এএমআরআই ব্ল্যাক ফ্রাইডে

শুক্রবার ভোররাতে আগুন লাগে এএমআরআই হাসপাতালে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বিকেল চারটে নাগাদ। এরই মধ্যে হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা সহ রাজনৈতিক দলের নেতা, মন্ত্রীরা। ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও। কীভাবে ঘটল গোটা ঘটনা: রাত ৩:২০- আগুন লেগে যায় ঢাকুরিয়া এএমআরআই হাসপাতালের বেসমেন্টে। সঙ্গে সঙ্গেই বিপদ বুঝতে পারেন উপস্থিত রোগীর আত্মীয়রা।

Updated By: Dec 9, 2011, 09:48 PM IST

শুক্রবার ভোররাতে আগুন  লাগে এএমআরআই হাসপাতালে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বিকেল চারটে নাগাদ। এরই মধ্যে হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা সহ রাজনৈতিক দলের নেতা, মন্ত্রীরা। ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও। কীভাবে ঘটল গোটা ঘটনা:
রাত ৩:২০- আগুন লেগে যায় ঢাকুরিয়া এএমআরআই হাসপাতালের বেসমেন্টে। সঙ্গে সঙ্গেই বিপদ বুঝতে পারেন উপস্থিত রোগীর আত্মীয়রা। ধোঁয়া দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। হাসপাতালের গেটেই আটকে দেওয়া হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। খবর দেওয়া হয় দমকলে।
ভোর ৫টা- ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছল দমকল। শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। সঙ্গে উদ্ধারের কাজও।
ভোর ৫:৩০-
ঘটনাস্থলে পৌঁছল দমকলের ল্যাডার। শুরু হয় কাচ ভেঙে উদ্ধারের কাজ। ততক্ষণে বেসমেন্টের কাচ ভাঙতে শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাচ ভাঙতেই গলগল করে বেরিয়ে আসতে শুরু করে ভিতরে জমে থাকা ধোঁয়া। হাসপাতাল থেকে একে একে বের করে আনা হতে থাকে নিথর দেহ। তিনতলা, চারতলা থেকে বহু মুমূর্ষু রোগীকে নামানো হয় দঁড়ি বেঁধে।
সকাল ৬ টা- ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ততক্ষণে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হাসপাতাল চত্বর। উদ্ধারের কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন রোগীদের আত্মীয় এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

বেলা ১০ টা- হাসপাতালে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধারের কাজে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন তিনি। হাসপাতালে পৌঁছে যান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন রোগীর আত্মীয়রা। হাসপাতালের সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই লাঠি চালায় পুলিস। পরিস্থিতি সামলাতে দুপক্ষকেই সংযত থাকার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে ঢাকুরিয়ে আমরির লাইসেন্স বাতিলের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই খবর চাউর হওয়ার পরই ঢাকুরিয়া এএমআরআই থেকে চলে যেতে  শুরু করেন চিকিত্সক এবং নার্সরা।
বেলা ২:৩০- বেসমেন্ট এবং সাববেসমেন্ট থেকে তখনও বেরোচ্ছে ধোঁয়া। বেসমেন্টে ক্যানাসারে রে দেওয়ায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি থাকায় তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। দমকলকর্মীদের বেসমেন্টের কাছাকাছি যেতে নিষেধ করা হয়।
বেলা ৩টে-
মধ্যমগ্রাম থেকে এসে পৌঁছয় এনডিআরএফের সদস্যরা। তারা বেসমেন্ট পরিদর্শন করে জানান, হাসপাতালে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার কোনও আশঙ্কা নেই।

বিকেল ৪ টে- আগুন তখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু, এএমআরআইয়ের মূল বিল্ডিংয়ে তখন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। দেখা মেলেনি কোনও সিনিয়র ডাক্তারের। জুনিয়র ডাক্তাররাই কোনওরকমে পরিস্থিতি সামলাতে থাকেন। আমরির অগ্নিদগ্ধ অংশটি সিল করার নোটিস পড়ে যায়।
সন্ধে ৬ টা- হাসপাতালে আসেন ভাবা পরমাণু কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। তেজস্ক্রিয়তার আশঙ্কা খতিয়ে দেখেন তারা। রাতের দিকে সিল করে দেওয়া হয় হাসপাতালের অগ্নিদগ্ধ অংশটি।

.