অর্থমন্ত্রীর কথামতো করের হিসাব সহজ তো হলই না, বরং জটিলতা গেল আরও বেড়ে!

নিজস্ব প্রতিবেদন: বাজেটে আয়করের হার কমিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে, জুড়ে দিয়েছেন শর্ত। কম হারে কর দিতে চাইলে, ছাড়তে হবে করমুক্ত সঞ্চয়ের মায়া। আর, করমুক্ত সঞ্চয়কে কাজে লাগাতে চাইলে, দিতে হবে বেশি হারে কর। কোনটা বাছবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না?

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

চার বছর পর বাজেটে আয়করের হারে পরিবর্তন হল।  ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করের হারে হাত দেয়নি সরকার। ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ে আগে কুড়ি শতাংশ হারে কর দিতে হতো। এখন ৫ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে, ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এখন ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। এবার, ১০ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২০ শতাংশ এবং সাড়ে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয়ে ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। ১৫ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে আগের মতোই করের হার ৩০ শতাংশ থাকছে।

৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা রিবেট বহাল রাখা হয়েছে। ফলে,  করযোগ্য আয় ৫ লাখের কম হলে রিবেটের সুযোগ থাকায় কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু, করযোগ্য আয় ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেলে আড়াই লাখের বেশি আয়ের ওপর কর দিতে হবে।  করের হার কমালেও শর্ত জুড়ে দিয়েছেন নির্মলা সীতারামন।

বাজেটে বলা হয়েছে, কেউ নতুন হারে কর দিতে চাইলে তিনি আর আগের মতো আয়কর আইনের নানা ধারায় করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা পাবেন না।  আর, করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা নিতে চাইলে তাঁকে পুরনো হারেই কর দিতে হবে।  করের ওপর ৪% সেস, দুটি ক্ষেত্রেই বহাল থাকছে। নতুন হারে কর দিতে চাইলে, আগে করমুক্ত সঞ্চয়ের সুযোগ ছিল, এমন ৭০টি ছাড়ের মায়া আপনাকে ত্যাগ করতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে, এলআইসি, পিপিএফে দেড় লক্ষ টাকা করমুক্ত সঞ্চয়। গৃহঋণের ওপর করমুক্ত সুদ। স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে করছাড়, ব্যাঙ্কে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত সুদ।

চাকরিজীবীরা প্রতি বছর দুটি করের হারের মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিতে পারবেন। কিন্তু, ব্যবসায়ীরা একবার যেটি বাছবেন, সেটি পরে আর পাল্টানোর সুযোগ পাবেন না। তবে, কোন রাস্তায় গেলে আপনার লাভ, এককথায় এ প্রশ্নের উত্তর নেই। সবটাই নির্ভর করবে আপনার আয় কত, সঞ্চয় কত, হোম লোন আছে কি নেই তার ওপর। অনেকেই তাই বলছেন, করের হিসাব অর্থমন্ত্রীর কথামতো সহজ তো হলই না, বরং জটিলতা গেল আরও বেড়ে।