Mathurapur: মথুরাপুরে বিরোধী প্রার্থী অপহরণে ফের ট্যুইস্ট! বাড়ি ফিরতেই বদলে গেল বয়ান
Mathurapur: সিপিএমের দাবি ছিল ওই চার জয়ী প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর তারা ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে জানায় তাদের অপহরণ করা হয়নি। তারও পরে তারা বলছে তাদের জোর করে বয়ান দেওয়ানো হয়েছে।
নকিবুদ্দিন গাজি: মথুরাপুরে ৪ বিরোধী প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গোপন ডেরা থেকে তাঁরা বয়ানও দিয়েছিলেন যে তারা ভালো আছেন। সেই বয়ান বদলে গেল বাড়ি ফেরার দুদিন পরেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ বিরোধী প্রার্থীকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এবার সেই কথাই উঠে এল ওই চার জনের মুখে।
আরও পড়ুন-কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টি, জলীয়বাষ্প বেশি থাকায় থাকবে অস্বস্তি
মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিজেপি ও সিপিএম সমর্থিত নির্দলের জয়ী প্রার্থীদের অপহরণ করা হয়েছে। এরপরই একটি ভিডিয়ো বার্তা ভাইরাল হয়। সেখানে বলা হয়ে ওইসব প্রার্থীরা নিজের ইচ্ছেয় গিয়েছেন। তাদের অপহরণ করা হয়নি। এরপর বিজেপি ও সিপিএমের পক্ষে অভিযোগ দায়ের হয়। তাতে নড়েচড়ে বসে পুলিস। অবশেষ তাদের উদ্ধার করে বাড়ি ফেরানো হয়। এখন ওইসব প্রার্থী বলছেন যা হয়েছে তা তাদের উপরে জোর খাটিয়ে করা হয়েছে।
এনিয়ে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি বাপি হালদার বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। সিপিএম, বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীরা কে প্রধান হবে, কে উপপ্রধান হবে তা নিয়ে গন্ডগোল হচ্ছে। তার মধ্যে তৃণমূল কখনও ঢোকেনি।
বিরোধী ওই চার প্রার্থীর দাবি, জোর করে তাদের কাছ থেকে মুচলেখা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভিডিয়ো বার্তা পাঠাতেও বাধ্য করা হয়। যদিও সিপিএমের দেওয়া ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি জি ২৪ ঘণ্টা। অপহৃতদের মধ্যে এক বিরোধী প্রার্থী একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, গত ২৫ জুলাই আমরা এগারো জন প্রার্থী কলকাতার এক গেস্ট হাউসে ছিলাম। ২৭ জুলাই রাতে খাওয়াদাওয়ার সময় চারটে গাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের গাড়িতে উঠতে বাধ্য করে। মেয়েদের গায়ে হাতও দেওয়া হয়। সেখান থেকে সাররাত আমাদের গড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আড়াইটার পর একটি নদী পার করিয়ে একটি গেস্টহাউসে তোলা হয়। সেখানে রাতটা থাকার পর সকাল আটটার পর একটি সাদা কাগজে ওদের মতো বয়ান লিখিয়ে আমাদের তাতে সই করতে বাধ্য করা হয়। আমরা চারজন সেখানে সই করছি। তারপর আমাদের বলা হল অন্য একটি জায়গায় যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে আমাদের একটি গাড়িতে চড়িয়ে নদী পার করে অন্য একটি ঘরে তোলা হয়। এরপর একটি সাদা কাগজে আমাদের নাম সই করিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে পুলিসও ছিল। এরপর ওদের বলা কথা আমাদের বলতে বাধ্য় করা হয়েছে। তা ভিডিয়ো করা হয়েছে। আমাদের ইচ্ছ মতো কিছু হয়নি। যা হয়েছে তা ওদের ইচ্ছে মতো হয়েছে। ওপর থেকে কী চাপ এসেছে জানি না। আজ সকাল পৌনে ছটা নাগাদ আমাদের বলা হল তোমরা বাড়ি যাও।
কার ছিলেন সেই হুমকিদাতাদের দলে? ওই ভিডিয়োতে ওই মহিলা প্রার্থী বলেন, কারা ছিল তাদের চিনি না। তবে বাপি হালদারকে ভালোভাবে চিনি। সবার নাম ভালোভাবে জানি না।
সিপিএমের দাবি ছিল ওই চার জয়ী প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর তারা ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে জানায় তাদের অপহরণ করা হয়নি। তারও পরে তারা বলছে তাদের জোর করে বয়ান দেওয়ানো হয়েছে। ওই ঘটনা নিয়ে সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আদালত প্রশাসনের চাপে তৃণমূল ওদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। বারবার বলা হচ্ছিল, অপহরণ করা হয়নি। ওরা স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছে। কাল রাতে ওদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বাধ্য হল। এই ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ হোক। যাদের গোপন ডেরায় রাখা হয়েছিল তারা কি প্রকাশ্যে সবকিছু বলতে পারবে? বেরিয়ে এসে আসল সত্যটা বলতে পেরেছে।