মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা ধরে রাখল গেরুয়া শিবির, হরিয়ানায় টলমল বিজেপির গদি
লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে দুটি রাজ্যেই খারাপ ফল বিজেপির।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রত্যাশামতো মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় ফল করতে পারল না বিজেপি। হরিয়ানা বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছতে পারল না গেরুয়া শিবির। মহারাষ্ট্রে গতবারের চেয়ে আসন কমলেও ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা। কিন্তু শিবসেনার বায়না সহ্য করতে হবে বিজেপিকে।
মহারাষ্ট্র
মরাঠাভূমে ২৮৮টি আসনে বিজেপি-শিবসেনা জোটের ঝুলিতে এখনও পর্যন্ত গিয়েছে ১৬৩টি আসন। বিজেপি এগিয়ে ৯৮টিতে। শরিক দল শিবসেনা এগিয়ে ৬০টি আসনে, ৪৪টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। এনসিপি এগিয়ে ৫৬ আসনে। পরিসংখ্যান বলছে, জোট সরকারের ক্ষমতায় আসতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু মহারাষ্ট্রে দুর্বল কংগ্রেস ও এনসিপি-র বিরুদ্ধে এহেন ফলের কথা ভাবেননি বিজেপি নেতারাও। সকলেই আশা করেছিলেন, ২০০ আসন পার করে যাবে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এখনও মরাঠা মানুষের সমর্থন রয়েছে শরদ পাওয়ারের কাছে। তবে আসন সংখ্যা কমায় শিবসেনার আবদার মানতে একপ্রকার বাধ্য বিজেপি।
শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে ৫০-৫০ ফরমুলায় লড়েছি। ফলপ্রকাশের পর আলোচনা হতে পারে। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকার গঠন করবে। সূত্রের খবর, শরদ পাওয়ারের এনসিপি ও কংগ্রেস সমর্থন দিতে পারে শিবসেনাকে। যদিও সরাসরি তা স্বীকার করেননি পাওয়ার। তিনি বলেছেন,''রায় বিজেপি বিরোধী জনাদেশ। মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শিবসেনার সঙ্গে আমাদের আদর্শের কোনও মিল নেই।''
হরিয়ানা
জাঠভূমে 'মিশন ৭৫'-এর লক্ষ্যে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফল বদলে গেল বিধানসভায়। ৬ মাসের মধ্যেই ধরাশায়ী কংগ্রেস রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল বিজেপিকে। সে রাজ্যে বিজেপি এগিয়ে ৩৯টি আসনে। ৩১টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় কিংমেকার হতে চলেছেন জেজেপি-র দুষ্মন্ত চৌটালা। গতবছর ডিসেম্বরে আইএনএলডি-র থেকে আলাদা হয়ে নতুন দল খুলেছিলেন। তার ১০ মাস পর তিনিই এখন কংগ্রেস-বিজেপির পরিত্রাতা হয়ে হাজির হয়েছেন। প্রথমবার লড়েই জেজেপি এগিয়ে ১০টি আসনে।
জেজেপি-র সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি-কংগ্রেস। প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং হুডা বার্তা দিয়েছেন, জনাদেশ বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়েছে। বিরোধীদের সম্মান দিয়ে জোট করতে রাজি কংগ্রেস। বিজেপি শরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে এসেছে।
জোট নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন দুষ্মন্ত চৌটালা। আপাতত জল মাপছেন তিনি। বিধায়ক ও দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন কিংমেকার। সূত্রের খবর, উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব চাইতে পারেন দুষ্মন্ত। কংগ্রেস ওই পদ দিতে রাজি।
লোকসভা ভোটের পর মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার ভোট বিজেপি নেতৃত্বের রাতের ঘুম নিশ্চিতভাবে কেড়ে নেবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ মতো জাতীয় বিষয় ভোটের বাজারে চলল না। গুরুত্ব পেল স্থানীয় সমস্যাই। কর্মসংস্থান, আর্থিক অনটন, মন্দার মতো বিষয়গুলি শুধুমাত্র ৩৭০ অনুচ্ছেদ বা পাকিস্তান দিয়ে চাপা দিতে পারল না বিজেপি।
আরও পড়ুন- সার্কিট হাউজে মুখ্যমন্ত্রী, পিছনের জঙ্গলে ৩ চিতাবাঘের 'টহলদারি'!