গাঢ় রঙ, ফিউশন ড্রেস, পুজো ২০১২
নতুনের সঙ্গে পুরনোর মেলবন্ধনই এবার পুজোর ফ্যাশন ট্রেন্ড।
দেখতে দেখতে এসে গেল আরও একটা পুজো। জোরকদমে শুরু হয়ে গেছে পুজোর শপিংও। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই সেরে ফেলছেন কেনাকাটা। কিন্তু কীভাবে পোষাক পরবেন ঠিক করতেই হিমসিম খাচ্ছেন। কেউ আবার কাজের চাপে এখনও কিছুই কিনে উঠতে না পারায় গাল ফুলিয়ে বসে আছেন। কুছ পরোয়া নেহি। কারণ নতুনের সঙ্গে পুরনোর মেলবন্ধনই এবার পুজোর ফ্যাশন ট্রেন্ড। প্রমা মিত্রকে জানালেন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত।
এবারে পুজোয় নতুন কী আনছ?
এবারে পুজোয় মূলত ফিউশন ওয়্যারের ফ্যাশন অন দ্য টপ অফ দ্য লিস্ট থাকবে। যেটা খুব ভালো চলছে সেটা হল আনারকলি ড্রেস। এটা অনেকটা আনারকলি কুর্তার মতো। ফ্লোর টাচিং গাউন। চাইলে কেউ লেগিংস দিয়েও পরতে পারেন আবার লেগিংস ছাড়া ড্রেস হিসেবেও পরা যায়। কলকাতার আবহাওয়ায় খুব কমফর্টেবল। পরতেও সুবিধা। এছাড়া আর যেটা পুজোয় খুব ভালো চলবে সেটা হল স্টিচড প্লিট শাড়ি। এটাতে আঁচল এবং কুঁচিতে প্লিট করাই থাকে। আলাদা করে আর করতে হয় না। পরতে খুব সুবিধা। জাস্ট স্কার্টের মতো পরে নিয়ে আঁচল দিয়ে নিলেই হয়ে যায়। যে কোনও ধরণের চোলির সঙ্গে এটাকে টিম আপ করা যায়।
এবার পুজোয় কালার শেডস এবং ফ্যাব্রিকস কী কী ফ্যাশনে রয়েছ?
পুজো মানেই ব্রাইট কালারস। তবে মূলত ভাইব্যান্ট কালারগুলো এবার খুব ভালো চলবে। পার্পল ইজ জাস্ট দ্য কালার অফ দ্য সিজন। ট্যাঞ্জারিন অরেঞ্জ, ব্লাড রেড, গ্রিন, ক্যানারি ইয়েলো এগুলোর সঙ্গে একটু অফ শেডস যেমন আইভরি, বেজ, গ্রে গ্রিন ভালো চলবে। কমফর্টেবল বাট ফ্লোই ফ্যাব্রিকসের উপরই এখন সবাই জোর দিচ্ছেন। সিল্ক মসলিন খুব চলছে। এটা যে কোনও সময় পরা যায়। এছাড়া জর্জেটও ভালো চলছে।
পুজোর সকাল এবং বিকেলেক মধ্যে স্টাইল ট্রানজিশন কীভাবে হবে?
সকালের সাজ খুব ক্যাজুয়াল হবে। অল্পবয়সীরা ড্রেস বা পাতিয়ালার সঙ্গে কটন বা সিল্ক কুর্তি পরতে পারেন। সন্ধেবেলা একটু জমকালো পোষাক যেমন আনারকলি ড্রেস, শাড়ি বা ককটেল ড্রেস পরা যেতে পারে। সকালের পোষাক একটু হালকা শেডসে হলে ভালো হয়। সন্ধেবেলা শেড একটু ডার্ক থাকবে। সকালবেলা এমব্রয়ডারি একটু হালকা রেখে প্রিন্টের ওপর জোর দেওয়া উচিত। সন্ধেবেলা একটু ভারী এমব্রয়ডারি যেরকম নেক লাইন বা স্লিভসে সুন্দর কাজ, বা এমব্রয়ডারিড পাড় দেওয়া শাড়ি খুব ভালো লাগবে।
এবারের পুজোয় কোন কোন স্টাইলগুলো একেবারেই আউট অফ ট্রেন্ড?
খুব শকিং কালার যেরকম ফুশিয়া পিঙ্ক বা ফিরোজি ব্লু এই ধরণের রঙগুলো এড়িয়ে গেলে ভালো হয়। খুব ওভারডান ড্রেস সেরকম ভারী ফ্যাব্রিকস, বড় বড় প্রিন্ট বা ভারী এমব্রয়ডারি না পরলেই ভালো হয়। জুয়েলারি সিঙ্গল পেয়ার পরাই ভালো। যেমন গলায় ভারী কিছু পরলে কান খালি রাখা উচিত্। আবার কানে যদি বড়, ঝোলা কিছু পরা হয় সেক্ষেত্রে গলা খালি রাখলে ভালো লাগবে। তবে যেটাই পরুন না কেন সেটা যেন একটু বড় সাইজের হয়। আর পোষাকের সঙ্গে সঠিক জুতো খুব ইমপর্ট্যান্ট। খুব উঁচু হিলস বা স্টিলেটো টাইপের জুতো না পরে একটু কমফর্টেবল ফ্ল্যাট বা ছোট হিলস পুজোর সময় ঘোরাঘুরির জন্য অনেক বেশি সুবিধাজনক।
তোমার পুজো কালেকশন কখন থেকে এবং কোথায় পাওয়া যাবে?
আমার পুজো কালেকশন এখন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতায় শরত্ বোস রোডে আমার নিজের স্টুডিওতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও অলওভার ইন্ডিয়া বিভিন্ন ডিজাইনারস স্টোরসে পাওয়া যাচ্ছে।
পাঠকদের জন্য তোমার পুজোর টিপস?
এখন সবসময় পুজোয় ৫ দিনের জন্য পাঁচরকম নতুন কিছু কেনার সময় হয়ে ওঠে না অনেকেরই। আমি বলব নতুন কিছুর সঙ্গে ওয়ার্ডরোবে থাকা পুরোনো কিছু দিয়ে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে নতুন ধরণের কিছু স্টাইল করতে। শাড়ি পরলে ব্লাউজ খুব ইমপর্ট্যান্ট। যে কোনও শাড়ির সঙ্গে সুন্দরভাবে বানানো চোলিব্যাক, হল্টার নেক বা থ্রি কোয়াটার্স স্টাইলিশ ব্লাউজ পরাটাই এখন ফ্যাশন। পোষাক বেশি জাঁকজমক না পরে বেশি অ্যাক্সেসরিজ যেরকম কনট্রাস্ট জাঙ্ক জুয়েলারি, জুতো বা ব্যাগ দিয়ে সেটাকে কম্বাইন করলে অনেক বেশি স্টাইলিশ হবে।
তোমার পুজের প্ল্যান কী?
সারা বছর এতো ব্যস্ত থাকি যে পুজোয় বাড়িতে থেকে রিল্যাক্স করতেই ভালো লাগে। কিছু কিছু পুজো উদ্ধোধন করতে যেতে হয়। সেগুলো দেখাও হয়ে যায়। একদিন আমার বাড়ির কাছে বালিগঞ্জ কালচারাল পুজোমন্ডপে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।