আঙুর খাওয়া থেকে দরজায় পিঁয়াজ ঝোলানো-নববর্ষে বিশ্বের অদ্ভুত রেওয়াজ-এক নজরে
অনেক আশা নিয়ে আমরা নতুন বছরে পা দিলাম। সদ্য চলে যাওয়া বছরের দুঃখ, কষ্ট , বেদনায় জর্জরিত অন্ধকার ক্ষণ কাটিয়ে নতুন সকাল পাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে শুরু হল পথ চলা । তাই নতুন বছরের রাত কেমন কাটাল বিশ্ব এই জানার জন্য আমরা ঢুঁ মারলাম ইন্টারনেট দুনিয়ার অলিগলিতে। আমরা খুঁজে পেলাম বিভিন্ন দেশের বেশ অন্য রকম উত্সব মুখর রাত...কেমন কাটালেন তাঁরা!
ওয়েব ডেস্ক: অনেক আশা নিয়ে আমরা নতুন বছরে পা দিলাম। সদ্য চলে যাওয়া বছরের দুঃখ, কষ্ট , বেদনায় জর্জরিত অন্ধকার ক্ষণ কাটিয়ে নতুন সকাল পাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে শুরু হল পথ চলা । তাই নতুন বছরের রাত কেমন কাটাল বিশ্ব এই জানার জন্য আমরা ঢুঁ মারলাম ইন্টারনেট দুনিয়ার অলিগলিতে। আমরা খুঁজে পেলাম বিভিন্ন দেশের বেশ অন্য রকম উত্সব মুখর রাত...কেমন কাটালেন তাঁরা!
১) জাপান : Ringing It In
বৌদ্ধ ধর্মে কথিত আছে, মানুষ ১০৮ রকমের ইচ্ছা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। আর এই ইচ্ছাপূরণেই তৈরি হয় নানা রকমের পাপ, অপকর্ম। তাই বছরের শেষে মধ্যরাত্রে জাপানের বৌদ্ধ মন্দিরগুলিতে ১০৮ বার ঘন্টা বাজানো হয়। তাঁদের বিশ্বাস এই ঘন্টার শব্দে ধুয়ে যায় সব পাপ। ওই সময় অনেকেই ঘরে বসে ঘন্টার শব্দ শুনতে শুনতে নুডল খান।
২) ইকুয়েডর- Burning Dummies
ইকুয়েডরে নিউ ইয়ার ইভ উদযাপনের ছোটো ইতিহাস রয়েছে। ১৮৯৫ সালে গুয়াকুয়েল শহরে ইয়লো জ্বরে মারা যায় শতাধিক মানুষ। মৃত মানুষদের কফিনসুদ্ধ তাঁদের ব্যবহত জামাকাপড় পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের বিশ্বাস ছিল সব জীবানু আগুনে পুড়লেই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে এই মহামারী থেকে। শুদ্ধ হওয়ার ভাবনা থেকেই বছরের শেষদিন কুশপুতুল পোড়ানো হয়। সত্যি তো নতুন বছর মানেই জীবনের শুদ্ধিকরণ।
৩) কলম্বিয়া- Grab the Suitcase
প্রত্যেক দেশের মতোই কলম্বিয়া নানান রকম রীতিনীতি রয়েছে নতুন বছরের শুভক্ষণে। ঘড়ির কাটা যে মুহূর্তে ১২ র ঘরে এসে নতুন বছরের সূচনা হয় কলম্বিয়ানরা ১২ টা আঙুর চিবোতে থাকেন। ১২ মাসের ১২ টি আঙুর হল নতুন বছরের বারো রকমের প্রত্যাশা। স্পেন, ফ্রান্সেও এই রীতি দেখা যায়।
অনেকে হলুদ অন্তর্বাস পড়েন। তাঁদের বিশ্বাস হলুদ অন্তর্বাস নতুন বছরে সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে।
খাবার টেবিলে গমের শিষ রাখার সংস্কার বেশ উল্লেখযোগ্য কলম্বিয়ানদের কাছে। বারোটি গমের শিষ ডিনার টেবলি রাখা হয়। চলতি বছরে দেশের খাদ্যর সংকট কখনও না আসে এমনি মনে করেন তাঁরা।
আরও একটি মজার কাজ তাঁরা করে থাকেন। বাড়ির চতুর্দিকে সুইটকেস নিয়ে ছুটতে থাকেন। তাতে নাকি বছরভর সারা পৃথিবীতে ভ্রমণের ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
পজেটিভ হয়ে চলার জন্য ঘড়ির কাটা বারোর ঘরে আসতেই সবাই প্রথম ডান পা সামনে রেখে নতুন বছরে পা ফেলেন। এরকমই অনেক সংস্কার-কু সংস্কার নিয়ে উদযাপন করেন নতুন বছরকে।
৪) দক্ষিণ আফ্রিকা- Flying Fridges
নতুন বছরকে অভ্যর্থনা জানানোর অদ্ভুত রীতি দেখা যায় জোহানেসবার্গের বেশ কিছু জায়গায়। বাড়ির পুরানো আসবাবপত্র, রান্নার সরঞ্জাম সহ পুরানো বিভিন্ন জিনিস ফ্ল্যাট থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয় বাইরে। এতে নাকি বাড়িতে নতুন জিনিস আসার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু প্রথা সরকার বন্ধ করে দিতে চায়। দেখা গেছে ফ্যাল্ট থেকে ছুঁড়ে ফেলা জিনিসপত্রে আঘাতে আহত হয়েছে অনেকে। যাইহোক আপনি যেন এইরকম চেষ্টা না করেন। আপনার সর্বনাশ হলেও চোরেদের পৌষমাস হবে নতুন বছরে।
৫) গ্রিস- Hang an Onion on It
গ্রিস নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানায় দরজায় একটা বড় পিঁয়াজ ঝুলিয়ে। আমরা তো লেবু-লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখি কারও নজর না লাগে। কিন্তু গ্রিসের লোকেরা মনে করেন ঘরে সমৃদ্ধি ও সৃষ্টি বজায় রাখে এই ঝুলন্ত পিঁয়াজ।
এরকম বিভিন্ন দেশে অদ্ভুত রীতি-রেওয়াজে নতুন বছরকে আহ্বান করেন। আসলে আমরা সবাই চাই আনন্দ, খুশি, অর্থ উথলে পড়ুক নতুন বছরে। তাই এইসব ঐতিহ্য কতখানি বিজ্ঞানসম্মত, আমাদের জীবনে সত্যি কি কাজ করবে না ভেবে উত্সবে মাততেই ভালবাসি।