Afghanistan Crisis: তালিবান-শাসনে আফগানিস্তান দেশটা যেন এক আস্ত কয়েদখানা!
যেসব আফগান দেশ ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছেন তালিবানি শাসনে কেমন আছেন তাঁরা? খোঁজ নিল Zee Media।
নিজস্ব প্রতিবেদন: তালিবানি শাসন থেকে রেহাই পেতে কাবুল বিমানবন্দরে বিপুল ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কেউ কেউ পালাতে পেরেছিল, কেউ প্লেন থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন। বহু আফগানই দেশ ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে তালিবানি শাসনে দিন কাটাচ্ছেন। কেমন আছেন তাঁরা? খোঁজ নিল Zee Media।
Zee Media-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ এক সাক্ষাৎকারে 'আমির' (নাম পরিবর্তিত) নামের এক আফগানবাসী তালিবানি শাসনে তাঁদের জীবন এখন ঠিক কেমন , সেই কাহিনী বলেছেন।
আরও পড়ুন: Afghanistan: 'শিক্ষা' দিতে ৪ অপহরণকারীকে মেরে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে দিল তালিবান
জি মিডিয়ার তরফে আমিরকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তাঁরা দেশ ছাড়তে পারলেন না? আমির জানান, ''ইভ্যাকুয়েশনের সময়ে আমরা চেষ্টা করেছি আফগানিস্তান ছাড়তে, কিন্তু পারিনি। কাবুল তালিবানের হাতে চলে গেলে আমরা পঞ্জশিরে রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের আশ্রয় নিই। সেখানেও পাক ড্রোনের হানার জেরে আমাদের পালাতে হয়। তার পর ফের আমরা কাবুলে ফিরি। এখন আমরা কাবুলেই লুকিয়ে আছি। আমার ফ্যামিলি মেম্বাররা সব বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে। কোনও একজন ধরা পড়ে গেলে যাতে অন্যদের সতর্ক করা যায়। তালিবানি শাসনে থাকা মানে যেন কয়েদখানায় থাকা! যদি কাবুল শহরে বেরোন তা হলে মনে হবে যেন জোম্বিদের এক নগরে আপনি বাস করছেন।''
রেজিস্ট্যান্স ফোর্সে অংশ নেওয়া ও তার পরবর্তী ঘটনাক্রম নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে আমির জানান, পঞ্জশিরের পতনের পরে ভীষণ কঠিন পথ ধরে কাবুলে ফেরেন তাঁরা। আমির বলেন, ''এখন কাবুলে বাস করা এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সন্ত্রাসের আবহে টিকে থাকা কঠিন। এক সময় যে গণতান্ত্রিক পরিবেশে আমরা কাটিয়েছি, তা হারিয়ে আমরা খুবই ক্ষুণ্ণ।''
আপনার পরিবারের মহিলারা বা মহিলা বন্ধুরা এখন কী করে দিন কাটাচ্ছেন?--এই প্রশ্নের উত্তরে আমির বলেন, ''খুবই সঙ্কটজনক এক আবহাওয়ায় মহিলারা দিন কাটাচ্ছেন। আমি মনে করি, তালিবান এমন এক 'মেল ডমিন্যান্ট' শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চাইছে, যেখানে আগামি দিনে মেয়েদের জন্য কোনও জায়গাই থাকবে না। ফলে যারা তুলনায় উদার মনোভাবাপন্ন তাঁদের কাছে বিষয়টি খুবই হতাশাজনক।''
আপনার পরিবারের মহিলারা কীভাবে লুকিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন?
আমির বলেন, ''সকলেই তীব্র এক মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে আছেন। আছেন বিপুল ঝুঁকি নিয়ে। তালিবান-রাজে জীবন আগাগোড়াই কঠিন।''
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়-- আপনি পড়াশোনার সূত্রে কিছুদিন ভারতে কাটিয়েছেন বলে বলেছেন। কেমন ভারতের অভিজ্ঞতা? দু'দেশের মধ্যে ফারাক কী দেখলেন?
আমির জানান, ''আমি আমার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দুটিই ভারত থেকে অর্জন করি। তখন যেটা আমি দেখেছি, সেটা হল, ভারত দেশটা নানা ধর্ম, নানা ভাষা, নানা সংস্কৃতির একটা মিশ্রভূমি। প্রত্যেকেই সহাবস্থানের মাধ্যমে দেশটিকে উন্নত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। আফগানিস্তানও খুব বৈচিত্রপূর্ণ দেশ। হিন্দু-মুসলিম-ইহুদি-- অনেকেই সেদেশে বাস করে। কিন্তু আফগানিস্তানের সমস্যা হল, সেখানে একদল মৌলবাদী মুসলিম হিংসার সঙ্গে সব কিছু গ্রাস করে নিতে চাইছে। বলতে গেলে বলা উচিত, সেখানে এখন একরকম সাংস্কৃতিক যুদ্ধও চলছে।''
জি মিডিয়ার পরের প্রশ্ন এবং শেষ প্রশ্ন-- এই সময়-পর্বে ভারতের বন্ধুদের থেকে কোনও সমর্থন পেয়েছেন আমির?
আপ্লুত আমির জানান, ভারতীয় বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। আর এই তালিবান-রাজ শুরু হওয়ার পরে তাঁরা আমার বিষয়ে খুবই উৎকর্ণ থেকেছেন। নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন, টেক্সট করেছেন। আমি এ জন্য খুবই কৃতজ্ঞ তাঁদের কাছে। কৃতজ্ঞ ভারতের কাছে।
(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)
আরও পড়ুন: World Tourism Day 2021: ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে