রেলে চাকরি দেওয়ার নামে বিপুল টাকা প্রতারণা, বিরাট এক চক্রকে ধরল বর্ধমান পুলিস

মঙ্গলবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়

Updated By: Sep 29, 2020, 10:15 PM IST
রেলে চাকরি দেওয়ার নামে বিপুল টাকা প্রতারণা, বিরাট এক চক্রকে ধরল বর্ধমান পুলিস
প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন: রেলে চাকরি দেওয়ার নামে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি চক্রের হদিশ পেল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার পুলিস। ওই চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন।

ধৃতরা হল পূর্ণিমা দে, গোবিন্দ দে, ভৈরব বন্দ্যোপাধ্যায়, রতন রায় ও মতিলাল কোনার। আউশগ্রাম থানার গুসকরা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দোনাইপুরে পূর্ণিমা ও গোবিন্দর বাড়ি। তারা স্বামী-স্ত্রী। গুসকরার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রাইতলায় ভৈরবের বাড়ি। সেখানকারই ৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশন রোড এলাকায় মতিলালের বাড়ি। মঙ্গলকোট থানার কেশবপুরে রতনের বাড়ি। ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতানোর নেওয়ার কথা ধৃতরা কবুল করেছে বলে পুলিসের দাবি।

চাকরিপ্রার্থীদের শিয়ালদহ, ফেয়ারলি প্লেস ও লিলুয়ায় নিয়ে যায় প্রতারকরা। চক্রের সঙ্গে রেলের কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। কিছুদিন আগে বর্ধমান জিআরপি রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানার এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের সঙ্গে কুলটির যুবকের সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে ভুয়ো নিয়োগপত্র, জয়েনিং লেটার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। এছাড়াও ধৃতদের ৪টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-মেডিক্যালে কোভিড ডাক্তার-নার্সদের আড়াই মাসের খাবারের বিল দেড় কোটি! 

মঙ্গলবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে এবং হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পূর্ণিমা ও ভৈরবকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিস। দু’জনকে ৪ দিন পুলিসি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ৩ অক্টোবর ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিস জানিয়েছে, কিছুদিন আগে গুসকরা স্কুল মোড়ের বাসিন্দা সব্যসাচী মণ্ডলের সঙ্গে পূর্ণিমা ও গোবিন্দর পরিচয় হয়। পূর্ণিমা সব্যসাচীকে রেলে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। চাকরির জন্য টাকা লাগবে বলে জানায় সে। তার কথায় বিশ্বাস করে কয়েক দফায় ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দেন সব্যসাচী। টাকা মেলার পর প্রতারকরা সব্যসাচীকে শিয়ালদহে ডিআরএমের অফিসের নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। তারপর তাঁকে রেলের সিল ছাপ দেওয়া একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। তার দিন চারেক পর রসিদ খান নামে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে নিয়োগপত্রটি জাল বলে জানায়। বিষয়টি পূর্ণিমা ও প্রশান্তকে জানান সব্যসাচী। দিন দু’য়েক পর তাঁকে হাওড়ায় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য যেতে বলা হয়। নির্দিষ্ট দিনে তিনি হাওড়ায় যান। কিন্তু, তিনি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন নি। ফেয়ারলি প্লেসে রেলের অফিসে গিয়ে নিয়োগপত্রটি জাল বলে জানতে পারেন তিনি।

আরও পড়ুন-করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ, ১ মাস ডাক্তার-নার্সদের পড়ে থাকতে হবে হাসপাতালেই!

বিষয়টি তিনি প্রতারকদের জানান। এরপর তাঁকে লিলুয়া ওয়ার্কশপে যেতে বলা হয়। সেখানে তাঁকে একটি খাতায় সই করিয়ে চাকরিতে জয়েনিং হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়। পরের দিনই গণেশ পাটওয়া নামে এক ব্যক্তি ফোন করে তাকে টাকা না দিলে চাকরি হবেনা বলে জানায়। বাধ্য হয়ে তিনি সব্যসাচী তাকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেন। তাঁকে ডাকযোগে ফের একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে পুলিস জেনেছে, চক্রটির জাল বহুদূর বিস্তৃত। এর সঙ্গে পানাগড় ও উত্তর ২৪ পরগণার কয়েকজন জড়িত রয়েছে।

.