বাড়ির কাছে পোস্টিংয়ের সুবিধা পাবেন কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারাও, স্পষ্ট ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর
দিলীপ ঘোষ তোপ দেগেছেন, "এতদিন যাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন, সরকার যাঁদের কথা ভাবেনি, এখন দেখছে তাঁদের চটিয়ে লাভ নেই। সেইজন্য সরস্বতী পুজোয় লম্বা ছুটি দেওয়া হয়েছে।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য ফের সুখবর। সরস্বতী পুজোর আগের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে এবার থেকে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পোস্টিং হবে নিজের নিজের জেলায়। আজ সরস্বতী পুজোর দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দিলেন আরও এক সুখবর। এদিন নিজের কলেজ, আশুতোষ কলেজে সরস্বতী পুজোয় যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "শুধু নতুন নিয়োগ নয়, শিক্ষকদের বদলির আবেদনের ক্ষেত্রেও এবার বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। বর্তমানে যেসব শিক্ষক বা শিক্ষিকারা বাড়ি থেকে দূরে কর্মরত আছেন, তাঁরা আবেদন করলে, তাঁরাও তাঁদের বাড়ির কাছের স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পাবেন।" ফলে নিজের বাড়ির কাছে স্কুলে পড়ানোর সুযোগ শুধু নতুন শিক্ষক বা শিক্ষিকারা নন, পাবেন বর্তমানে কর্মরতরাও।
গতকাল টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের গর্ব। তাঁরাই আমাদের আসল অভিভাবক। এই সমাজ ও দেশ গঠনের প্রতি তাঁদের অনেক অবদান রয়েছে। তাঁরাই ছাত্রদের শিক্ষাদান করে আগামীদিনের নেতা তৈরি করেন।" আরও বলেন, "এখন সরস্বতী পুজো, আমাদের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্যও আদর্শ সময়। তাই এই উপলক্ষে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সুবিধার্থে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেককে তাঁদের নিজের জেলাতেই পোস্টিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।" সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ভীষণভাবেই উপকৃত হবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরফলে একদিকে যেমন তাঁদের পরিবারের দেখভাল করতে সুবিধা হবে, ঠিক তেমনই পড়ানোর কাজে মনঃসংযোগ করতেও সুবিধা বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন, চারতলা বাড়ির সমান উঁচু সরস্বতী! ৪১ ফিটের প্রতিমা গড়ে রেকর্ড গড়ল বসিরহাটের কাঁকড়া
যদিও, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি দেখছেন বিরোধীরা। এদিন খড়্গপুরে নিজের বাংলোয় সরস্বতী পুজোয় যোগ দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তোপ দাগেন, "আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই তৃণমূল এই সমস্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতদিন যাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন, সরকার যাঁদের কথা ভাবেনি, এখন দেখছে তাঁদের চটিয়ে লাভ নেই। সবাইকে খুশি করার চেষ্টা করছে। সেইজন্য সরস্বতী পুজোয় লম্বা ছুটি দেওয়া হয়েছে। এদিকে স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গাছ কেটে দিয়ে আগায় জল ঢাললে হবে না। গোড়ায় জল ঢালতে হবে যাতে গাছ বেঁচে থাকে। মানুষের মন এইজন্য উবে গিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, গোটা পশ্চিমবঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ আর নেই।"
আরও পড়ুন, সরকারি কর্মীদের মাইনে আটকে যাচ্ছে, সরস্বতী পুজোর ছুটি ৩ দিন থেকে কমে ২
প্রসঙ্গত, নিজের জেলায় পোস্টিং বা বদলি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষক- শিক্ষিকারা। আবার উল্টোদিকে পোস্টিং নিয়ে সমস্যার জেরে বহু সময় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছুটি নেওয়াকে কেন্দ্র করে সমস্যায় পড়েছে শিক্ষা দফতরও। এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছিল মাস কয়েক আগে।