লুকোচুরি খেলছেন, ৯ তলার কার্নিশে বসে পা দোলাচ্ছেন করোনা রোগী! নাজেহাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ

বছর ৩৪-এর করোনা আক্রান্ত রোগীর কাণ্ড কারখানায় হাসির রোল তো উঠেছেই তার চেয়েও বেশি চিন্তায় পড়েছেন মেডিকেল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লকের কর্তৃপক্ষ।

Reported By: তন্ময় প্রামাণিক | Edited By: Priyanka Dutta | Updated By: Jun 1, 2020, 11:48 PM IST
লুকোচুরি খেলছেন, ৯ তলার কার্নিশে বসে পা দোলাচ্ছেন করোনা রোগী! নাজেহাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ

তন্ময় প্রামাণিক: লেপ-কম্বল নিয়ে ওয়ার্ডের সর্বত্র ঘুরে বেড়াছেন করোনা আক্রান্ত এক রোগী। আর তাঁকে নিয়েই কার্যত কালঘাম ছুটেছে চিকিৎসক থেকে পুলিস কর্মীর। আর এই দৃশ্যই দেখা গেল কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত ওই রোগীর বয়স ৩৪। সম্প্রতি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আর তারপর থেকেই তিনি কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কখনও লেপ মুড়ি দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন ওয়ার্ডের মধ্যে, কখনও ছুটে ছাদে চলে যাচ্ছেন। কখনও ৯ তলার ছাদের কার্নিশে বসে পা দোলাচ্ছেন। 

বছর ৩৪-এর করোনা আক্রান্ত রোগীর কাণ্ড কারখানায় হাসির রোল তো উঠেছেই তার চেয়েও বেশি চিন্তায় পড়েছেন মেডিকেল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লকের কর্তৃপক্ষ। এই ব্লকেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। কেউ কেউ মরণাপন্ন। কেউ বা চিকিৎসার জন্য বেডে বসে থাকছেন। কিন্তু রোগীর কাণ্ড-কারখানা বাকিদের ক্রমশ হাসির কারণ হয়ে উঠছে। ফ্লোরের সমস্ত রোগীদের নজর এখন ওই ব্যক্তির দিকেই। অনেকেই রোগ ভুলে তার কাণ্ড কারখানা দেখে হেসে গড়িয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: করোনা তো ছিল, দোসর বিরল কাওয়াসাকি রোগ! অসম লড়াইয়ে জিতে বাড়ি ফিরল চার মাসের শিশু

হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, "করোনা পজেটিভ হওয়ায় এই রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য সুপার স্পেশালিটি ব্লকে তাকে রাখা হয়েছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে লেপ-কম্বল নিয়ে ছোটাছুটি করছে ওয়ার্ডের মধ্যে। কখনও লুকিয়ে পড়ছে। ফলে একটু সমস্যা হচ্ছে। সম্ভবত মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন এই রোগী। চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন সব রকম ভাবে তাকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলার।"

পুলিস সূত্রে খবর, মাঝেমধ্যেই সে খাটের তলায়, কখনও বা আলমারির ফাঁকে, কখনও বাথরুমে, আবার কখনও সিঁড়ির নিচে লুকিয়ে পড়ছেন। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাঁকে আবার বেডে নিয়ে আসা হচ্ছে। নিজের লেপ-কম্বল ছাড়াও অন্যের বেড থেকে লেপ-কম্বল ট্রেন এসে গায়ে জড়িয়ে ঘুরছে। রবিবার দুপুরের পর আচমকাই সে লেপ-কম্বল জড়িয়ে ছাদে পৌঁছে যায়। তাঁর পিছু পিছু যান নিরাপত্তা কর্মীরাও। কোনও মতে তাঁকে ওয়ার্ডে এনে আপাতত ঘিরে রেখেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এই রোগীর কাছে যেতে পিপিই কিট ব্যবহার করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে নিরাপত্তারক্ষীদের মারধরেরও চেষ্টা করছে ওই রোগী কাজেই সবমিলিয়ে তাঁকে সামাল দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে বলেই জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। তবে হাল ছাড়েননি। রোগীকে সুস্থ করে ফেরানোই এখন একমাত্র লক্ষ চিকিৎসকদের। 

.