রেশনে ২টাকা কিলো চালে দুর্নীতি রোধে চাপ মোদীর, তড়িঘড়ি পদক্ষেপ রাজ্যের
বণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই ই-পস ব্যবস্থা চালু করেছে কেন্দ্র।
মৌমিতা চক্রবর্তী
কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে অবশেষে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে রাজ্য। আগামী জুলাই মাস থেকেই রাজ্যের সমস্ত রেশন দোকানে চালু হতে চলেছে ই-পস সিস্টেম। অর্থাত্ ডিজিটাল কার্ড বৈদ্যুতিনযন্ত্রে সোয়াইপ করলেই মিলবে রেশন।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণে প্রথম থেকে আপত্তি তুলে আসছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, রেশনের মতো অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ অনুচিত। সিদ্ধান্ত মানবেন না। আর খোদ মুখ্যমন্ত্রী গররাজি থাকায় আধার-রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণ রূপায়িত হয়নি বাংলায়। কিন্তু এবার সেই ব্যবস্থা চালু করতে কার্যত বাধ্য হল রাজ্য সরকার। সময়সীমা আগেই ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছিল। আর সেই সময় বাড়াতে রাজি নয় কেন্দ্র। দিন কয়েক আগে বৈঠকে কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সময়সীমা বাড়ায়নি। কিন্তু রাজ্যকে সময় দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার আর সম্ভব নয়। আর সময়সীমার মধ্যে না হলে মিলবে না ভর্তুকি।
কেন্দ্রের চাপেই রেশন দোকানে ডিজিটাল কার্ড যাচাই করতে ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেলস অর্থাত্ ই-পস যন্ত্র বসানোর জন্য উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। সারা বাংলায় ২০ হাজার ২৮৮টি দোকানে বসবে ই-পস যন্ত্র। পাইলট প্রজেক্টে ৩৬৬ দোকানে বসানো হয়েছিল ই-পস, সেখানে সাফল্য মেলার পর রাজ্য জুড়ে আসছে ই-পস সিস্টেম। যদিও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কেন্দ্রীয় চাপের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন।
কেন এমন পদক্ষেপ?
বণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই ই-পস ব্যবস্থা চালু করেছে কেন্দ্র। এর সঙ্গে বেশ কিছু সুবিধা পাবেন গ্রাহকরাও। ই-পস সিস্টেম চালু হলে রেশন গ্রাহকদের ডিজিটাল কার্ড সোয়াইপ করতে হবে। ফলে কোন রেশন গ্রাহক পণ্য তুলছেন সেই সংক্রান্ত তথ্য জমা পড়বে খাদ্য দফতরে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ই-পস যন্ত্রে রেশন কার্ডের সঙ্গে গ্রাহকদের আধার নম্বর সংযুক্ত থাকতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়েও ভর্তুকি ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে রেশন ব্যবস্থা বিশাল দুর্নীতি রোখা যাবে। রেশন মালিকরা জোড়াতাপ্পি দেওয়া হিসেব দিতে পারবেন না। আধার সংযুক্ত থাকায় সব তথ্য জমা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। ভারত সরকারের রাজকোষে সাশ্রয় হবে। বাঁচবে প্রচুর অর্থ।
অনেকেই মনে করছেন, এর পরের ধাপে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টেই সরাসরি পড়বে রেশনের ভর্তুকির টাকা। তার রাজনৈতিক লাভ পাবে কেন্দ্রীয় সরকার। ২ কিলো চালে কেন্দ্র যে ভর্তুকি দেয়, সেটা মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন- মমতার প্ররোচনায় হিংসা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে হাটগাছির রিপোর্ট দিলেন মুকুল