তিন শর্তে দাড়িভিট কাণ্ডে জামিন মঞ্জুর ধৃত ৮ গ্রামবাসীর

শিক্ষক নিয়োগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২১ সেপ্টেম্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল।

Updated By: Nov 13, 2018, 05:41 PM IST
তিন শর্তে দাড়িভিট কাণ্ডে জামিন মঞ্জুর ধৃত ৮ গ্রামবাসীর

নিজস্ব প্রতিবেদন : গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, ধৃত ৮ গ্রামবাসীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। ১০ নভেম্বর স্কুল খোলার দিন ধৃত গ্রামবাসীদের মুক্তির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন ইসলামপুর মহকুমাশাসক। অবশেষে মঙ্গলবার শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি  পেলেন দাড়িভিট কাণ্ডে ধৃত ৮ গ্রামবাসী। এদিন ধৃত গ্রামবাসীদের মুক্তির নির্দেশ দেন ইসলামপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ কামালউদ্দিন। তবে ধৃতদের বাড়ির দলিল ও ১০ হাজার টাকা করে আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সপ্তাহে একদিন করে ইসলামপুর থানায় হাজিরার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২১ সেপ্টেম্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। পড়ুয়া-পুলিস সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার নামে এক প্রাক্তন ছাত্রের। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাপস বর্মন নামে আরও এক প্রাক্তনীর। এই ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। নিহত ছাত্রদের পরিবারের দাবি করে, পুলিসের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন উত্তর দিনাজপুর পুলিস সুপার। পুলিসের গুলিতে ছাত্রদের মৃত্যু হয়নি বলে ইটালিতে দাঁড়িয়ে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

যদিও সেই দাবি কোনওভাবেই মানেনি নিহত ২ ছাত্রের পরিবার। দাড়িভিট হাইস্কুলকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী তরজায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। শেষ পর্যন্ত দাড়িভিট কাণ্ডে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ২ নিহত ছাত্রের পরিবার। সন্তানদের মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তারা। পাশাপাশি, হাইকোর্টে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানায় ২ পরিবার। নিহত ছাত্রদের বাবা, মায়ের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে সোমবারই রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ২ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ২১ সেপ্টেম্বর ছাত্র-পুলিস সংঘর্ষের পর থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল দাড়িভিট হাইস্কুল। তারপর কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার স্কুল খোলার পদক্ষেপ নিলেও, সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। অবশেষে প্রবল টানাপোড়েনের পর প্রায় ২ মাসের মাথায় ১০ নভেম্বর, শনিবার খোলে দাড়িভিট হাইস্কুল। তবে, সেদিনও স্কুল খোলা নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় নিহত ছাত্রদের পরিবার ও গ্রামবাসী।

আরও পড়ুন, দেওরের সঙ্গে পরকীয়া বৌদির! শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে দেখে ফেলে স্ত্রী, তারপর...

প্রধান শিক্ষক ও সহ প্রধান শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে স্কুল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। একইসঙ্গে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে ধৃত ৮ গ্রামবাসীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি, দুই ছাত্রের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতেও অনড় ছিলেন তাঁরা। এই নিয়ে শনিবার সকালে নতুন করে ফের উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে। শেষপর্যন্ত ইসলামপুর মহকুমা শাসকের আশ্বাসে স্কুল খোলায় রাজি হন আন্দোলনকারী গ্রামবাসীরা। অবশেষে গতকাল সোমবার থেকে ফের শুরু হয় পঠনপাঠন।

.