মেয়রের গাফিলতি ঢাকতে আমলার ঘাড়ে বন্দুক

ত্রিফলা আলো দুর্নীতির ঘটনায় কি শেষ পর্যন্ত আমলার ঘাড়ে বন্দুক রেখেই মেয়রের গাফিলতি ঢাকা হবে? কলকাতা পুরসভার আনাচেকানাচে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। নিয়ম ভেঙে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের বরাত দেওয়া হয়েছে।

Updated By: Sep 12, 2012, 09:14 AM IST

ত্রিফলা আলো দুর্নীতির ঘটনায় কি শেষ পর্যন্ত আমলার ঘাড়ে বন্দুক রেখেই মেয়রের গাফিলতি ঢাকা হবে? কলকাতা পুরসভার আনাচেকানাচে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। নিয়ম ভেঙে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের বরাত দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে ডিজি লাইট গৌতম পট্টনায়েককে। সাতাশ কোটি টাকার ত্রিফলা আলো দুর্নীতি নিয়ে সরকার যখন বেশ চাপে, তখন অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। কলকাতা পুরসভার কাছে ত্রিফলা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেন তিনি।  মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল পুরসভার। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ রিপোর্ট তৈরি করে প্রথমে তা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে পাঠিয়ে দেন।
চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পুরমন্ত্রী ওই রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মঙ্গলবার ত্রিফলা রিপোর্ট দিনভর মহাকরণে পড়ে থাকলেও, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, কেন নির্ধারিত দিনে রিপোর্টটি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হল না? তাহলে কি  পুরকমিশনারের রিপোর্টে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী? সংশ্লিষ্টমহলের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রিফলা রিপোর্টের কিছু জায়গা সংশোধন করা হয়ে থাকতে পারে। আর তা করতে গিয়েই নির্ধারিত দিনে রাজভবনে পাঠানো হল না রিপোর্ট। এখন প্রশ্ন, কী কারণে রিপোর্টে এই পরিবর্তনের সম্ভাবনা?
সংশ্লিষ্টমহলের ধারণা,  আলোর বরাতে অনিয়মের পুরো দায় ডিজি লাইটের ঘাড়ে চাপানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে লঘু করে দেখানো হতে পারে মেয়রের গাফিলতি। অথচ ত্রিফলা আলো কেলেঙ্কারিতে শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে মেয়রের ভূমিকা। কারণ তিনি প্রথম থেকেই আলোর বরাতে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন। বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে এবং অর্থ দফতরের অনুমতি না নিয়ে, কী করে আলোর বরাতের স্পট কোটেশন করা হল, ডিজি লাইটের কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন পুর কমিশনার। এই মর্মে গৌতম পট্টনায়েকের কাছে জবাব তলব করেন তিনি। তখন কিন্তু মেয়রই পুর কমিশনারের সেই দাবি খারিজ করে দেন। এমনকি মেয়র পারিষদদের বৈঠকে বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব রাখেন তিনি। কিন্তু বেশ কয়েকজন মেয়র পারিষদের আপত্তিতে তা আটকে যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, কোনও পথ না থাকায় পুর কমিশনারের চাপে পড়ে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন মেয়র। কিন্তু পুরসভা  থেকে ভায়া মহাকরণ যে রিপোর্ট রাজভবনে যাবে, তাতে মেয়রের ভূমিকা কী দেখানো হয়, এখন সেটাই দেখার।

.