'কবি'র লড়াই: কবিতায় পরস্পরকে বিঁধলেন রুদ্র-মদন
সোশ্যাল মিডিয়ায় কবি 'ভয় গোস্বামী'র 'অনুমাধব' কবিতা কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয়েছে। আবৃত্তি করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এটি রুদ্রনীলেরই রচনা। জয় গোস্বামীর এক বহুচর্চিত কবিতার প্যারডি এটি। এর প্রেক্ষিতে মদন মিত্রও একটি প্যারোডি লিখেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অবশ্যই বাংলাভাষার জন্য সুদিন। বাংলা নববর্ষের ঠিক আগে যুযুধান দুই পক্ষ বাংলা কবিতার মধ্যে দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করছেন, দৃশ্যতই বিষয়টা প্রীতিকর ঠেকতে বাধ্য। তবে তা বাংলা ভাষা বা বাংলা কবিতার পক্ষে সত্যিই কতটা সমৃদ্ধিসূচক, তা কাব্যবিশেষজ্ঞেরাই ব্যাখ্যা করবেন।
আপাতত, ঘটনাচক্রের দিকে চোখ রাখা যাক। সোশ্যাল মিডিয়ায় কবি 'ভয় গোস্বামী'র 'অনুমাধব' কবিতা কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয়েছে। আবৃত্তি করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। সেটি রুদ্রনীলেরই রচনা। জয় গোস্বামীর এক বহুচর্চিত কবিতার প্যারডি এটি। এর প্রেক্ষিতে মদন মিত্রও একটি প্যারোডি লিখেছেন।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, রুদ্রনীল কবিতাটি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে লিখেছেন/বলেছেন; স্বয়ং স্রষ্টার অবশ্য দাবি, তিনি তাঁর কবিতায় কারও নাম নেননি। এদিকে মদন মিত্র তাঁর ফেসবুকে যে কবিতাটি পোস্ট করেছেন, তার শিরোনামে জ্বলজ্বল করছে 'রুদ্রনীলের আর্তনাদ' শব্দবন্ধ। সেখানে 'বিজেপিতে উপোস করে হয়েছো শুকনো বিল' বা 'কাজও গেছে/লাজও গেছে/লেজ তো গেছে কবে' জাতীয় পঙক্তিও রয়েছে। যা নিয়ে চৈত্রের এই তপ্ত দিনে সোশ্যাল মিডিয়া আরও বেশি করে তপ্ত হয়েছে; সরগরম হয়েছে স্থানীয় রাজনীতির আসরও।
তাঁর কবিতা-ভিডিয়ো এবং এর সাপেক্ষে মদন মিত্রের ফেসবুক-কবিতাজবাব: এই বিতর্কের সূত্রে Zee ২৪ ঘণ্টার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে।
সেখানে রুদ্রনীল বলেন যে, তিনি একটি কবিতা লিখেছিলেন। বলেছেন, 'এটা ভাল লাগছে যে, বিরোধী দলের নেতারা এখন গুলি-বন্দুক-বোম ছেড়ে আমাকে নিয়ে কবিতা লিখছেন। খুব ভাল। আমি অবশ্য কখনও কাউকে নিয়ে ব্যক্তি-আক্রমণ করিনি। আমি একটি ঘটনাকে নিয়ে লিখেছিলাম। সেখানে কারও নামও ছিল না।
রুদ্রনীল আরও বলেন, 'কোনও সিনিয়র, তা তিনি যে রাজনৈতিক মতের বা পথেরই হন না কেন, তাঁকে ছোট করা আমার অভিপ্রায় নয়। (আমি) খুবই কষ্ট পেয়েছি। (তৃণমূলে) দলের বিরুদ্ধে কেউ কেউ সত্যি কথা বলে ফেলেন এবং সেটা সত্যি জেনেও কেউ কেউ সেটাকে প্রতি আক্রমণ করে দলের কাছে নিজের নাম্বার বাড়াতে চান। পশ্চিমবঙ্গে শাসকদলের বিরুদ্ধে কেউ কোনও কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর জীবিকাকে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়। শাসকদল যদি কারও কাজ কেড়ে নিয়ে পরে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করে, তবে আমি বলব, এই ঘটনার বিপরীত ঘটনা ঘটতে বেশি দিন সময় লাগবে না। এমন আগুন জ্বালাবেন না, যাতে আপনি নিজেও কদিন পরে পুড়ে যাবেন।'
রুদ্রনীলকে প্রশ্ন করা হয়, কবিতার উত্তরে কি আর একটি পাল্টা-কবিতা লিখবেন তিনি?
রুদ্রনীল বলেন, 'তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটা দলকে নামানো হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। আমি কারও নাম নিয়ে লিখিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার বিরুদ্ধে এরা রে রে করে লেগে পড়লেন। কেন? আসলে এতেই বোঝা যায়, আমি সত্যিটার দিকে আঙুল তুলেছি।' তিনি আরও বলেন, 'আপনারা হয়তো পরিচালক, প্রযোজক, প্রযোজনা সংস্থাকে ভয় দেখিয়ে আমাকে নেওয়া বন্ধ করতে পারেন, কারণ আমি মুখ খুলি। (আর) কবিতা আমি অবশ্যই লিখে যাব।
আগামি দিনে এই কবিতা-যুদ্ধ কী ভাবে সম্পাদিত হবে বা আদৌ হবে কিনা, সময়ই তা বলবে।
আরও পড়ুন: National Street Theatre Day: পথনাটকে 'বহু' 'এক' হয়ে যায়; আবার 'এক' 'বহু' হয়ে যায়: দেবশঙ্কর হালদার