Rivers Facing Drought: চোখ ফেরানো যায় না এত সুন্দর, এত বিশাল! অথচ বিশ্বের এমন সব নদী নীরবে শুকিয়ে যাচ্ছে...

অবস্থা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নদীগুলি ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক নদী আবার দৈর্ঘ্য-প্রস্থে সংকুচিত হয়ে এসেছে। প্রতিনিয়তই নদীর তলদেশ জলের উপর থেকেই দৃশ্যমান হচ্ছে।

| Aug 25, 2022, 17:25 PM IST

সৌমিত্র সেন: কম বৃষ্টি এবং টানা তাপপ্রবাহের জেরে খরা-পরিস্থিতি যে ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে উঠছে, সেটা অনেকদিন ধরেই কানাঘুযো শোনা যাচ্ছিল। এবার বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান করে মোটামুটি জানিয়েই দিলেন যে, অবস্থা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নদীগুলি ক্রমাগত শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক নদী আবার দৈর্ঘ্য-প্রস্থে সংকুচিত হয়ে এসেছে। প্রতিনিয়তই নদীর তলদেশ জলের উপর থেকেই দৃশ্যমান হচ্ছে। কিছু নদী এতই শুকিয়ে গিয়েছে যে, সেগুলি চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে!

দীর্ঘ দিনের জলবায়ু সংকট বিশ্বের আবহাওয়াকে বহু দিন ধরেই বিরূপ করে তুলেছে। এর ফলও বর্তাচ্ছে নদ-নদীর উপর আর এর পাশাপাশি এর উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের উপরও পড়ছে এর বিরূপ প্রভাব। বিশ্বের প্রত্যেক মানুষ কোনো না কোনোভাবে নদীর উপর নির্ভরশীল-- হতে পারে খাওয়ার জলের জন্য, কৃষিকাজের জন্য, জ্বালানি উৎপাদনের জন্য, পণ্য পরিবহণের জন্য। সেটা বিঘ্নিত হতেই দেশে দেশে সংকটে পড়েছে জনজীবন।

সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়া বিশ্বের এরকম ছ'টি নদীর স্যাটেলাইট থেকে ছবি তুলেছে একটি গণমাধ্যম সংস্থা। তারা সেটি প্রকাশও করেছে। একই নদীর আগের অবস্থা আর এখনকার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। যা দেখে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজন, শঙ্কিত হয়েছেন বিশ্ব জুড়ে পরিবেশপ্রমী নদীপ্রেমী মানুষ। 

1/6

কলোরাডো নদী

যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র দাবদাহ দেখা যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে খরার মতো পরিবেশ। আর সেই খরা-পরিস্থিতিতে কলোরাডো নদী আশঙ্কাজনকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি অঙ্গরাজ্য ও মেক্সিকোর প্রায় চার কোটি মানুষ পানীয়, কৃষি ও বিদ্যুতের জন্য এ নদীর জলের উপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি নদী অববাহিকাকে রক্ষা করতে সরকার বাধ্যতামূলক ভাবে জলের ব্যবহার কমানোর কথা বলেছে।

2/6

ইয়াংসি নদী

এশিয়ার অন্যতম নদী চিনের ইয়াংসি নদী। এটি খুব দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। ইয়াংসির উপনদীগুলি ইতিমধ্যেই শুকিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি চিন দেশব্যাপী খরা-সতর্কতা ঘোষণা করেছে। সেখানে এখন যে তাপপ্রবাহ চলছে তা ছ'দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেটাও এই নদী শুকিয়ে যাওয়ার একটা বড় কারণ। ইয়াংসি নদী শুকিয়ে যাওয়ায় এর আশপাশের অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। 

3/6

রাইন নদী

রাইন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তর সাগরে পড়েছে। জার্মানির এই নদী ইউরোপীয় অঞ্চলে পণ্য পরিবহণের এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু বর্তমানে এ পথে জাহাজ চালানো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। রাইন নদীর তলদেশ দেখা যাচ্ছে! ফলে পণ্য পরিবহণের প্রক্রিয়া অতি ধীর এখন। জার্মানির পশ্চিমে ফ্রাঙ্কফুর্টের কাউব। এখানে রাইনের জলের স্তর ৩২ সেন্টিমিটার নেমেছে! শিপিং কোম্পানিগুলি সাধারণত রাইন নদীর কোনো জায়গায় ৪০ সেন্টিমিটারের কম জলকেই চিন্তার কারণ বলে মনে করে।

4/6

পো নদী

পো নদীটির উৎপত্তিস্থল ইতালি। যা অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে গিয়ে পড়েছে।  লক্ষাধিক মানুষ জীবিকার জন্য পো নদীর উপর নির্ভরশীল। এই নদীর উপর কৃষিকাজ অনেকটাই নির্ভর করে। ইতালির প্রায় ৩০ শতাংশ খাদ্য পো নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় উৎপাদিত হয়। শীতে পর্বতের চূড়ায় এর জল জমে বরফ হয়ে যায় এবং বসন্তে ভারী বৃষ্টিপাতে এতে প্রবল স্রোত তৈরি হয়। এ নদীর কারণে এর আশপাশের এলাকা প্রায়ই প্লাবিত হয়। কিন্তু সেই চেনা নদীর রূপ এখন পাল্টে গেছে। ইতালির উত্তরাঞ্চলে শীতকাল শুষ্ক ছিল। সে কারণে বরফ গলে পো নদীতে জল এসেছিল। ইতালির বসন্ত ও গ্রীষ্মও শুষ্ক ছিল। এ নদীর সংশ্লিষ্ট অঞ্চল গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক খরায় আক্রান্ত হয়েছে। আর তার জেরে পো নদী এতটাই শুকিয়ে গিয়েছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা সম্প্রতি পো নদীর তলদেশ থেকে পাওয়া গিয়েছে!

5/6

লয়ার নদী

নদীটি প্রায় ৬০০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত। নদীটি তার সমগ্র উপত্যকায় জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রেখেছে। নদীর কিছু অংশ ইতিমধ্যেই অগভীর। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে এবং এর উৎসের বরফ গলে যাওয়ায় এর জলস্তরে ও প্রবাহে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। কিছু অংশ বৃষ্টির অভাবে গরমে এতই শুকিয়ে গিয়েছে যে, মানুষ হেঁটে নদী পার হতে পারে!

6/6

দানিয়ুব

দানিয়ুব পশ্চিম ইউরোপের দীর্ঘতম নদী। একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শিপিং চ্যানেল। যা ১০টি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোমানিয়া, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়ায় শ্রমিকেরা নদীটি ড্রেজিং করছেন, যাতে পণ্যবাহী জাহাজ এখনও এতে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য নদীর তুলনায় এ নদীর অবস্থা খানিকটা ভালো। নদীর জল কমে যাওয়ায় পর্যটকবাহী কিছু জাহাজ হাঙ্গেরিতে পৌঁছতে পারছে না।