তহেলকা কাণ্ডে ৪ বছরের জেল বঙ্গারু লক্ষ্মণের

প্রায় এক দশক আগের তহেলকা ঘুষ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণকে ৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালত। সেই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার দায়ে দুর্নীতি দমন দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি`র ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কানোয়ালজিত্‍ সিং আরোরা।

Updated By: Apr 28, 2012, 03:10 PM IST

প্রায় এক দশক আগের তহেলকা ঘুষ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণকে ৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালত। সেই সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার দায়ে দুর্নীতি দমন দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি'র ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কানোয়ালজিত্‍ সিং আরোরা।
শুক্রবার ২০০১ সালের এই আলোড়ন তৈরি করা `স্টিং অপারেশন` কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হন তত্‍কালীন বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণ। তবে, রাজসাক্ষী হওয়ার কারণে এই মামলার আর এক অভিযুক্ত, বঙ্গারুর ব্যক্তিগত সচিব টি সত্যমূর্তিকে ক্ষমা করা হয়। দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কানোয়ালজিত্‍ আরোরা টাকা নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের প্রভাবিত করার দায়ে দুর্নীতি দমন আইনে দোষী সাব্যস্ত করেন তাঁকে। এর পরই আদালত কক্ষে হাজির অন্ধ্রপ্রদেশের দলিত নেতাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রায় ঘোষণার পর আদালতকক্ষেই কেঁদে ফেলেন বঙ্গারু। এরপর তাঁকে তিহাড় জেলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
এদিন জেল থেকে বঙ্গারু লক্ষ্মণকে ফের তিহাড় জেল থেকে আদালতকক্ষে হাজির করার পর সিবিআই-এর তরফে ঘুষ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত বিজেপি নেতার ৫ বছরের জেলের সাজার আবেদন করা হয়। অন্যদিকে নিজের বয়স ও স্বাস্থ্যের কথা তুলে দুর্নীতি দমন আইনের ন্যূনতম সাজা অর্থাত্‍ ৬ মাসের কারাদণ্ডের আর্জি জানান বঙ্গারু লক্ষ্মণ। নিজের মক্কেলকে 'নির্দোষ' দাবি করার পাশাপাশি বঙ্গারুর আইনজীবী বলেন, ৭২ বছরের প্রবীণ নেতার দু'বার বাইপাস সার্জারি হয়েছে। নিয়মিত ডায়াবেটিসের ওষুধ খেতে হয়। তাই যেন যথাসম্ভব কম সাজা দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক আরোরা বিজেপি'র তেলুগু নেতার আবেদন কার্যত নস্যাত্‍ করে দেন। সাজা ঘোষণা পর বঙ্গারু লক্ষ্মণের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়কে চ্যালঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

এনডিএ সরকারের আমলে ২০০১ সালে ব্রিটেনের `ওয়েস্ট এন্ড ইন্টারন্যাশনাল` নামে একটি সংস্থার এজেন্ট সেজে বঙ্গারু লক্ষ্মণের কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য হাতে বহনযোগ্য থার্মাল ইমেজার ও সিয়াচেনের মতো তুষারক্ষেত্রে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের বরাত পাওয়ার আবেদন নিয়ে যান তহেলকা ডট কম-এর সাংবাদিকরা। বরাত পাওয়ার জন্য আগাম ঘুষ হিসেবে ১ লাখ টাকা তত্‍কালীন বিজেপি সভাপতির হাতে টাকাও তুলে দেন তাঁরা। কথা হয়, বারাক ক্ষেপণাস্ত্রের `ডিল` নিয়েও। আর পুরো ঘটনাটাই গোপন ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায়।
২০০১-এর ১৩ মার্চ এই `স্টিং অপারেশন`-এর সিডি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনার জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তত্‍কালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজ। ঘটনার প্রতিবাদে রেলমন্ত্রী পদ ও এনডিএ জোট ছাড়েন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ২০০১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে লড়ে তৃণমূল। যদিও বিধানসভা ভোটে জোটের ভরাডুবির কিছুদিনের মধ্যেই ফের এনডিএ`তে ফিরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনডিএ জমনায় তহেলকা কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য কমিশন গড়া হলেও ঘুষকাণ্ডের অনুসন্ধানে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এর পর প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম তহেলকা কাণ্ডের এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নামে সিবিআই।

.