দেশে ফেরা আইসিসে যোগদানকারী যুবককে আজ পেশ করা হবে আদালতে
তীর্থস্থান দর্শনের নামে মহারাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে চার যুবক ইরাকে গিয়ে নাম লিখিয়েছিল আইসিসে। শেষপর্যন্ত পালিয়ে লুকিয়ে ছিল সিরিয়ায়। শুক্রবারই দেশে ফেরার পর আরিফ মাজিদ নামে বছর তেইশের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রকে আটক করে মহারাষ্ট্র পুলিসের ATS এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা NIA। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ তাকে আদালতে পেশ করা হবে।
এবছরের মে মাসে ভারত থেকে তীর্থ করতে বাইশজনের একটি দল পাড়ি দেয় ইরাকে। সেই দলে ছিল মহারাষ্ট্রের কল্যাণের চার যুবক শাহিন টাঙ্কি, ফাহাদ শেখ, আমান টাণ্ডেল এবং আরিফ মাজিদ। তেইশে মে দলটি পৌছোয় বাগদাদে। পুলিস সূত্রের খবর, আরিফের বাবা ইজাজের দাবি, পরের দিন অর্থাত্ চব্বিশ তারিখ তাঁর ছেলে ফোন করে বলে যে না বলে বাগদাদা চলে যাওয়ায় সে ক্ষমাপ্রার্থী। দেশে ফেরার পর ওই দলে থাকা একজন পুলিসকে জানায় যে বাগদাদ বিমানবন্দর থেকেই চার যুবক একটি ট্যাক্সি নিয়ে রওনা হয় ফালুজা শহরের দিকে। সেই সময় ওই শহর ছিল আইসিস জঙ্গিদের ডেরা। ছাব্বিশে অগাস্ট শাহিন টাঙ্কি আরিফের বাড়িতে ফোন করে বলে যে তাঁদের পুত্র আইসিস জঙ্গিদের হয়ে লড়াই করতে গিয়ে সিরিয়ার মাটিতে শহীদ হয়েছে। পুত্রের মৃত্যুসংবাদে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। অবশেষে রীতি মেনে কল্যাণেই আরিফের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এর কিছুদিন পর হঠাত একদিন আরিফ নিজেই বাড়িতে ফোন করে এবং বলে যে সে আইসিস জঙ্গিদের হাত থেকে পালিয়ে, সিরিয়ায় লুকিয়ে রয়েছে... দেশে ফিরতে চায়। এই খবর পাওয়ার পরই আরিফের বাবা ইজাজ নিজেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা NIA-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বিষয়টি জানান। এরপর শক্রবার সকালে রাজ্য পুলিসের গোয়েন্দারা ইজাজকে ফোন করে জানান যে তাঁর ছেলে আরিফ মুম্বইয়ে আছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে ইতিমধ্যেই আরিফের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করছে NIA। সেইসঙ্গে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কোনও এশিয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় ভারতীয় দণ্ডবিধির একশো পঁচিশ ধারায় আইসিস ও তার শাখা সংগঠনগুলির বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন করছে NIA। দোষী প্রমাণিত হলে যার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আরিফ ফিরলেও তার বাকি তিন সঙ্গী এখনও আইসিসের কবজায়।