জমি অধিগ্রহণ বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে চিঠি তৃণমূলের
কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ বিল প্রত্যাহার করা হোক। এ নিয়ে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে চিঠি দিয়ে দাবি জানাল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরের আগে এই চিঠিতে কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত শিল্প মহল।
ওয়েব ডেস্ক: কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ বিল প্রত্যাহার করা হোক। এ নিয়ে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে চিঠি দিয়ে দাবি জানাল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরের আগে এই চিঠিতে কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত শিল্প মহল।
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনে সাফল্যেই ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। তখন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান, শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করবে না তাঁর সরকার। রাজ্যের শিল্পে বড়সড় বিনিয়োগ না এলেও মুখ্যমন্ত্রী তার জমি নীতি নিয়ে একচুলও নড়েনি। শিল্পে খরা নিয়ে বিরোধীরা সরব হলেও অবস্থান বদলে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকদিন আগেই বর্ধমানে একশোতম প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা--
যাঁরা শিল্প করবেন, তাঁরা নিজেরা ভালবেসে, আদর করে জমি কিনে নিন। তারপরে আমাদের কাছে এলে আমরা তো ১৪ ওয়াইয়ের সুবিধা
দেবই।
এর ঠিক দুদিন পরেই শিল্পমহলের উদ্দেশে রাজ্যের মুখ্যসচিবের ঘোষণা-
আপনাদের ইচ্ছুক জমিদাতাকেই খুঁজে বার করতে হবে। কাউকে জোর করতে পারব না। তাতে যদি শিল্প না-আসে, না-আসবে।...খাস
জমিতে কেউ থাকলে, আগে দেখতে হবে তাঁর আইনি স্বীকৃতি আছে কিনা। জবরদখলকারী থাকলে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে তাঁকে স্বীকৃতি
দেবে রাজ্য।
এরই মধ্যে লগ্নির টানে বিলেত সফরে মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারের জমি অধিগ্রহণ বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে চিঠি দিল তৃণমূল।
বর্তমান জমি আইনে, বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কম পক্ষে ৮০ শতাংশ কৃষকের সম্মতি প্রয়োজন, যৌথ প্রকল্পে জমি নিয়ে অন্তত ৭০ শতাংশ কৃষকের সম্মতি লাগবে, জমি অধিগ্রহণের আগে সামাজিক প্রভাব নিয়ে নিরীক্ষা আবশ্যিক। এই ধারাগুলিকে পরিবর্তন করে মোদী সরকারের অর্ডিন্যান্সে বলা হচ্ছে, শিল্প করিডর, গ্রামীণ পরিকাঠামো, যৌথ প্রকল্প, আবাসন ও প্রতিরক্ষা-এই ৫টি প্রয়োজনে জমি নিলে কৃষকদের সম্মতি লাগবে না, সামাজিক প্রভাবের সমীক্ষা প্রয়োজন নেই।
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের দাবি, কৃষি জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে একশো শতাংশ কৃষকের সম্মতির প্রয়োজন। এর ফলে শিল্পের জন্য জমি নেওয়া কার্যত অসম্ভব। জমি বিল বিতর্কের মধ্যেই লগ্নির সন্ধানে লন্ডন যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন একটা সময় জমি বিল প্রত্যাহার নিয়ে তৃণমূলের এই চিঠি নিঃসন্দেহে বিভ্রান্ত করবে শিল্পমহলকে।এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।