অঙ্গীকার বনাম অপ্রাপ্তি, রেল বোর্ডের তথ্যেই মিলছে ব্যর্থতার খতিয়ান
গত রেল বাজেটে প্রত্যাশার পারদকে তুঙ্গে তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেললাইন থেকে নতুন কারখানা সবই ছিল রেলমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির তালিকায়। কিন্তু সেই বাজেট-প্রতিশ্রুতির কতটা পূরণ হয়েছে?
গত রেল বাজেটে প্রত্যাশার পারদকে তুঙ্গে তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেললাইন থেকে নতুন কারখানা সবই ছিল রেলমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির তালিকায়। কিন্তু সেই বাজেট-প্রতিশ্রুতির কতটা পূরণ হয়েছে? রেলবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি আর প্রাপ্তির মধ্যে ফারাক কিন্তু অনেকটাই।
বছরে ১৩০০ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন পাতার প্রতিশ্রুতি ছিল বাজেটে। অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল ৯,৫৮৩ কোটি টাকা।
বোর্ডের তথ্য বলছে, নতুন রেললাইন পাতার কাজ হয়েছে ৩৫ শতাংশের কম। আর যে কাজ চলছে তাতে আগামী অর্থবর্ষে অর্ধ্বেক প্রতিশ্রুতির পূরণও কার্যত অসম্ভব।
নতুন ৫৬টি দূরপাল্লার ট্রেন, ৩টি শতাব্দী, ৯টি দুরন্ত এক্সপ্রেস চালুর প্রতিশ্রুতি ছিল আগের বাজেটে। এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ ট্রেন উদ্বোধন হয়েছে। ২৩৬টি স্টেশনকে মডেল স্টেশন করার প্রতিশ্রুতি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মডেল স্টেশন গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
দুর্ঘটনা রোধের জন্য অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস বসানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। অর্থের অভাবে কাজ প্রায় এগোয়নি।
রেলে শূন্য পদের সংখ্যা ছিল ২ লাখ। চাকরির প্রতিশ্রুতি ছিল রেল বাজেটে। বর্তমানে সেই শূন্য পদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার।
পিপিপি মডেলে কারখানা গড়ে ১,৭৬৭ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রেও কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে।
২০ হাজার কোটি টাকার বন্ড বিক্রি করে টাকা তোলার প্রতিশ্রুতি ছিল বাজেটে। একবছর পর দেখা যাচ্ছে, বন্ড বিক্রি বাবদ রেলের আয় ৪ হাজার কোটি টাকারও কম।
শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ১০০-র'ও বেশি প্রকল্পের প্রতিশ্রুতির মধ্যে এপর্যন্ত মাত্র ৮৭টি কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে। ৩৮টি প্রকল্পের কাজ এক ইঞ্চিও এগোয়নি। অর্থাত্, তথ্য বলছে উদ্বোধনের ক্ষেত্রে রেল যতটা উদ্যোগী ছিল প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সেই তত্পরতা চোখে পড়েনি।
কিন্তু কেন এমন হল? কারণ, বোর্ডের মতে 'অপরিকল্পিত ব্যয়'। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দায়িত্বভার নিচ্ছেন তখন রেলকে ১০০ টাকা আয় করতে খরচ হত ৭৫ টাকা। বর্তমানে আয়-ব্যয় প্রায় সমান সমান। ফলে প্রকল্প রূপায়ণের জন্য অর্থই নেই রেলের হাতে।