মমতা জমানার পিপিপি মডেলে পরিবর্তনে উদ্যোগী দীনেশ ত্রিবেদী
বেসরকারি সংস্থাকে আরও সুযোগ দিয়ে পিপিপি মডেলকে ঢেলে সাজতে চাইছে রেলমন্ত্রক। এজন্য, নতুন খসড়াও তৈরি হয়ে গেছে। খুব তাড়াতাড়িই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শুক্রবার কলকাতায় রেল বোর্ডের বৈঠকের পর বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় মিত্তল আজ একথা জানিয়েছেন।
বেসরকারি সংস্থাকে আরও সুযোগ দিয়ে পিপিপি মডেলকে ঢেলে সাজতে চাইছে রেলমন্ত্রক। এজন্য, নতুন খসড়াও তৈরি হয়ে গেছে। খুব তাড়াতাড়িই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শুক্রবার কলকাতায় রেল বোর্ডের বৈঠকের পর বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় মিত্তল আজ একথা জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল রেলের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সেভাবে সাফল্য পায়নি। মনে করা হচ্ছে, সে কারণেই নতুন করে এই মডেলের রূপরেখা তৈরি করেছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হওয়ার পর পিপিপি মডেলে রেল প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই এই মডেলে ১২টি প্রকল্প রূপায়ণের ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের অন্যত্রও পিপিপি মডেল গ্রহণের কথা বলা হয়। যদিও, কাঙ্খিত সাফল্য আসেনি। কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রেলের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে রাজি হলেও বেসরকারি সংস্থাগুলি কার্যত কোনও উত্সাহই দেখায়নি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রেলের অপারেটিং রেশিও। আয় না বেড়ে খরচ বেড়ে যাওয়ায় থমকে গেছে বিভিন্ন প্রকল্প। বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখে তাই বেসরকারি সংস্থার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে নতুন পিপিপি মডেলটি আরও উদার করা হয়েছে।
পিপিপি মডেলের পাশাপাশি শুক্রবার রেল বোর্ডের বৈঠকে অলোচনা হয় বর্তমান আর্থিক সঙ্কট নিয়েও। অর্থের অভাবেই এ রাজ্যে রেলের একাধিক প্রকল্প আটকে আছে। এই পরিস্থিতিতে রেলের আয় না বাড়ালে পরিকল্পনা রূপায়ণে যে সমস্যা হবে, তা রেলমন্ত্রীকে জানিয়ে দিলেন রেলের কর্তারা। শুক্রবার কলকাতায় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, যাত্রীভাড়া ও পণ্যমাশুলই রেলের আয়ের প্রধান উত্স। এগুলি বাদ দিয়ে বিকল্প আয়ের রাস্তা খোঁজার বাস্তবতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই শ্যাম পিত্রোদার নেতৃত্বাধীন বিশেষ কমিটি ২৫ শতাংশ যাত্রীভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ডকে।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বহু প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খরচ বাড়তে থাকায় অনেক প্রকল্পই রূপায়িত হয়নি। ইতিমধ্যে, একের পর এক দুর্ঘটনা রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বর্তমান রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী বলছেন, তিনি পূর্বতন রেলমন্ত্রীর নির্দেশিত পথেই কাজ করতে চান। কিন্তু, সেজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে আসবে তার কোনও উত্তর নেই। শুক্রবার, কলকাতা মেট্রোর আধুনিকীকরণ সহ রেলের যাত্রী সুরক্ষায় জোর দেন রেলমন্ত্রী। প্রকল্প রূপায়ণের কথাও বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রী একথা বললেও রেলের হাতে যে প্রয়োজনীয় অর্থ নেই, তা রেলবোর্ডের চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট। যাত্রীভাড়া বা পণ্যমাসুল ছাড়া রেলের আয়ের যে আর কোনও উত্স নেই, তাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। ঠিক হয়েছে মেট্রো রেলের ২২টি পুরোনো রেক বদলে ফেলা হবে। আনা হবে নতুন এসি রেক। শহরতলির ট্রেন ও সিগন্যাল ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, অত্যাধুনিক কন্ট্রোল সিস্টেম চালু করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু, এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান কীভাবে হবে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।