প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি-সহ একাধিক মুখ্যমন্ত্রী, চিনা গোয়েন্দাদের নজরে ১০,০০০ ভারতীয়
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে ঝেনহুয়ার গোয়েন্দাগিরির তালিকায় রয়েছেন প্রধান মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী যশোধা বেন, মনমোহন সিং ও তার পরিবার, কেন্দ্রের একাধিক বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রী ও তাদের পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশের মানুষের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কায় একের পর এক চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত। লাদাখ সংঘাতের আবহে সেই আশঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। কিন্তু তলায় তলায় ভারতের সঙ্গেও ডেটা যুদ্ধ শুরু করেছে চিনও। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ভারতের ১০,০০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির ওপরে নিরন্তর নজর রেখে চলেছে চিন।
কীভাবে!
ওই তদন্তমূলক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, চিনের সেনঝেনের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ঝেনহুয়া ডেটা ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড ওই কাজ করছে। ওই কোম্পানিটির সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে চিন সরকার ও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির। এরাই একটি গ্লোবাল ডেটাবেস তৈরি করছে যেখানে রয়েছেন ভারতের ১০,০০০ প্রভাবশালী ব্যক্তি।
আরও পড়ুন-বাদল অধিবেশন: করোনা সুরক্ষায় সাংসদদের দেওয়া হল বিশেষ কিট, প্রথা ভেঙে আসনে বসেই আলোচনা
কারা রয়েছেন ওই চিনা কেম্পানির নজরে
দেশের আম জনতা কখনও কখনও তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ অন্যান্য তথ্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এবার চিন্তার করাণ রয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীরও। চিনা ওই কোম্পানির নজরদারিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, সোনিয়া গান্ধী ও তার পরিবার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমরেন্দ্র সিং, উদ্ধব ঠাকরে, নবীন পট্টনায়ক, শিবরাজ সিং চৌহান, রাজনাথ সিং, রবিশঙ্কর প্রসাদ, নির্মলা সীতারমন, স্মৃতি ইরানি, সিডিএস বিপিন রাওয়াত, ১৫ প্রাক্তন সেনা প্রধান, নৌসেনা প্রধান ও বায়ুসেনা প্রধান। এছাড়াও রয়েছেন দেশের একাধিক শিল্পপতি, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, খেলোয়াড় সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। ঝেনহুয়াও স্বীকার করে তারা চিনা সরকার ও চিনা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করে। গত কয়েক মাস ধরে ওই কোম্পানির ডেটা বিশ্লেষণ করে এমনই সিদ্ধান্ত পৌঁছেছে ওই সংবাদমাধ্যম।
চিন ওই কোম্পানির নজরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, ইউএই-র মতো দেশও। ওই তথ্য হাতে এসেছে ভারতের ওই সংবাদমাধ্যম ছাড়াও লন্ডনের দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, অস্ট্রেলিয়ার ফাইনান্সিয়াল রিভিউ, ইচালির এল ফোগিলো-র। রেকর্ড বলছে, ঝেনহুয়া কোম্পানি হিসেবে নথিভুক্ত হয় ২০১৮ সালে। দেশে তাদের ২০টি শাখা রয়েছে। কোম্পানিটির ক্লায়েন্টের মধ্যে রয়েছে চিনা সরকার ও চিনা সেনা।
আরও পড়ুন-বাইশ মাস পর বিচার, আইনজীবী রজত দে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত স্ত্রী
দুনিয়াজুড়ে হাজার হাজার মানুষের ওপরে নজরদারি করা হচ্ছে এই অভিযোগ নিয়ে সেনঝেনের ওই কোম্পানিটির মুখোমুখী হয়েছিলেন এক সাংবাদিক। তাঁর প্রশ্নের তালিকায় ছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রশ্নমালাও। কিন্তু কোম্পানির এক কর্মী বলেন, এইসব প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ করা যাবে না কারণ এটি আমাদের ব্যবসার স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। তবে এনিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির এক প্রশ্নের উত্তরে দিল্লিতে চিনা দূতাবাস থেকে বলা হয়, চিনা সরকার কোনও কোম্পানিকে এই ধরনের অন্যদেশের তথ্য সরবারহ করতে বলে না, বলবেও না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে ঝেনহুয়ার গোয়েন্দাগিরির তালিকায় রয়েছেন প্রধান মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী যশোধা বেন, মনমোহন সিং ও তার পরিবার, কেন্দ্রের একাধিক বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রী ও তাদের পরিবার, উত্তরপ্রদেশে মুলায়ম সিংয়ের পরিবার, দেশের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক, ২৫০ কূটনীতিক, ২৩ প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্য সচিব, দেশের অধিকাংশ রাজ্যের পুলিস প্রধানরা।