বিজ্ঞানীরা প্রি-ক্যান্সার লিশন বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার ক্ষত বলে থাকেন। সুতরাং, মুখের ঘা প্রতিরোধে দাঁত ও মুখের যত্ন নেবেন এবং মুখের ভিতরের অংশে ঘা হওয়া মাত্রই চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।