সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী রণতুঙ্গাকে অফিসে ঢুকতে বাধা, গুলি চালালেন তাঁর রক্ষী, জখম ৩
শনিবার শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পদ খোয়ানোর পর গোয়ার্তুমি করতে গিয়ে পড়লেন শ্রীলঙ্কার সদ্য প্রাক্তন পেট্রোলিয়ম মন্ত্রী অর্জুন রণতুঙ্গা। রবিবার রণতুঙ্গার নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে জখম হলেন কমপক্ষে ৩ জন। পদ নেই, তা সত্ত্বেও জোর করে অফিসে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বজয়ী অধিনায়ক। সেই সময়ে বিতণ্ডার মাঝে গুলি চালিয়ে দেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা। এরপরই পদ হারান রণতুঙ্গা। রবিবার সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সাইলন পেট্রোলিয়ম কর্পোরেশনের অফিসে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেন প্রাক্তন পেট্রোলিয়ম মন্ত্রী। পুলিসের মুখপাত্র রুয়ান গুণাশেখরের দাবি, পদ হারানোর কারণে রণতুঙ্গাকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে কর্মীদের বিবাদ বাধে। তখনই গুলি চালিয়ে দেন রণতুঙ্গার নিরাপত্তারক্ষী।
তবে গাল্ফ নিউজের প্রতিবেদনের দাবি, রণতুঙ্গাকে বন্দি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তখনই গুলি চালান তাঁর নিরাপত্তারক্ষী। অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার ভাগ নিয়ে চলছে চূড়ান্ত নাটক। মন্ত্রিসভা ভাঙার পর এদিন সকালে রণিল বিক্রমাসিঙ্ঘেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেন শ্রীলঙ্কার সংসদের স্পিকার। তাঁর কথায়, ''সুশাসন ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখবেন বিক্রমাসিঙ্ঘে''। ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সংসদ সাসপেন্ড রাখার সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা। তাঁকে পাঠানো চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রশ্ন তুলেছেন স্পিকার কারু জয়সূর্য। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্ত দেশের মধ্যে গুরুতর ও অযাচিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
বিক্রমাসিঙ্ঘ জনাদেশ পেয়ে ক্ষমতায় এসেছেন বলে মনে করিয়ে দিয়ে স্পিকার লিখেছেন, ''এব্যাপারে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল আপনার। এর ফলে দেশে গুরুতর ও অযাচিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করছি''।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় নাটকীয়ভাবে রণিল বিক্রমাসিঙ্ঘের সরকারকে বরখাস্ত করেন রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা। প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথগ্রহণ করেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষে। রাষ্ট্রপতির এহেন পদক্ষেপকে বেআইনি ও সংবিরোধী আখ্যা দিয়েছেন বিক্রমাসিঙ্ঘে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন। শনিবার আচমকা শ্রীলঙ্কার সংসদ ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সাসপেন্ড করে দেন রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা।
অর্থনীতি ও নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে বিক্রমাসিঙ্ঘে ও সিরিসেনার মধ্যে মতানৈক্য তীব্র আকার ধারণ করেছিল। বিক্রমাসিঙ্ঘের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে জোট ভাঙার কথা ঘোষণা করে সিরিসেনার ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স। ২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কার সংসদে ১০৬টি আসন রয়েছে বিক্রমাসিঙ্ঘের। সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে মাত্র ৭টি কম। অন্যদিকে মোট ৯৫টি আসন রয়েছে সিরিসেনা ও রাজাপক্ষের ঝুলিতে।
আরও পড়ুন- আর কোনও বিদেশি নেতা কল্কে পাননি, মোদীকে এই বিরল সম্মান জাপানি প্রধানমন্ত্রীর