বিরোধিতা সত্ত্বেও অনুমোদিত হল খুচরো বিপণণে বিদেশি বিনিয়োগ
খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ঘিরে ক্রমশই তীব্র হচ্ছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বামেদের পাশাপাশি কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে ইউপিএ জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক তৃণমূল কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের বৈঠকে মাল্টিব্র্যান্ড খুচরো বিপণণের ক্ষেত্রে ৫১ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উপস্থিতিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে বিনিযোগের যে মাত্রা ২৬ শতাংশ ছিল, বৃহষ্পতিবার বৈঠকের পর তা ৫১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এরপর ভারতে ওয়ালমার্ট, ক্যারফুর, টেস্কোর মতো বহুজাতিক খুচরো বিপণন সংস্থাগুলি দেশের তিপ্পান্নটি শহরে নিজেদের আউটলেট খুলতে পারবে। অ্যাডিডাস, গুচ্চি, হারমেস, এলভিএমএইচের মতো ব্র্যান্ডগুলি সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে ব্যবসা চালাতে পারবে ভারতে। সব মিলিয়ে এই খুচরো বাজারের অর্থমূল্য প্রায় সাড়ে ২৯ লক্ষ কোটি টাকা।
বামেদের পাশাপাশি কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে ইউপিএ জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এ নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই খুচরো ব্যবসায় ৫১ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
মাল্টি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি, সিঙ্গল ব্র্যান্ড রিটেলের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পরিমাণ বর্তমানের ৫১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার বিষয়টিও এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে। ২০০৬ সালে প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে সিঙ্গলব্র্যান্ড খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনোয়োগের ছাড়পত্র মেলার পর থেকেই মাল্টিব্র্যান্ড খুচরো ব্যবসায় ৫১ শতাংশ বিদেশি লগ্নির বিষয়টি ঘিরে তত্পরতা শুরু হয়।
মন্ত্রিসভার সচিব অজিত কুমার শেঠের নেতৃত্বাধীন প্যানেল ন্যূনতম ১০০ মিলিয়ন ডলার লগ্নি সহ কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে মান্টিব্র্যান্ডে ৫১ শতাংশ এফডিআই-এর সুপারিশ করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক বিতর্কের কারণে তা বাস্তবায়িত করা যায়নি।
বিরোধিদের অভিযোগ, খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রে বৃহত্ বিদেশি সংস্থাগুলি প্রবেশাধিকার পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ছোট দোকানদার এবং কৃষকরা। এতদিন এই যুক্তি এনেই বামেরা খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধিতা করে এসেছিল। তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে এদিন একই অভিযোগ শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর গলাতেও।