Malda Labour Death: উচ্চ মাধ্যমিকে ৪১০, মিজোরামেই শেষ সাহিনের নার্সিং পড়ার স্বপ্ন
Malda Labour Death: সাহিনের ইচ্ছে ছিল ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে নার্সিং ট্রেনিং করবে। তার জন্য মোটা টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা রোজগার করার জন্যই কলেজে ভর্তি না হয়ে শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়ার চৌদুয়ার গ্রামের বাসিন্দা ফটিক
রণজয় সিংহ: মিজোরামে কাজ করতে গিয়েই সব শেষ। মিজোরামে ব্রিজ দুর্ঘটনায় মালদহের যেসব শ্রমিকরা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে রতুয়ার চৌদুয়ার গ্রামের সাহিন আখতার। ঘরে অভাব তো ছিলই, ভিনরাজ্য তার কাজে যাওয়ার কারণ একটু অন্যরকম। উচ্চমাধ্য়মিকে ৪১০ নম্বর পাওয়া সাহিনের স্বপ্ন ছিল টাকা আয় করে বেঙ্গালুরুতে নার্সিং পড়তে যাওয়ার। সেই স্বপ্ন চুরমার করে দিল মিজোরামের রেল ব্রিজ। শুক্রবার সাহিনের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন- চাঁদের মাটিতে অবতরণ করল রোভার প্রজ্ঞান, দেখুন ল্যান্ডারের তোলা সেই ভিডিয়ো
অনেক স্বপ্ন নিয়েই বাবার সঙ্গে মিজোরাম পাড়ি দিয়েছিল সাহিন। সেই স্বপ্ন আর বাস্তব হল না। মিজেরামে নির্মীয়মান রেল ব্রিজ ভেঙে মৃত্য হল তার। তবে দূর্ঘটনার কবলে পড়লেও বেঁচে যান বাবা ফটিক। তিনি বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র সাহিন। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই কাজকর্ম করে। ১৮ বছর পূর্ণ হতেই ভিন রাজ্যের শ্রমিকের কাজে পাড়ি দেয় বাবার সঙ্গে। শ্রমিকের কাজ করেই উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফল করে। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪১০ নম্বর পেয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে সাহিন আখতার।
সাহিনের ইচ্ছে ছিল ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে নার্সিং ট্রেনিং করবে। তার জন্য মোটা টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা রোজগার করার জন্যই কলেজে ভর্তি না হয়ে শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়ার চৌদুয়ার গ্রামের বাসিন্দা ফটিক। পেশায় তিনি পরিযায়ী শ্রমিক। পরিবারে রয়েছে স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে সাহিন আখতার। অভাবী সংসারে পড়াশোনার পাশাপাশি সাহিনও ভিনরাজ্যে পাড়ি দেয় শ্রমিকের কাজে। পরিবারের পক্ষ থেকে গত তিনমাস আগে তার বিয়েও দেওয়া হয়। নববধূকে বাড়িতে রেখে স্বপ্ন পূরণ করতে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে পাড়ি দিয়েছিল। সেখানে কিছুদিন কাজ করেই মোটা টাকা জমিয়ে সে টাকায় নার্সিং ট্রেনিং করতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তার। মিজোরামে রেল ব্রিজে কাজ করার সময় নির্মীয়মান ব্রিজের একাংশ ভেঙে দুর্ঘটনাস্থলের মৃত্যু হল তার।
সাহিনের মৃত্যুতে গোটা পরিবারের স্বপ্নও শেষ। পরিবারের সকলেই চেয়েছিল মেধাবী সাহিন ভবিষ্যতে কিছু করতে পারবে। তার মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছাতেই শোকাহত গোটা এলাকা। এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত ছিল সে। তার এমন অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না পাড়া-প্রতিবেশীরাও। বাড়িতে সদ্য বিবাহিত স্ত্রী। তার ভবিষ্যত বা কী হবে?
মৃত সাহিনের মা বলেন, ছেলে পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। ফার্স্ট হতো। টাকা পয়সার অভাব ছিল। বলল, বাইরে কাজে যাব। ও বলেছিল, ওখান থেকে টাকা জোগাড় করে এনে বেঙ্গালুরুতে ভর্তি হব। নার্সিংয়ের কোর্স করব। ওই কোর্সটা করলে চাকরি হবে। সেই আশা আর পূর্ণ হল না। আগস্ট মাসের ২ তারিখে কাজে গিয়েছিল। আগেও ২ বার গিয়েছিল। তাই খুব বেশি চিন্তা করিনি। মাধ্যমিক দিয়েও গিয়েছিল। নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই চালাত। এবছর মে মাসের ১০ তারিখে ছেলের বিয়ে দিই। বাডির সেই বড় ছেলেটাই চলে গেল। আমার আর কিছু রইল না। সরকার যদি আমার পাশে দাঁড়ায় তাহলে ভালো হয়।