Whatsapp করলেই বাড়ি এসে করোনা টেস্ট করবে কলকাতা পুরসভা, ঘোষণা ফিরহাদের
করোনা মোকাবিলায় এখন প্রধান হাতিয়ার টেস্টিং। আর সেই টেস্টিংয়েই কোনও খামতি রাখতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। সংক্রমিত ব্যক্তি অন্যদের সংস্পর্শে আসার আগেই তার বাড়ি গিয়ে চিহ্নিত করাই এখন করোনাকে আটকানোর রোডম্যাপ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা হয়েছে কিনা বাড়ি এসে টেস্ট করে জানিয়ে দেবে কলকাতা পুরসভা। অপেক্ষা শুধু একটি হোয়াটস্যাপ মেসেজের। রাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টিংয়ে জোয়ার আনতে এবার বাড়ি গিয়ে টেস্ট করবে কলকাতা পুরসভা। শনিবার এমনটাই জানালেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুধু তাই নয়, কোমর্বিডিটি চিহ্নিত করতে বাড়ি বাড়ি সার্ভে করে ডেটাবেস তৈরি করবে কলকাতা পুরসভা।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ফিরহাদ জানান, করোনা টেস্টিংয়ের ক্ষেত্রে এবার ডোর-স্টেপ টেস্টিংয়ের পরিষেবা দেবে পুরসভা। আর তার জন্য চালু করা হল একটি বিশেষ হোয়াটস্যাপ নম্বর। কোনও উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি নিজের করোনা পরীক্ষা করাতে চাইলে তাঁকে হোয়াটস্যাপে মেসেজ করতে হবে 9830037493 নম্বরে। দিতে হবে নাম, ঠিকানা। তবে, এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে একসঙ্গে নুন্যতম ২০ জনকে টেস্টিংয়ের জন্য আবেদন করতে হবে।
আবেদনের পেলেই সেই ব্যক্তির বাড়িতে গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যাবে কলকাতা পুরসভা। অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে সেই ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করে ৪০-৫০ মিনিটের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে ফলাফল। তারপর আক্রান্তের শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে হোম-কোয়ারেন্টাইন বা হাসপাতালে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হবে।
বাড়ি গিয়ে করোনা টেস্টিংয়ের বিষয়ে বলতে গিয়ে এদিন ফিরহাদ এটাও জানান যে, পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা, যাঁরা করোনা টেস্টিং করবেন, তাঁদের জন্য যদি একটি এসি রুম দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে কাজের সুবিধা হয়। তবে, সেটা বাধ্যতামূলক নয়, অনুরোধ মাত্র।
এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য, অনেকসময়ে অ্যান্টিজেন টেস্টে ত্রুটি থাকে। মানে, কোনও ব্যক্তির হয় তো উপসর্গ আছে কিন্তু তাঁর টেস্টের রিপোর্ট এল নেগেটিভ। তখন কী করা হবে? ফিরহাদ জানান, এ ধরনের পরিস্থিতিতে উপসর্গযুক্ত ব্যক্তির বিষয়ে নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করে চিরাচরিত RT-PCR পদ্ধতিতে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হবে। অর্থাত্ সেক্ষেত্রে সময় লাগলেও নেওয়া হবে না কোনও ঝুঁকি।
তবে এটুকুতেই থেমে থাকতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। এদিন মেয়র জানান, ডোরস্টেপ টেস্টিংয়ের পাশাপাশি একটি ডেটাবেস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কী এই ডেটাবেস? ফিরহাদ জানান, করোনা হলে সেক্ষেত্রে কোমর্বিডিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অর্থাত্ করোনা আক্রান্তের যদি কোনও আগের গুরুতর শারীরিক সমস্যা (হার্ট, লিভার, কিডনি ইত্যাদির দূর্বলতা) থাকে, সেক্ষেত্রে করোনার প্রভাব আরও প্রাণঘাতি হতে পারে। অথচ অনেক সময়েই দেখা যায় করোনা রোগীর কোমর্বিডিটি আছে কিনা তা স্বাস্থ্যকর্মীরা দ্রুত জানতে পারেন না। ফলে অতিরিক্ত নজরদারিও অসম্ভব হয়ে যায়।
এই দিকটি নজর রেখেই এবার বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিবারের কারও কোমর্বিডিটি রয়েছে কিনা খোঁজ নেবেন পুরসভার প্রতিনিধিরা। সেই সমীক্ষা থেকে যে ডেটাবেস তৈরি হবে তা তুলে দেওয়া হবে স্বাস্থ্য দফতরের হাতে। ফলে কোনও বাড়িতে কারও করোনা হলেই, তাঁর কোমর্বিডিটি রয়েছে কিনা তা সঙ্গে সঙ্গে সেই ডেটাবেসে তাঁর নাম ও বাড়ির ঠিকানা থেকে জানতে পারা যাবে। ফলে শুরু থেকেই দেওয়া যাবে আলাদা নজর। আরও কমবে মৃত্যু হার।
করোনা মোকাবিলায় এখন প্রধান হাতিয়ার টেস্টিং। আর সেই টেস্টিংয়েই কোনও খামতি রাখতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। সংক্রমিত ব্যক্তি অন্যদের সংস্পর্শে আসার আগেই তার বাড়ি গিয়ে চিহ্নিত করাই এখন করোনাকে আটকানোর রোডম্যাপ।
আরও পড়ুন : লাগাম ছাড়া বিল! বেসরকারি হাসপাতালে এবার করোনা চিকিৎসার খরচ বাঁধতে চলেছে স্বাস্থ্য কমিশন