টু-স্টার, বাংলা বক্সিংয়ে নতুন তারা দেবের ট্রেনার
দীর্ঘ অধ্যবসায় ও চর্চার পর এবার সাফল্য এল। অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত মহম্মদ আলি কামারের পর বাংলা থেকে টু-স্টার কোচের সংশাপত্র অর্জন করে নিলেন এই বাঙালি যুবক।
সৌরভ পাল
বক্সিং বিশ্বে বাংলার নাম উজ্জ্বল করল বাঙালি যুবক। আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন প্রদত্ত টু-স্টার কোচের শিরোপা অর্জন করে নিল বেলঘরিয়ার সৌরভ গুহ।
(বক্সার মেরি কমের সঙ্গে সৌরভ)
সৌরভের বাবা একজন প্রাক্তন বায়ু সেনা কর্মী। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া থেকেও। মূলত বাবার প্রেরণাতেই বক্সিংয়ে আগ্রহ বাড়ে সৌরভের। বাড়িতে মা ও বোনও সৌরভের বক্সার হওয়ার স্বপ্নে ইন্ধন জুগিয়েছে। যার ফলস্বরূপ দীর্ঘ অধ্যবসায় ও চর্চার পর এবার সাফল্য এল। অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত মহম্মদ আলি কামারের পর বাংলা থেকে টু-স্টার কোচের সংশাপত্র অর্জন করে নিলেন এই বাঙালি যুবক।
ন্যাশনাল ইনস্টিউট অব স্পোর্টস (এনআইএস) থেকে ডিপ্লোমা করেছেন আগেই। এরপর প্রতিভা থাকলেও তা প্রকাশ করার সুযোগ সেভাবে পাননি তিনি। আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন ভারতকে ব্যান করায় দীর্ঘ চার বছর সেভাবে জাতীয় স্তরে কোনও প্রতিযোগিতাই হয়নি। যার খেসারত দিতে হয়েছে সৌরভকে। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। ২০১৭-তে রোহতকে ওয়ান স্টার পাওয়া এই বক্সার অনবরত নিজের প্যাশনকে তাড়া করে বেরিয়েছেন। যার ফল মিলল এই বছরে এসে। টু-স্টার কোচ হওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বেলঘরিয়ার সৌরভ গুহ।
কলকাতা, সিকিমে কোচিং করানো এই বাঙালি বক্সার এখন কর্ণাটকে। কলকাতা থেকে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা বাঙালি বক্সার আক্ষেপ করছেন, বাংলায় যদি ভাল পরিকাঠামো থাকত তাহলে আজ হয়ত বাড়ি থেকে এত দূরে থাকত হত না তাঁকে। বাইরের রাজ্যগুলোতে যে পরিকাঠামো রয়েছে তার সিঁকিভাগও নেই বাংলায়। আর সেকারণেই বাংলা বক্সিংয়ে পিছিয়ে। একই কথা মহম্মদ আলি কামারেরও।
(সৌরভের ওয়ান স্টার কোচিংয়ের সংশাপত্র)
কমনওয়েলথ (২০০২) গেমসে সোনা জয়ী বক্সার আলি কামার সৌরভের এই কৃতিত্বের কথা জানার পর বলছেন, “টু-স্টার পাওয়া অবশ্যই কৃতিত্বের বিষয়। তবে এ নিয়ে বিশেষ মাতামাতি করারও কিছু নেই”। তিনি এখন দিল্লিতে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে ব্যস্ত। সেখান থেকেই ফোনালাপে একটা প্রশ্ন তুলে রাখলেন এই বক্সিং কোচ। মহম্মদ আলি কামারের প্রশ্ন, কেন এনআইএস থেকে এখন আর কেউ ডিপ্লোমা করছে না?
(চ্যাম্প ছবির জন্য অভিনেতা চিরঞ্জিত্-কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সৌরভ)
উল্লেখ্য, বক্সিং কোচ ছাড়াও সৌরভের নামের পাশে রয়েছে আরও একটি তকমা। চ্যাম্প-এ দেবকে ট্রেনিং করিয়েছিলেন ২৮ বছরের এই বাঙালি যুবক। সেই সুবাদে বক্সিং কোরিওগ্রাফারের পরিচয়ও রয়েছে তাঁর।