Rudranil-র মাফিয়ারাজ মন্তব্য, সমালোচনায় সিংহভাগ টলি ব্যক্তিত্ব
ক্ষোভপ্রকাশ করেন অভিনেতা ভরত কল, অভিনেত্রী কল্যাণী মণ্ডল, পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন : 'টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে।' বৃহস্পতিবার বিস্ফোরক অভিযোগ করেন সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী রুদ্রনীল ঘোষ। শুক্রবার তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদে কালো ব্যাচ পরে প্রতিবাদ জানান ফেডারেশনের টেকনিশিয়ানরা। ক্ষোভপ্রকাশ করেন অভিনেতা ভরত কল, অভিনেত্রী কল্যাণী মণ্ডল, পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। তবে রুদ্রনীল পাশে পেয়েছেন বিজেপিতে তাঁর সতীর্থ অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তাপস বিশ্বাস, প্রোডাকশন কন্ট্রোলার, গিল্ড- আমরা ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত টেকনিশিয়ান। রুদ্রনীলের মন্তব্যs ভীষণ খারাপ লেগেছে। তাই কালো ব্যাচ পরে বিভিন্ন স্টুডিওতে আমদের টেকনিশিয়ানস ভাইরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। রুদ্রকে বন্ধু ভাবতাম। উনি এমন বলতে পারেন ভাবতে পারিনি। এরপরে কিছু হলে আরও বড় প্রতিবাদ হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে ফেডারেশন টেকনিশিয়ানস ভাইদের পাশে থেকেছে তা বর্ণনার ভাষা নেই। সেখানে মাফিয়ারাজ মন্তব্য মানতে পারছি না।
আরও পড়ুন-Rudranil-র দলের থেকে বড় 'মাফিয়া' খুব কমই আছে, পালটা জবাব Soham-র
ভরত কল- রুদ্র ঠিক কী বলতে চেয়েছে তা আমি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারিনি। ভেবেছিলাম প্রযোজকদের নিয়ে বলছে হয়ত। রুদ্রনীল টেকনিশিয়ানদের নিয়ে এমন কথা বলতে পারে আমি ভাবতেও পারিনা। এটা লজ্জাজনক। যে টেকনিশিয়ানরা আমাদের পাশে থাকে, কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে কাজ করে তাঁদের নিয়ে এমন মন্তব্য? উদ্দেশ্য কী! মাফিয়ারাজ যদি হয়, তাহলে এতগুলো বছর ও চুপ ছিল কেন? মাফিয়ারাজ থাকলে এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেলের কাজ কীভাবে নিয়মিত হচ্ছে। সংগঠন তো থাকবেই। তা না হলে কোন কাজে কটা টেকনিশিয়ান লাগবে, আলো লাগবে, কে ঠিক করবে? ও আজ যে জায়গা পেয়েছে তা তো শিল্পী বলেই। ওর পিছনেও টেকনিশিয়ান, প্রোডাকশন ম্য়ানেজার-সহ বহু মানুষের ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের সকলকে ও কীভাবে ছোট করতে পারে?
আর ও স্বজনপোষণ চলছে বলে যে মন্তব্য করেছে, সেক্ষেত্রে প্রশ্ন করব, ও তো ওয়েবসিরিজ, টেলিভিশন, সিনেমা-সহ অনেক কাজ করেছে, তাহলে ও কোন লবিতে? আমি একজন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ হয়ে কলকাতায় এসেও অনেক কাজ পেয়েছি, আমার তো কোনও বাবা-কাকা ছিল না। ওঁর মাথাখারাপ হয়ে গেছে।
দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক- আমি ওঁকে খুব বেশি গুরুত্বই দিই না, যাঁকে গুরুত্বই দিই না, তাঁর কথায় আমি কী বলব! যে কোনও মানুষ কিছু বলতেই পারেন, তা নিয়ে মাথা না ঘামালেই হল।
অনীক দত্ত, পরিচালক- আমি এই নিয়ে মন্তব্য করে সময় নষ্ট করতে চাই না। আমি এই দুই পক্ষের সঙ্গে কোনওদিনই একমত হইনি। তবে এই ক্ষেত্রে একে অপরের সম্পর্কে দুই পক্ষ যে যা বলেছেন, তাতে একমত। এই কাদা ছোঁড়াছুড়ি আমরা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি।
কল্যাণী মণ্ডল, অভিনেত্রী- যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাকে ও কীভাবে ছোট করতে পারে! তাহলে বলব ও পাগল হয়ে গেছে। মস্তিস্কে বিকার হয়েছে। আমরা সবাই মজা করে কাজ করি, কখনও অসম্মানিত হইনি।
সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা- আমারও ২২ বছর হয়ে গেল এই ইন্ডাস্ট্রিতে। পরিবর্তন আমিও দেখেছি। বাম আমলে ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল না, যেটা তৃণমূল আমলে হয়েছে। রাজনৈতিক লোকজন এসে কমিটির মাথায় বসবে সেটা দুঃখজনক। বিজেপি এলে ইন্ডাস্ট্রির লোকজনই ইন্ডাস্ট্রি চালাবে। আর মাফিয়ারাজ কথাটা কে কীভাবে বর্ণনা করবেন সেটা তাঁর উপর নির্ভর করছে। ওটার একটাই মানে হয় না। আমার মনে হয়,যে অবিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়েছে, সেটাই রুদ্রনীল বলতে চেয়েছেন। আজ যে প্রতিবাদ হচ্ছে, তাতেও রাজনৈতিক ছায়া রয়েছে।
আরও পড়ুন-টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে, বোমা ফাটালেন Rudranil Ghosh