টেট ঘিরে চরম অব্যবস্থা রাজ্যজুড়ে

আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত করে প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য টেট পরীক্ষা ঘিরে চরম বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। বিভিন্ন জেলার বহু পরীক্ষাকেন্দ্রে নাকাল হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজে বের করতে। উলুবেড়িয়ার গোবিন্দপুর স্মৃতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় উলুবেড়িয়া থানা থেকে অনেক দূরে। অ্যাডমিট কার্ডে ঠিকানা না থাকায় ওই পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজেই পাননি পাঁচশো জন পরীক্ষার্থী।

Updated By: Mar 31, 2013, 11:34 AM IST

বিভ্রান্তি আর অব্যবস্থায় শেষ হল সংখ্যার বিচারে রাজ্যের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত করে প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য টেট পরীক্ষা ঘিরে চরম বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। বিভিন্ন জেলার বহু পরীক্ষাকেন্দ্রে নাকাল হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজে বের করতে। উলুবেড়িয়ার গোবিন্দপুর স্মৃতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় উলুবেড়িয়া থানা থেকে অনেক দূরে। অ্যাডমিট কার্ডে ঠিকানা না থাকায় ওই পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজেই পাননি পাঁচশো জন পরীক্ষার্থী।
উত্তর চব্বিশ পরগনার মিনাখাঁয় একই নামে দুটি পরীক্ষাকেন্দ্র থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। হালিশহরে মণ্ডলপাড়া গার্লস হাইস্কুলে যাদের সিট পড়েছিল তাঁরা সেখানে পৌঁছনোর পর জানতে পারেন, তাঁদের সিট পড়েছে গাইঘাটা হাই স্কুলে। খিদিরপুর অ্যাকাডেমি স্কুলে সিট পড়েছিল তিনশ জন পরীক্ষার্থীর। ওই কেন্দ্রে আসেননি একজনও। বীরভূমের আমদপুর হাইস্কুলে সিট পড়েছিল তিনশ পাঁচ জন পরীক্ষার্থীর। অথচ বসার ব্যবস্থা ছিল দুশোজন পরীক্ষার্থীর। ফলে পরীক্ষায় বসার জায়াগা পাননি একশো পাঁচজন। এধরনের আরও একাধিক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। তবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যাঁরা দুচোর মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র পৌঁছবেন, তাঁদের আলাদা ঘরে বসিয়ে আলাদাভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এজন্য দেওয়া হবে বাড়তি সময়।
প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষায়, পরিবহণ সঙ্কটের অভিযোগ মানতে নারাজ মদন মিত্র। পরিবহণমন্ত্রীর দাবি, পরিকাঠামোর অভাবে তাঁর দফতরের ক্ষমতা সীমিত। তা সত্ত্বেও বিশাল অঙ্কের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পরিবহণ দফতর সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়েছে। একই সঙ্গে আজ বাড়তি ট্রেন এবং মেট্রো চালানোর প্রস্তাব দিয়ে, অব্যবস্থার জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন তিনি।

দেরিতে পৌঁছলেও আলাদা করে পরীক্ষা দিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। রাজ্য জুড়ে টেট পরীক্ষা ঘিরে চুড়ান্ত অব্যবস্থার নিরিখে এই ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ২টোর মধ্যে পৌঁছলে পরীক্ষা দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেওড়াফুলিতে ট্রেন থেকে পড়ে গেলেন এক পরীক্ষার্থী। জখম পরীক্ষার্থীর নাম দেবাশিদস হাজরা। কাটোয়া লোকাল থেকে পড়ে যান তিনি। জিআরপি উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এখনও বিভ্রান্ত হয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের খোঁজ করছেন বহু পরীক্ষার্থী। টেট পরীক্ষা ঘিরে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন বোলপুরের পরীক্ষার্থীরা। সিট পড়েছিল মাড়গ্রামের বিষ্ণুপুর হাইস্কুলে। পরীক্ষার্থীদের এখন বলা হচ্ছে যেখানে সিট পড়েনি। এর জেরে নাকাল ১৫০ পরীক্ষার্থী। স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে আবেদনকারীরা।
বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে হালিশহরের মণ্ডল পাড়া গার্লস স্কুলে। পরীক্ষার্থীদের এখন বলা হয়েছে সিট পড়েছে উত্তর ২৪ পরগণার গাইঘাটার একটি স্কুলে। টেট পরীক্ষা ঘিরে বিভ্রান্তি বীরভূমের নানুরেও। ভোর ৪টে নাগাত বেড়িয়েও সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পাড়ছেন না অনেকেই। ফলে নাজেহাল হচ্ছেন বহু আবেদকারী ও তাঁদের অবিভাবকরা।
একই রকম এসেছে কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ঘিরে নাজেহাল হন নিউ আলিপুর মাল্টিপার্পাস কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজতে গিয়ে নাকাল হন তাঁরা। কেন্দ্রের নাম ও কোডে বিভ্রান্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ঘিরে রাজ্যজুড়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি ধরা পড়ল সকাল থেকেই। সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে না পারার খবর এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। বারুইপুরে ট্রেন থেকে পড়ে যান মহিলা পরীক্ষার্থী। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তী করা হয়েছে।
ট্রেনে উঠতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা। বারাসতে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পড়ে যান তিন পরীক্ষার্থী। এক ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ বারাসত স্টেশনে আপ হাসনাবাদ লোকাল। রেল অবরোধ করে পরীক্ষার্থীরা। বর্ধমানে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে গিয়ে নাকাল হন পরীক্ষার্থীরা।
আজ প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগের টেট পরীক্ষা। এবার রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষা দিচ্ছেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে। শনিবার সন্ধে পর্যন্ত বহু পরীক্ষাকেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্নপত্র ট্রেজারি বা থানায় পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। একই অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন জেলা থেকেও।

.