তিস্তা ইস্যুতে মোদীতেই আস্থা বাংলাদেশের

ইন্দো-বাংলা মিডিয়া ডায়ালগ (২০১৮) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তৃতায় হাসানুল হক ইনু তিস্তা জল বণ্টন ইস্যুর সঙ্গেই তুলে ধরেন সীমান্ত সমস্যার কথাও। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলা সীমান্ত সমস্যার কথা টেনে তিনি বলেন, "পাকিস্তানের থেকে বেশি সীমান্ত সন্ত্রাসের মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ।" 

Updated By: Feb 19, 2018, 11:47 PM IST
তিস্তা ইস্যুতে মোদীতেই আস্থা বাংলাদেশের
নিজস্ব ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন: সামনেই ভোট, তাই তিস্তা নিয়ে এবার সুর চড়াতে শুরু করল হাসিনা সরকার। আর সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাফ বুঝিয়ে দিলেন, তিস্তা ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদীকেই সমর্থন করছে বঙ্গবন্ধুর দেশ। ঢাকা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাকে সামনে রেখেই হাসানুল এদিন হক বলেন, "মোদী আমাদের এখানে (বাংলাদেশ) এসে বলেছিলেন জল কখনই কোনও রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে না। তিনি আরও বলেছিলেন, বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে চলব, পাশে থাকব। বাংলাদেশ ভারতের সহযোগিতা আশা করছে।"

আরও পড়ুন- 'বাংলায় আসবেন', বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আমন্ত্রণ মমতার, পাল্টা 'ইলিশ আমন্ত্রণ' হাসিনার

উল্লেখ্য, ইন্দো-বাংলা মিডিয়া ডায়ালগ (২০১৮) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তৃতায় হাসানুল হক ইনু তিস্তা জল বণ্টন ইস্যুর সঙ্গেই তুলে ধরেন সীমান্ত সমস্যার কথাও। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলা সীমান্ত সমস্যার কথা টেনে তিনি বলেন, "পাকিস্তানের থেকে বেশি সীমান্ত সন্ত্রাসের মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ।" একই সঙ্গে তিস্তা ইস্যু নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনাও শোনা যায় তাঁর মুখে। তিস্তা জল প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খাটো করেই মোদী বন্দনা করেন হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্য হাসানুল হক। 

প্রসঙ্গত, তিস্তা জল বণ্টন ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশের টানাপোড়েনের ছবি এর আগেও শিরোনামে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর আগে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন তখনও আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তিস্তা চুক্তি। সেবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজি করিয়ে তিস্তার জল পেতে সর্বত ভাবে চেষ্টাও করেছিলেন মুজিব কন্যা। কিন্তু, বরফ একটুও গলেনি। বিফলে গিয়েছে 'ইলিশ কূটনীতি'ও। 

আরও পড়ুন- যাত্রা শুরু কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেসের

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের কথা মাথায় রেখে বিকল্প পথ দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'তোর্সার জল নাও', যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি বাংলাদেশ। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশা জাগিয়ে এসেছিলেন, তিস্তার জল বাংলাদেশ পাবে। যা এখনও সম্ভব হয়নি। 

এই সময়ের মধ্যে আবার কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস চালু করে পরিস্থিতিকে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ করার চেষ্টা করেছে দুই রাষ্ট্রপ্রধান। এতে মৈত্রী আরও দৃঢ় হলেও অধরাই থেকেছে আসল লক্ষ্য। তিস্তা জল বণ্টন নিয়ে কোনও সুরাহাই হয়নি। এমন অবস্থায় এবছরই ভোটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে। রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করছে, বিএনপি নেত্রীর হাজত বাস হলেও ভোট নিয়ে খানিকটা ব্যাকফুটে আওয়ামি লিগ। ক্ষমতায় আসার আগে এবং এখনও, তিস্তার জল আদায় করা নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু, সেগুলি কার্যকর না হওয়ায় বিপক্ষের তোপের মুখে পড়তে হতে পারে নেত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলকে। তাই এবার তিস্তা ইস্যুতে পাল্টা সুর চড়িয়ে পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে আনতে মরিয়া হাসিনার দল, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। 
 

.