বিয়ের দু মাসেই রহস্যমৃত্যু নববধূর! তীব্র চাঞ্চল্য এলাকায়
শরিয়ত মতে বছর খানেক আগে বিয়ে করা মুস্তরি খাতুনকে স্বামী মুতাহার আলির তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন। অবশেষে দুই মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে ও রেজিস্ট্রি হয়। এরপর শ্বশুরবাড়িতে সংসার শুরু করে মুস্তরি।
রণজয় সিংহ: বিয়ের দু মাস পরই নববধূর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। আত্মহত্যা না খুন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে মৃতের পরিবারের অভিযোগ পণ না দেওয়ায় শ্বাসরোধ করে খুন করেছে নববধূর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। হরিশ্চন্দ্রপুরের পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মৃতার নাম মুস্তরি খাতুন (২৩)।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিমুল আলির মেয়ে মুস্তরি খাতুনের সঙ্গে তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাড়ো গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন আহমেদের ছোট ছেলে মুতাহার আলির সাথে বিয়ে হয়। শরিয়ত মতে বছর খানেক আগে বিয়ে করা মুস্তরি খাতুনকে স্বামী মুতাহার আলির তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন।এই নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি হয়। তার মীমাংসার জন্য বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসে। অবশেষে দুই মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে ও রেজিস্ট্রি হয়। এরপর শ্বশুরবাড়িতে সংসার শুরু করে মুস্তরি।
ঈদের দুই দিন আগে বাপের বাড়ি যায় মুস্তরি। গত সোমবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসে সে। আজ বুধবার সকালে ফোন মারফত মুস্তরির মৃত্যুর খবর শুনতে পান পরিবারের লোকেরা। মৃতার আত্মীয় শেখ আসমামুল হক অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। শরিয়ত মতে বিয়ের পর পণ দিতে না পারায় মুস্তরিকে বাপের বাড়িতে রেখে চলে যায় স্বামী মুতাহার আলি। পিতৃহারা মুস্তারির কাছে স্বামী মুতাহার আলি পণের দাবী করতে থাকে। কিন্তু গরীব পরিবার হওয়ায় সম্বলহীন অসহায় মায়ের কাছ থেকে পণের টাকা নিতে পারে নি সে। শুরু হয় অশান্তি দুই পরিবারে। এই অশান্তি রুখতে গ্রামে সালিশি বসে। এরপর দুইমাস আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে ও রেজিস্ট্রি হয়। শ্বশুরবাড়ি যায় মুস্তারি। কিন্তু পণ না পাওয়ায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা অত্যাচার শুরু করে বলে অভিযোগ।
অত্যাচারে সীমা সহ্যের বাইরে হওয়ার পর বাধ্য হয়ে ঈদের আগে কয়েকদিন আগে বাপের বাড়ি ফিরে আসে মুস্তারি। গত সোমবার হঠাৎই শ্বশুড়বাড়ি চলে যায়। সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীদের কাছ থেকে মেয়ের মৃত্যু খবর জানতে পারেন। ছুটে এসে দেখেন, মেয়ের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। টাকার দাবিতে ওরা মেয়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে অভিযোগ। ওদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের বক্তব্য, খুন নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই জানা যাবে। তবে ঘটনার পর থেকেই স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন, Ghatal: অষ্টমঙ্গলায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে বর হারাল বউ! স্বামী শেষে...