ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভা ভোটে ধরাশায়ী বিজেপি
টানা এক সপ্তাহ ধরে কংগ্রেস নেতৃত্বকে প্রবল উত্কণ্ঠায় রেখে শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভা নির্বাচনে অংশ নিল না বাবুলাল মারান্ডির দল। যদিও প্রাক নির্বাচনী শরিক ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা(প্রজাতান্ত্রিক)-র ১১ বিধায়ক ভোটদানে বিরত থাকার ফলে তেমন ক্ষতিবৃদ্ধি হল না কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ কুমার বালমুচুর। কিন্তু শরিক জেএমএম-এর সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ার কারণে অপ্রত্যাশিত পরাজয় হল ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের অন্যতম দল বিজেপি'র প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার।
টানা এক সপ্তাহ ধরে কংগ্রেস নেতৃত্বকে প্রবল উত্কণ্ঠায় রেখে শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভা নির্বাচনে অংশ নিল না বাবুলাল মারান্ডির দল। যদিও প্রাক নির্বাচনী শরিক ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা(প্রজাতান্ত্রিক)-র ১১ বিধায়ক ভোটদানে বিরত থাকার ফলে তেমন ক্ষতিবৃদ্ধি হল না কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ কুমার বালমুচুর। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র প্রার্থী সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে সংসদের উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হলেন ঘাটশিলার এই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। আর শরিক জেএমএম-এর সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ার কারণে অপ্রত্যাশিত পরাজয় হল ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের অন্যতম দল বিজেপি'র প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার।
গত ৩০ মার্চ ঝাড়খণ্ডের ২টি রাজ্যসভা আসনের জন্য ভোটগ্রহণ ও গণনার নির্ঘণ্ট স্থির করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটপর্ব চলাকালীন রাঁচির কাছে রাজ্যসভা নির্বাচনের প্রভাবশালী নির্দল প্রার্থী আর কে আগরওয়ালের ভাইয়ের গাড়ি থেকে আয়কর দফতরের অফিসাররা নগদ ২ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করার পর প্রবল চাঞ্চল্য তৈরি হয় রাজনৈতিক মহলে। পত্রপাঠ নির্বাচন কমিশনের তরফে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে মনোনয়ন ও ভোটগ্রহণের সুপারিশ পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের কাছে। রাষ্ট্রপতি দ্রুত সেই সুপারিশ মঞ্জুর করেন। নয়া ভোটপ্রক্রিয়ায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচুর পাশাপাশি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন বিজেপি'র রাজ্যসভার সহকারী নেতা সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এবং জেএমএম-এর সঞ্জীব কুমার।
৮২ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায়(বর্তমানে বিধায়ক সংখ্যা ৮০) জেএমএম এবং বিজেপি-দু'দলেরই আসনসংখ্যা ১৮। পক্ষান্তরে কংগ্রেসের রয়েছেন ১৩ জন বিধায়ক। জনতা দল(ইউনাইটেড)-এর দুই বিধায়ক বিজেপি'কে এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল(আরজেডি)-এর ৫ বিধায়ক কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। অন্যদিকে সিপিআই(এমএল-লিবারেশন)-এর একমাত্র বিধায়ক বিনোদ কুমার সিং ভোটদানে বিরত থাকার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন(আজসু)-এর ৫, জেভিএম(প্রজাতান্ত্রিক)-এর ১১ এবং নির্দল ও ছোট দলগুলির জনা ছ'য়েক বিধায়কই হয়ে উঠেছিলেন যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্র। রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা তাঁর ক্যাবিনেটের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আজসু সভাপতি সুদেশ মাহাতোর কাছে ৫ বিধায়কের ভোট চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে রাজ্যের আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম সুপ্রিমো শিবু সোরেনের ছেলে হেমন্ত সোরেন আজসুর সমর্থন পেতে ভোটের প্রাক মুহূর্তে জাতীয় দলের দাদাগিরি রুখতে 'আঞ্চলিক দলের জোট' গড়ার ডাক দিয়েছিলেন।
হেমন্তের আর্জি মেনে আজসু পরিষদীয় দল জেএমএম প্রার্থী সঞ্জীব কুমারের পক্ষে ভোটদানের সিদ্ধান্ত নিলেও ২০০৯ সালের বিধানসভা ভোটের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের অনুরোধ মানেনি ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডি। তাঁরই নির্দেশে এদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করে রাজ্যসভা ভোটপর্ব বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় জেভিএম(প্রজাতান্ত্রিক) পরিষদীয় দল। এর ফলে কংগ্রেস প্রার্থী বালমুচুর পরাজয়ের সম্ভাবনা জোরাল হয় বলেই প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক মহলের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। এদিন মোট ৬৮ জন বিধায়ক রাজ্যসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন প্রদীপ বালমুচু। সঞ্জীবকুমার পেয়েছেন ২৩টি ভোট। অন্যদিকে মাত্র ২০টি ভোট পেয়ে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে।