মনমোহন-গিলানি বৈঠকে উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত
সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের মাঝেই আজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ইউসুফ রাজা গিলানির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। গতকালই সম্মেলনে যোগ দিতে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছন তিনি। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির মধ্যে অবাধ বাণিজ্যের পথকে আরও প্রশস্ত করার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রতিস্পর্ধার দীর্ঘ টানাপোড়েন সরিয়ে সাহায্য এবং সহযোগিতার বার্তা। সার্ক সম্মেলেনর ফাঁকে নিজেদের মধ্যে বৈঠক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং ইউসুফ রাজা গিলানি যে বার্তা দিলেন তাকে এ ভাবেই দেখতে চাইছেন অনেকে। কারণ, আলোচনার পর সাংবাদিকদের সামনে এসে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে উষ্ণ করমর্দন করে গিলানি বলেন, তাঁর সঙ্গে মনমোহন সিংয়ের জলবণ্টন, সন্ত্রাস, কাশ্মীর, সিয়াচেন, বাণিজ্য-সহ অনেক বিষয়েই অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো ফলপ্রসূ এবং ঐতিহাসিক বৈঠকের আশাপ্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে দু'দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটানোর বার্তা দিয়েছেন মনমোহন সিং। অন্যদিকে, সার্ক সম্মেলনের মঞ্চকে ব্যবহার করেই পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রহমান মালিক এ বার মুম্বই সন্ত্রাসে দোষী আজমল কসাভের ফাঁসির দাবি তুললেন। তাঁর বক্তব্য, কসাভ একজন সন্ত্রাসবাদী। তার ফাঁসি হওয়াই উচিত। কসাভের ফাঁসির দাবি তুললেও জামাত-উদ-দাওয়া নেতা হাফিজ মহম্মদ সঈদ সম্পর্কে মালিকের স্পষ্ট বার্তা, ইসলামাবাদের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। ফলে এ নিয়ে কিছু করাও সম্ভব নয়। আসলে পাক-ভূখণ্ডে সক্রিয় সঈদ বা তাঁর মতো বড়ো মাপের জঙ্গি নেতাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে ব্যবস্থা নিতে অপারগ, সেটা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে স্পষ্ট। ইসলামাবাদ তা চায়ও না। এই অবস্থায় কসাভের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে মালিক আসলে পাকিস্তানে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলির প্রসঙ্গ যেমন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তেমনই ভারতের প্রতি সৌহার্দ্যের মৌখিক বার্তা দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উন্নতি ঘটাতে ইসলামাবাদ যে কতটা আন্তরিক, আন্তর্জাতিক মহলকে সে কথাও বোঝাতে চেয়েছেন মালিক। কিন্তু এ সবে আখেরে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান আন্তর্জাতিক মহল।