মোদীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই বিজেপিতে : Payel Sarkar
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর Zee ২৪ ঘণ্টার মুখোমুখি পায়েল সরকার। কী বললেন অভিনেত্রী?
অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার। জল্পনা ছিলই, বৃহস্পতিবার জেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন পায়েল। আর তারপরই Zee ২৪ ঘণ্টার মুখোমুখি তিনি। কী বললেন অভিনেত্রী?
রাজনীতিতে আসার জন্য বিজেপিকে বাছলেন কেন?
পায়েল: বিজেপি সম্পর্কে আমার ধারণার শুরুটাই হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে দেখে। যে আদর্শে উনি বিশ্বাস করেন। যেভাবেই সারা দেশকে উনি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমার মনে হয় সেটা প্রশংসনীয়। আর বাংলা দেশেরই একটা অংশ। অনেক সময় উনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেগুলিতে হয়ত সমালোচিত হতে পারত। আমাদের দেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি, সেখানে কোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাটা সহজ নয়। উনি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রেখে চলছেন। ওঁর আদর্শে আমি অনুপ্রাণিত।
বিজেপি কি আপনাকে প্রার্থী করবে?
পায়েল: আশা রাখি (হাসি)। কারণ, কাজ করতে গেলে একটা জায়গা তো দরকার। সেটার জন্য আমি তো চাই ভোটে দাঁড়াতে। মানুষ আমার সঙ্গে না থাকলে আমি মানুষের জন্য কীভাবে কাজ করব? তবে কীভাবে সেটা হবে, তা দল সিদ্ধান্ত নেবে। আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নই।
রাজনীতিতে আসার জন্য সকলেরই কিছু কাজের পরিকল্পনা থাকে। এমন কি নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা আপনার রয়েছে? বা এমন কোনও আর্জি যা নিয়ে আপনি পার্টির কাছে যাবেন?
পায়েল:আমার মাথায় অনেকগুলো জিনিসই রয়েছে। যেগুলো আমি করতে চাই বা করা প্রয়োজন বলে মনে হয়। সেটা আমার দলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেই শেয়ার করতে চাই। দেখো, আজ যুব সমাজ রাজনীতি থেকে আস্থা হারাচ্ছেন। একটা কথা তো বুঝতে হবে, যে দেশে আছি, সেদেশের রাজনীতি না বুঝলে, মানসিকতা না জানলে দায়িত্ববান নাগরিক হওয়া যায় না। তাই যুবসামজের সচেতনতা খুবই প্রয়োজন। আমাদের দেশের অনেক শিশু রয়েছে, যাঁরা সঠিক যত্ন পায় না। অনেক বৃদ্ধ রয়েছেন, তাঁরা আশ্রয়হীন। তাঁদের জন্যও কিছু করতে চাই। কারণ, তাঁদের physical সাপোর্টের পাশাপাশি mental সাপোর্টও খুব দরকার। আমাদের বাড়িতে মা-বাবাকে দিয়ে সেটা বুঝতে পারি। আজকাল বাড়ির ছেলেমেয়েরা কাজে ব্যস্ত, কোথাও একটা তাঁদের বাবা-মায়েদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। আমি চেষ্টা করব।
টলিউড আপনার থেকে কী পেতে পারে?
পায়েল: টলিউডে যা অভাব-অভিযোগ রয়েছে, তার সমাধান করা দরকার। ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির জন্য আর কী ভালো হতে পারে, দেখতে হবে। এখানে আরও বেশি কর্মসংস্থান হোক। আরও ভালো কাজ হোক। এটা দেখা দরকার। তবে এটা অনেক বড় পরিকল্পনা। এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আশা রাখি, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এটাও তাঁদের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। কারণ, বিজেপি চায় বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার করতে। আর বহু আগে থেকেই শিক্ষা, সংস্কৃতিতে বাঙালিদের একটা জায়গা রয়েছে। সেটার পুনরুদ্ধার দরকার। বাংলাভাষা শক্তিশালী। সেটার আরও প্রসার দরকার। সিনেমা, শিল্প, বিজ্ঞান সবক্ষেত্রেই বাঙালিরা এগিয়ে।
কথায় আছে 'যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ'। অনেকেই অনেক কথা বলেন, কিন্তু কথা রাখেন না, এমন একটা কথা প্রচলিত আছে। আপনার কি মনে হয় বিজেপি এলে এটা শুধরাবে?
পায়েল: ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পুনর্গঠন প্রয়োজন। সেগুলি নিশ্চয় হবে। বিজেপি বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির উপর জোর দিচ্ছে। শুধু মানুষের সমর্থন দরকার। এতদিন যা হয়নি, সেটা করার জন্য জায়গাটা তো থাকতে হবে। আর সে কারণেই বিজেপির প্রয়োজন মানুষের সমর্থন। বিজেপিকে একটা সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
এমন কোনও আপনার মাথায় জায়গা রয়েছে, যেখান থেকে দাঁড়ালে আপনি নিশ্চিত জিতবেন?
পায়েল: মানুষের বিশ্বাস থাকতে হবে। তাহলে আমি যেখান থেকেই দাঁড়াই না কেন জিতব। তবে কোথা থেকে দাঁড়াব, সেটা দলের সিদ্ধান্ত।
আপনার অনেক বন্ধু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, আপনি বিজেপিতে। অভিনয় জীবন কিংবা বন্ধুত্বে কোনও প্রভাব পড়বে?
পায়েল: বন্ধুত্ব আর রাজনীতি দুটো আলাদা জায়গা। আদর্শগত পার্থক্য থাকতেই পারে। এই দুটো জায়গা আলাদা রাখাই ভালো।
মহিলাদের উপর আক্রমণ করা হলে, আপনি প্রতিবাদ করেছেন। যদি আপনার পার্টি থেকেই এমন কিছু হয়, প্রতিবাদ করবেন?
পায়েল: এখনো পর্যন্ত তো এমন কিছু হয়নি। আর হবেও না।
রাজনীতিতে আসার পর ইন্ডাস্ট্রির থেকে এবং তোমার বাবা-মায়ের থেকে কী প্রতিক্রিয়া পেলে?
পায়েল: মা-বাবা আমায় সবসময়ই সমর্থন করেন, এক্ষেত্রেও করেছেন। ইন্ডাস্ট্রি থেকে দেব,পার্নো, পরিচালক রাজা দা (রাজা চন্দ), টেকশিনায়ন বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই শুভেচ্ছা জনিয়েছেন। আমি খুশি। আবার টলিউডের বাইরেও অনেক পরিচিতরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মানুষ পাশে থাকলে নিশ্চয় জিতব।
আপনারই সতীর্থ, যাঁরা সবে তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন?
পায়েল: হ্যাঁ, অবশ্যই। সুদেষ্ণা দি (সুদেষ্ণা রায়), সায়নীকে (সায়নী ঘোষ) শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আর এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেও আমি সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।