Nuclear Disarmament Treaty at UN: পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে বাধা রাশিয়ার, তবে কি পরমাণুযুদ্ধের আশঙ্কা জিইয়ে...
কেন রাশিয়া এটা দখল করল? তাদের যুক্তি, তারা এই কাজ করছে, কারণ তারা জানত, এখান থেকে ইউক্রেন তাদের দিকে পাল্টা হামলা চালাত। সেটা বন্ধ করা দরকার ছিল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই-- বহুকাল ধরে মানুষ এসব শুনে আসছে। স্কুলপাঠ্য বইতে আমরা এই সব পড়ি, লিখি। কিন্তু কার্যত বিষয়টি যে অনেক গভীরে তা বুঝি সম্ভবত অনেক পরে। যখন বুঝি, তখন দেখি, এ সব আসলে রয়েছে রাষ্ট্রনেতাদের হাতে। বিশেষত, শক্তিশালী রাষ্ট্রনেতাদের হাতে। যেমন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দেশ একটা আতঙ্ক জিইয়ে রাখল। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ঘোষণা আটকে দিল রাশিয়া। বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র ছড়িয়ে পড়া রুখতে প্রতি পাঁচ বছর এই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিটি খতিয়ে দেখা হয়। এবারও হচ্ছে। তবে এ বারে ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সামরিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণাপত্রের বিরোধিতা করলেন রুশ প্রতিনিধি। ঘোর উদ্বেগও প্রকাশ করলেন তিনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার অল্প দিনের মাথাতেই ঝাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অঞ্চলটি দখল করে নেয় রাশিয়া। তার পর থেকে এটি তাদেরই দখলে। ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়া এই কেন্দ্রটিকে সামরিক ঘাঁটি বানিয়ে তুলেছে। কিন্তু কেন রাশিয়া এটা দখল করল? তাদের যুক্তি, তারা এই কাজ করছে, কারণ তারা জানত, এখান থেকে ইউক্রেন পাল্টা হামলা চালাত। তবে সেটা যাতে তারা না পারে তাই এই আক্রমণ তাদের! রাশিয়ার অভিযোগ ছিল, ইউক্রেন হামলা চালাচ্ছে পরমাণু কেন্দ্রটি লক্ষ্য করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে রাশিয়া ফের সেই অভিযোগটিই আবার নতুন করে তুলল।
আরও পড়ুন: Pakistan Floods: আমাদের সাহায্য করুন, বন্যাবিধ্বস্ত পাকিস্তানের কাতর আহ্বান...
শেষ বার ২০১৫ সালেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে সহমত হতে পারেনি রাষ্ট্রপুঞ্জ। ২০২০ সালে পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। অতিমারীর জন্য তা পিছিয়ে যায়। সেই আলোচনার আসরই ২০২২ সালে বসল। টানা চার সপ্তাহ ধরে নিউ ইয়র্কে সম্মেলন চলার পরে শেষমেশ এ বারেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি স্বাক্ষরে ব্যর্থই হল রাষ্ট্রপুঞ্জ।
ঘোষণাপত্রের বয়ান নিয়ে সকলেই সম্মতি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু রাশিয়া এই চুক্তিপত্রে সই করতে আপত্তি প্রকাশ করল। রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকার প্রতিনিধি বনি জেনকিন্স বলেছেন, এত আলোচনার এই ফল গভীর হতাশাজনক। এদিকে, ঘোষণাপত্রের বয়ানের একাংশ নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাশিয়ার। ইউক্রেনের পরমাণু শক্তি কেন্দ্রগুলি নিয়েই আপত্তি তাদের। তাদের বক্তব্য, ঝাপোরিঝিয়ার কেন্দ্রটি-সহ অন্যান্য ইউক্রেনীয় পরমাণু শক্তি কেন্দ্রগুলি নিয়ে তারা বেশ চিন্তিত। রুশ প্রতিনিধি ইগর ভিশনেভেতস্কি বলেন, ওই চুক্তির বয়ানে সমতা ছিল না, আমাদের প্রতিনিধি দলের মূল আপত্তি চুক্তিপত্রের বয়ানের কিছু প্যারাগ্রাফ নিয়ে, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ। এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে চিন। তারা বলেছে, সকলের নিরাপত্তার জন্য এটি জরুরি ছিল।
যদিও আগেই রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটো'তে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যানও করে, তাতেও সেনা-আগ্রাসন থামবে না রাশিয়া! তা হলে কি নতুন কোনও যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে রাশিয়া? তা হলে কি কোনও পরমাণুযুদ্ধের পরিকল্পনাই চলছে?