‘সৌজন্যে’ করোনা! রাসায়নিক ফেনায় উপচে পড়া বেঙ্গালুরুর নদী-নালার আমূল পরিবর্তন!
পরিবেশবিদ লিও সালদানহ জানাচ্ছেন, কল-কারখানার বর্জ্য উত্পন্ন না হওয়ার দরুন পুনর্জন্ম হয়েছে বেঙ্গালুরুর নদী-নালার
নিজস্ব প্রতিবেদন: বৃষভবতী নদী, বেলান্দুর কিংবা ভার্তুর হ্রদ বেঙ্গালুরুর হৃদস্পন্দন। কয়েক দিন আগে পর্যন্ত তাদের বুক দিয়ে অবিরাম যে বিষ প্রবাহিত হচ্ছিল, তাতে কখনওই মনে হতো না বেঙ্গালুরুর কোনও প্রাণ আছে। নদীর বুকে উথলে পড়ত রাসায়নিক ফেনা। সে ফেনা উপচে রাস্তাতেও বয়ে যেত। এই এপ্রিল নাগাদ, বৃষ্টির জেরে রাসয়নিক ফেনা বইত বেঙ্গালুরুর শিরা-উপশিরায়। আকাশে-বাতাসেও উড়ে বেড়াতো জমাট ফেনা। আর তাতে অভ্যস্ত ছিল স্থানীয় বাসিন্দারাও।
পরিবর্তন দেখা গেল মাস খানেক আগে থেকে। ভারতে লকডাউন ঘোষণার পরপরই স্তব্ধ হয়ে যায় কল-কারখানা। জনজীবন কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়ে। যার ফলে বেলান্দুর বা ভার্তুর হ্রদের এক আমুল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। পরিবেশকর্মী টিভি সুরভির কথায়, ‘লকডাউনের পর বৃষভবতী নদীর দূষণ ৯০ শতাংশ কমে গিয়েছে।’ স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে বেঙ্গালুরুর অন্যান্য ছোটাখাটো জলাশয়ও।
Good to see water steadily filling up Bettahalasur and Tarahunse lakes in Jala in my constituency. This is the treated water from Bengaluru filling up these lakes.#Byatarayanapura pic.twitter.com/MJoYkVHccM
— Krishna Byre Gowda (@krishnabgowda) March 29, 2020
পরিবেশবিদ লিও সালদানহ জানাচ্ছেন, কল-কারখানার বর্জ্য উত্পন্ন না হওয়ার দরুন পুনর্জন্ম হয়েছে বেঙ্গালুরুর নদী-নালার। গোটা বিশ্ব যখন করোনায় কাবু, তখন পরিবেশের এক আমুল পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সব রকমের দূষণ কমেছে বলে মত পরিবেশবিদদের। রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া কম থাকায় শব্দ-বায়ু সব দূষণই অধিকমাত্রায় হ্রাস হয়েছে।
Bengaluru water bodies look cleaner , 3 weaks into pic.twitter.com/D29cBrRbfY
— Nehal Shaikh (@NehalShaikh_02) April 15, 2020
আরও পড়ুন- প্রকাশ্যে থুতু ফেলা এখন অপরাধ; দিতে হবে জরিমানা, জানিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
বেলান্দুর হ্রদ বেঙ্গালুরুর সবচেয়ে বড় জলাশয়। আবাসন এবং শিল্পাঞ্চলের বর্জ্য-আবর্জনায় বিষ হয়ে উঠেছিল বেলান্দুর হ্রদ। এপ্রিল-মে মাস থেকে বৃষ্টি শুরু হলেই রাসয়নিক ফেনা বয়ে যেত খাল দিয়ে। কখনও কখনও একতলা বাড়ি সমান ফেনা পঞ্জিভূত হয়ে থাকত। রাস্তায় উপচে পড়ত। তার মধ্য দিয়েই জনজীবন এগিয়ে চলছে। অ্যামোনিয়া, ফসফেট-সহ একাধিক রাসায়নিক যুক্ত এই ফেনায় শ্বাসকষ্ট, এলার্জি রোগের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য মানুষ একটা বড় সুযোগ পেয়েছে। করোনা নতুন করে যে ভিত তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে, তাকে রক্ষার দায়িত্ব আরও বেশি বেড়ে গেল মানুষের। সরকারের তরফে এবার আর কড়া পদক্ষেপ করা উচিত বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।